গ্ী-ত্ী
[ আদর্শ পল্লীচিত্র ]
ব্রীবভভীহ্দ্রমো হন চট্রোপা ব্যাস্ত
প্রণীত
মূল্য এক টাকা চারি আন
ছা
নর ক€লকাতা--*৯নং বলরাম দে স্রীট রর
রী মেট্কাফ প্রেস হইতে &&ু
শ্রীশশিভূষণ পাল দ্বারা মুদ্রিত ..
্ ও প্রকাশিত । ্
শুনি
হেরি ততা টিপা
্।
রি
ল্ল্লগুলুলদ!
*. পপ্রাপ্তি স্থান
গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এগ সন,
২০৩।১।১নং কর্ণ গরাদ্দিস স্্রাট না
7 বরেন্দ্র লাইব্রেরী
] ১০৪নং কণএয়ালিস গ্রীট ]
রাজলন্মনী পুস্তকালয়
৬১নঃ কর্ণগয়ালিস্ ্
কলিকাতা ।
25559]
15
শ্রীযুক্ত বজনীক্ষান্ত গু
মহাশয় শ্রীকরপেলবে
মহাতুন্
[5
1 স্১৩০০৬-প
টি |
ূ * পল্লীবাসীর অকৃত্রিম সুহৃদ, আর্ডের সহায়, দীনের বান্ধব
অবাধ অধিকার বিস্ৃত__তাই নিজ পত্নীর ছত্রহীন ভূপতি
আপনি। অনশন-মারী-প্াবনের অতীত, আপনার সেই
ষ্থীতীর্থের গন্ধহীন কুম্থমও আপনা'র অঞ্জলির যোগা ! এই,
সাহসে আপনার প্রাতঃম্মরণীর নাম পল্রীশ্রীর সঙ্গে জুড়িয়া
| দিয়! ধন্ত হইলাম । |
[5
বাগবাজার__কলিকাতা
১১এ হরলাল মিত্র লেন ্েহার্থী
১৮ই শ্রাবণ, ১৩৩০ । ব্যতীত
৩ তে | রে
আহ
হ-..
ঠ
+৯ উপহার শ্
পে ্
সী
তারির.55%
র
)
৮ নি তি /? রর
প্রিভি কাউন্সিলের শেষ মকদমায় সরবন্াস্ত হইয়! জদিদদ
মুখোপাধ্যায় আজ করমাস সকল ভাবনার শেষ করিয়া বসির
আছে। মাতুন প্রীধর ঘোধান কমা ধরিযাই নানা্রকার
উত্তেজিত করিতেছিলেন, কিন্ত ককতকার্ধ্য হন নাই।
ধর অনেক কষ্টে পুরাতন, পোকায় কাটা একখানা ক্রিম
দবেঝেতিরের দলিল সংগ্রহ করিয়াছেন। সেই দলিলের সাহাফ্যে
বিষয়ের দাবীতে 'মোকদমা করিলে, মস্ত না হইলেও লুপ্ত জমিদারীর
যথেষ্টাংশ পুনরুদ্ধার করা যায়। শুধু শ্রীধংর কেন, জেলার বড়
সজ 8 নিশ্চিত অত একাণ করিয়াছেন.
সী ৃ
' কাজেই সতী, বব এক কন নী হা বি
জগদিনদুকে পথে দীড়াইতে হইবে। তথাপি নান) আর
স্থিরগ্রতিজ্ঞ।
-... মাতা সতাভাম। ছৃশ্ন্তায় অশ্রু সার করিয়াছেন ) কিব্ট গৃহলঙ্গী
_: শদলার কোনও ছু্গবনাই নাই, স্বানীর' সঙ্গে বিষযবিষের
*শন্ী-ভী
সকল মাদকতার মোহ ত্যাগ করিয়৷ তিনিও পথে
কী দাড়াইতে গ্রস্ত
প্রাবুটের ঘণ তমসাবৃত বাদলার মেঘমাল! ছিন্ন করিয়া পূর্ব
গগনপ্রান্তে রক্তিম রাগে ভগবান অংগ্তমালী উকি ঝুকি মারিতেছেন।
ভগ্ন, আর্দ্র, বিক্ষিপ্ত বৃন্ষপত্র-পুণ্পে, কর্দমাক্ত শ্তামল তৃণ-দলোপরে
প্লাবনজল-পলীবিত প্রান্তর-হবদে, কুলায়-বিহীন আকুল বিহঙ্গের সিক্ত
পক্ষ-পুচ্ছে___বালার্ক কিরণ সঞ্জাত অলক্তক রাগ ফুটিয়া উঠিয়াছে।
সাতদিন-ব্যাপি বর্ষণ ও ঝঞ্জার পর তিমিরারির প্রথম সাক্ষাতে
ঠজ সঙ্গে শিগুগণের সঙ্গীত-্থুর মিলিয়া পল্লীগৃহ-
ক্িণ, কুপ্র-কানন, প্রান্তর পথ__আবার নবীন
| উচ্ছ্বাসে ভরিয়া
এমন সময় জগদিন্দুর বহির্বাটিপ্রাঙ্গণে তাহার কন্তা
| তা
চার ঠামলের চক্ষু বীধিয়! তাহার সঙ্গে 'কাণামাছি, রি
ছিল।
শিক্ষা ও স্বভাবের গুণে কোমল শিশু দুইটির যুগল হৃদয়ে তখনও
বিষের হলাহল উত্ত হইয়া উঠে নাই। অভিমত সৌঁহার্দের
দৃঢ় বাধনে বন্ধ শিশুঘয়ের প্রাণে তখনও মলিনতার স্থষ্টি য় নাই।
চিরিক ৬ল০834 ঢল.
সঙ্গীততরদে” আদর, আবদার, অভিমানের উৎ
টালিয়৷ দিয়াছে। . রী
ধীরে ধীরে জগদিন্মু চতীমণ্ডপের দালানে আনিয়া বসিল।
আপন প্রাণের ছন্দ অন্য়ার সহিত শিল্দয়ের মির, ভি
গিলী-
ভাবের তুলনা করিয় সে বিমর্ষ হইল। এমন সমর তাহার বাল্যসুদ
ভজহরি-_-
আমি পাগল কি মনট! পাগল-_না পাই ঠিকানা,_-
সাত পাগলে পাগল করলে কেউ ত বোঝে ন। ॥
গাহিতে গাহিতে, প্রভাতী স্গিদ্ধতার মধ্যে স্ুরলহরীর প্রাণ ঢালিয়!
দিয়। চগ্ডিমগুপে জগদিন্দুর পার্খে আসিয়৷ উপবেশন করিল।
তজহরি একট! বাতিকগ্রস্থ উদ্ভট জীব। কিন্তু তাহার সঙ্গীত-
জ্ঞান এবং ভাবপ্রবণতার সীম৷ নাই।
বিমল আনন্দে জগদিন্দু তজহরির সঙ্গীত-্থুধাপানে বিহ্বল হই
শিশুযুগলের প্রাণঢাল! হাসি খেলার অভিনয় উপভোগ করিতে
লাগিল। .
জ্ীধরবাবু হুকাহন্তে তথায় আগমন করিলেন। দক্ষিণ হস্তে
ধুমপানয£টির নল্চে ধারণ পূর্বক মুষ্টিবন্ধ বাম হস্ত হাটু ও উরু
প্রদেশের মধ্যে স্থাপন করিয়া কুঞ্িতলল[ট, বক্র ক্রযুগ-বিধবস্ত
বদনমণ্ল ইষৎ দক্ষিণে হেলাইয়| ভাবনিবিষ্ট চিত্তে কিয়ৎকান্
তাত্্কুট সের্ন করিতে লাগিলেন ।
সত্যভাম৷ দেবীও ভ্রাতার পশ্চাতে সাজিতর৷ তুলা পাঁজ
করিতে করিতে আসিয়! সেখানে বসিলেন। অপৰ নিদ্রার জড়ত!
এবং বিষম দুশ্চিন্তার কালিম! রেখ! মাঁতাঁর সমস্ত অবয়ব ভুড়ি
বসিয়াছিল। |
জগদিন্দু বুঝিল আবার একটা প্রবল বক্তৃতাগ্রবাহে ওাথাণ
'ভাসাইয়! দিবার উদ্দেস্ঠেই শ্রীধরবাবু এবং জননী সত্যতভামা, ঝটিকার
স্পন্লী-তী
পৃর্ব্বে ধরিত্রী যেমন গম্ভীর ভাব ধারণ করে, সেই প্রকার
গার্তীধ্য লইয়া সেথায় আগমন করিয়াছেন।
কৌশলে, মাতুলের চর্ব্িত, চিন্ধণ, মুছ বাক্যপ্রবাহ এবং মাতার,
তীক্ষ তিরক্কার মিশ্রিত কাতর ক্রন্দন, এড়াইবার জন্ত জগত ভজহরির
হাতি ধরিয়া বলিল. |
প্চল ভজা, মাঠে মাঠে কেমন জল জমেছে দেখবি চল ।”
তাহার অভিসন্ধির কথা বুঝিতে পারিয়া শ্রীধ€র একটা প্রবল
দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিলেন ।
“জগত যেওনা । একট! কাজের কথ বলবো বলেই এসেছি
আঁমরা।” বলিয়া! তিনি জগদিন্দুর মুখের দিকে চাহিলেন।
“তা--আাচ্ছ। আমরা একটু ঘুরেই আসি, সাতদিনের পর এই
সবে একটু ফরসা হয়েছে । তুমি ততঙ্গণ মুখ হাত ধুয়ে নাঞ)”
বলিতে বলিতে মন্তক কওয়নশীল জগতবাবু উঠিবার প্রয়াস
করিতেই সত্যভাম! দেবী রাগত স্বরে তাঁহাকে বলিলেন”
«ওসব পাগলামী রাঙ্ জগত । আমরা যা বলতে এসেছি শোন,
তারপর আঁজই য! হয় একটা বিহিত সিভিত কর-_এমন কোরে হাত
গুটিয়ে বসে থাকা যায় না ত? |
বিনর-নযন্বরে “মা, আমার ঘা বলবার ছিল বলেছি । আর কি
বলবো বল।৮ বলিয়া জগত গাত্রোখান করিল ।
হঠাৎ গানের সুরটা একটু চড়াইয়া দিয়া, একটু কাশিয়, একটু
হাঁসির ভহরি প্দূর পাগলা বলা কওরার কি শেষ আছে রে?”
বলিতে বলিতে সেস্ান ত্যাগ করিবার উপক্রম করিল।
৪
পললী-
ক্ঠ্যা_যাঁওত বাব! ভঙ্গু, দেউরী ঘরে কেমন চন্দ্রকোণ! তামাক
কেটে মেখে রেখেছি। আমরা কথাটা! বলে কয়ে নি, তুমি
ততক্ষণ তামাক টামাক খেয়ে এসো ত বাবা।”
একগাল হাসির সঙ্গে কথ| কয়টি বলিতে বলিতে শ্রীধর, বিরাট:
তৃপ্তিতে হুক।-মুখে আবার একট! বিষম টান মারিয়া, গল! শানাইয়া
বসিলেন। ৃ
“তা তুই বিয়ের মন্তর ক'টা চোখ বুজে আউড়ে নে জগতে,
ততক্ষণ পেনাৰ্ট। অনুমতি হয় ত, এক টান মেরে আমি--কি বলেন
ঘোয।ল মশায়”__খুব চড়! গলায় ঝি'বিট খান্বাজে একখানা মায়ের
নাম করি ।” ৃ
বলিতে বলিতে ভঞ্হরি, ঘোষাল মহাঁশয়ের হস্ত হইতে হুকাটি
কাড়িস্বা লইল। একটি প্রবল টানে কলিকার অন্তস্তল দগ্ধ করিয়া
যাহার হুকা তাহাঁকেই ফিরাইয়া দিল।
পাকস্থলীতলগত পুক্তীককৃত ধুমরাশি উদগীরণকরত: ভঙ্গ
গল! ছাড়িয়া ঝিবিট খান্বাজের রূপঃ ন্তাশ, লোম, বিলোম,
অন্ুলোমাদি বিশুদ্ধতাবে আলাপচারি জ্ঞাপক “আ--উ--হ--উ--
, শ্রিম_-তানা? প্রস্তুতি ধ্বনি করিতে লাগিল।
“ভাল আপদ ! একট কাজের কথ! বলতে এলেম আমরা»
আর তুই কিনা প।গল! গাধার চেচানি সুরু করলি_-গেরো আর
বলে কাকে ?”
বিরাট বিরক্তিসহকারে মাতুল মহাশয় মুশড়াইয়া৷ পড়িলেন।
“হ্যা বাব ভঙজু, কাল কি খেয়েছিলি বাবা? 'আমি কেমন
«৫
গনী
নারকল নাঁড় কোরে রেখেছি । তুই তামীক টাঁমাক খেয়ে মুখহাত
ধুয্ে নে, দিব্যি নাড়, খাবি'খন।” বলিতে বলিতে প্রাণের বাথ৷
প্রাণের মধ্যে চাপিয়! রাখিয়া মাতা তাহার বিষাদমলিন মুখে অতি
কষ্টে একটু হাসি ফুটাইয়া তুলিলেন।
“তা মামী ! বুলি পড়বে জগতে, আর ছোলার বরাদ্ধ পাগলার ?”
বলিতে বলিতে খাম্বাজ-ম্ুর-নিমজ্জমান ভজহরি কিন্নর-ক্কাঁকলি
গগনে বিকীর্ণ করিয়। 'আপন মনে হেলিতে ছুলিতে নাঁচিতে নাঁচিতে
প্রস্থান করিল।
«আপদ গেল ।” বলিয়া শ্রীধর আবার শৃহ্যগর্ভ কলিকায় প্রবল
টান মারিয়া বলিলেন,__
“আমরা বলছিলেম কি বাবাজী, তুমি মামলাটা হেরে গিয়ে
মন নুয়ে পড়লে যে ভালমন্দ একটা পরামর্শ ও তৎকর৷
হলো না।
“ছ্যাথ জগত--আমি তোর মা, আমার কথা তোর শোনতে হয় ।
আমি বলছি তুই ছিদের সঙ্গে আজই সদরে গিয়ে-_”
সত্যভামার কথা শেষ ন! হইতেই ছোটহিন্তার কর্তার শ্তালক
শ্রীযূত নবগোপাল সমন্ধীর মহাশয়”_নাজির, পিয়াদা, ঢুলি, পাইক,
বরকন্দাজ প্রভৃতিসহ সেইখানে উপস্থিত হইলেন।
«আর সদরে গিয়ে কিছু হবে না বড়গিন্ী-_উরা শেষ রাতেই
এসে পৌছেছেন ।”
বলিতে বলিতে আস্মুরিক হান্তে শ্রীযুত গৃহ প্রাঙ্গণ মুখরিত
করিষ তুলিলেন।
শী
«কি চাঁন আপনার! এখানে ?” বলিয়! বিশ্বয়-বিহ্বল শ্রীধর ঘোষাল
মহাশয় অনল দৃষ্টিতে নাজির মহাঁশয়কে “মদনভগ্ম' করিবার উদ্যোগ
করিলেন।
“ছোট তরফের বাবুর পক্ষে ডিক্রীজারিতে জগতবাঁবুর বাঁড়ীঘর,
বিষয়সম্পত্তি দখল দিতে এসেছি আমরা ।” বলিয়া নাজিরবাঁবু
অবনত মন্তকে নীরব হইলেন।
“বুঝছ না মামা; এ আর এক চাঁল। তা যাঁক্,--এই শেষ
চাল! মাত হয়েছি, আর ত খেলা চলবে না-বাস 1”
কিয়ৎকাল স্তব্ধ থাকিয়া আবার জগত বলিল, “দেখছেন মা
রয়েছেন এখানে ; আপনাদের থা করবার তাঁড়াতাঁড়িই করে যান ।”
কিন্তু তখনও শ্রীধরের ক্রোধের উপশম হয় নাই। “বলি
নিলেম্ হলে! কবে ষে দখল দিতে এসেছেন ওরা? বলিয়া তিনি
বিহ্বল ভাবে চাহিয়৷ রহিলেন।
.“নিলেম হয়েছে আঁজ প্রায় ছই মাস।” নাঁজিরবাবু পরওয়ানা
খানা বিশ্বয়-আড়ষ্ঠ শ্রীধরবাবুর হস্তে দিলেন
“জুচ্চুরি! ইস্তাহার গোপন কোরে.”
এতক্ষণ শ্রীযুত নবগোপাল সমদ্দার মহাশয় নীরব ছিলেন।
ইন্তাহার গোপনের কথা শুনিয়া তিনি কি জানি কেন একটু চঞ্চল
হইয়া উঠিলেন। শরীরের কথার মাঁঝখাঁনে বাঁধা দিয়া তিনি
বলিলেন»-_
“গোপন কি? এই যে.সেদিন আমি স্বয়ং এই নন্দ চাড়ালকে
নিয়ে ঢোল সহরত কোরে--বলনারে নন্দ! ।৮
৭
পন্ষনী-ভী।
বাধা দিয়া নাজিরবাবু বলিলেন, “সেই সাফাই আদালতে
করবেন-__আমার তাতে কোন কাজ নেই। কিছু মনে
করবেন না৷ জগতবাবু! বুঝতে পাচ্ছি সব, তবু মাইনের চাকর
আমরা |”
বলিতে বলিতে “ঢোল সহরত” দ্বারা প্রবল প্রতাপান্বিত
কোম্পানী বাহাদুরের বিরাট প্রতিনিধি পুঙ্গব আইনের মর্ধ্যাদা-
মাফিক স্বকার্ধ্য শেষ করিয়৷ প্রস্থান করিলেন।
বীভৎস উল্লাসে হতচেতন নবগোপাল জগদিন্দুবাবুকে. অবিল্বে
বাড়ীর ছাড়িয়া প্রস্থান করিবার অনুঙ্ঞ৷ প্রদানান্তে, নন্দা৷ চাড়।লের
স্কন্ধ হইতে ঢোলটি কাড়িয়া লইয়া তাগুবতালে তাহাতে বিষম
আঘাত করিতে করিতে প্রস্থনি করিলেন।
«ওগো কর্তা গো আমায় এসে নিয়ে গেলে না৷ গো-_হতভ্বাগ!
ছেলে তোমার রাজত্বি উড়িয়ে দিয়ে পথে দাড়াল গো 1”
__ বিষম চীৎকার সত্যভামাদেবী পাড়ীশুদ্ধ লোক সেইখানে জড়
করিয়৷ ফেলিলেন।
এমন সময় কন্ভার হাত ধরিয়া অনুশীলা বহির্বাটিতে উপস্থিত
ভইন।
পল মা আর এক দণ্ড9 এখানে নয় । বিষয় পায়ের শৃঙ্খল মাত্র
আজ সম্পূর্ণ মুক্ত, পূর্ণ স্বাধীন আমরা 1৮ বলিয়৷ জগত অগ্রসর
হইল।
«সে কি জগত? এখন সময় আছে ত! সদরে গিয়ে,
উকিলের সঙ্গে পরামর্শ না কোরে__-ভিটে ছেড়ে যাবি কিরে?”
৯
শলী-গ্ী।
উদ্রাস্ত শ্রীধর ভগ্থির মুখের দিকে চাহিয়! রহিলেন।
“পাগলামী করিস নি জগত | বুঝে স্থজে-_-ছি ছি-_”
সত্যভামার কথায় বাঁধা দিয়! জগদিন্দু বলিল/__
“না মা আর প্রলোভন দেখিও. নাঁ_আজ মুক্ত আমরা । চল,
ঠাকুর বাড়ীতে সবই বলা কওয়া আছে। দেবোত্তর সম্পত্তি, সেখানে
আর কেউ ডিক্রীজারিতে দখল নিতে আসবে না । মামা, ওদের দিয়ে
জিনিষ পত্তরগুলি ঠাকুরবাড়ী পাঠাবার বন্দোবস্ত করে এসো। চল মা”
বলিয়৷ উচ্চ আর্তনাদশল! মাতার হস্ত ধরিয়৷ জগত শ্রীহ্র্ানাম
উচ্চ।রণে পৈত্রিক গৃহাঙ্গণ পিছন করিয়া চলিল। |
ঠিক এই সময় “কেমন পেয়ারা পেড়ে এনেছি দয়ি, খাবি ৮”
বলিতে বলিতে গ্রামল আসিয়া দয়িতার হাত ধরিল।
মোচখিতে সকলের গম্ভীর মূখ দেখিরা সংসার জ্ঞানহীন শিশুর
মুখের হাঁসি মুখেই মিলাইয়৷ গেল, তাহার তরুণ বয়ানে একটা
অজানা আতঙ্কের ভাষা ফুটিয়া উঠিল।
«পরুকি তোমরা কোথায় যাচ্ছ কাঁকীর্গা? বলিয়া সে অন্ুশীলার
মুখের দিকে,চাহিল।
“ঠাকুর বাড়ী 1
“এত ভোরে, না নেরে-ঠাকুর বাড়ী যাচ্ছ কেন কাকাবাবু?
ব্যাপারটা শিশুর কাছেও কেমন অস্বাভাবিক ঠেকিল।
দয়িতা অমনি বলিয়া ফেলিল,-_
“যাচ্ছি আবার কেন? যাচ্ছি ফুল তুলতে, প্রসাদ পেতে, বাজনা
শুনতে, আরতি দেখতে ! ঠাঁকুর বাড়ী আবার যায় কেন ?”
৪
বালকের প্রাণের সন্দেহ দূর হইল না। সে অধোমুখে ফিরিম!
চলিল।
“বারে! আমি পোয়া খাব না ববি বিয়া রি মলের
পিছনে ছুটিল।
«ওরে যান্নি, যাম্নি, শোন--” বলিয়া অনুশীল! তাঁহাকে
ডাকিতেই, জগত বাধা দিয়! বলিল,__
“ছি অনু, অনাপ্াত ফুলের কলি হুটি-_এত শীগগির ওদের প্রাণে
িনতাকীটকে বসতে দিওনা 1
( ২.
ভোন্গানাথ চট্টোপাধায় ছোট তরফের প্রাতম্মরণীয় দানবীর,
৬মাধবগোঁবিন্দ মুখোপাধ্যা মহাশয়ের দৌহিত্র। তাহার দুইটি
কন্যা ছিল। প্রথম! শাস্তিময়ী অবীরা-_তিনি কর্তার * পরিতাক্ত
সম্পত্তির 'অদ্ধীংশ ভোগ দখল করিতেছেন।
দ্বিতীয়া ক্ষ্যান্তকালী-_শতাধিক অরক্ষণীয় কুলীন কন্যার কুলবান্ধব
খবভ শর্মার পঞ্চাশত পক্ষের সহধর্শিনী। তিনি কর্তার জীবদ্দশায়ই
সধবাজীবনে অকাল বৈধব্যের হাত এড়াইয়া, স্বর্গধামে গযন করিয়া-
ছেন। তাহার শিশুপুক্র শ্রীমান ভোলানাথ, শান্তিসীর ক্রোড়ে
প্রতিপালিত হয়েন।
টু,
পলী-ী
অত্যধিক আদরে শৈশব হইতেই ভোলানাথের নানা প্রকার
চরিত্রদোষ ঘটে । কিন্তু মাতামহ ন্েহাধিক্যবশতঃ সেই দিকে দৃষ্টিপাত
করেন নাই। ূ
উত্তরোত্তর 'উচ্ছঙ্খল ভোলানাথের উদ্ধত্য এতট! বাড়িয়া
উঠিল যে, একদিন সে মাধবগোবিন্দ বাবুর 'আশ্রিতা, দূর
সম্পকাঁয়। এক বালিকার উপর অবৈধ অত্যাচার করিতে
দ্বিধাবোধ করিল না।
ফলে, পুণ্যপরায়ণ মাঁধবগোবিন্দ একমাত্র দৌহিক্রকে বাড়ীর:
বাহির করির! দিলেন
বিতাড়িত ভে|লানাথ এতদিন শাস্তিণয়ীর সহায়তার 'এক খৃষটধস্ম-
মণ্ডলীর আশ্রয়ে কিঞ্চিৎ বিগ্তাভাস এবং পাঁন অপনাঁদি পাশ্চাত্য
বিহ]ুর ব্যবহার অধ্যয়নে রত ছিল। |
মাতামহের মৃত্যুর পর শাস্তিময়ী ভগিনীনন্দনকে পুত্রের আসনে
বসাইয়া পিতার বিষয়ের অর্দাংশ তাহাকে বুঝাইযা। দিয়াছেন ।
ভোলানাথ জমিদারীর গুরুভার গ্রহণ বর্দবয়া প্রবল প্রতাঁপে তাহ!
শাসন করিতে লাগিল।
ক্রমে নানাপ্রকার জালি দলিলার্দির সাহাযো মে বড় তরফের-
উত্তরাধিকারী শ্রীযুক্ত জগদিন্দু মুখোপাধ্যারের সঙ্গে বু মামনা
মোকদমায় রত হয়। হালে জগদিন্দুর যথ|সর্ধন্থ হস্তগত করিয়।
সে মিয়াদগঞ্জের একচ্ছত্র অধীশ্বর হইয়। বসিয়াছে।
এই সকল মোঁকদমার ব্যাপারে শাস্তিময়ী ভে।লানাথের হস্তে.
ক্রীড়া-পুত্তলির মতই চাঁলিতা হইয়াছেন।
১১
*ল্লী-শী
স্বতাবতঃ প্রথর বুদ্ধিমতী, ধর্মশীলা শাস্তিময়ীর একটা প্রবল
দুর্বলতা ছিল। তিনি ভোলানীথের অন্তায় কার্াগুলির বিরুদ্ধে
ক্সীণ প্রতিবাদ করিতেন বটে, কিন্তু অবশেষে স্নেহাম্বতাবশতঃ
তাঁহারই পক্ষাশ্রয় করিয়া বসিতেন। |
তিনি জানিতেন যে ভোলানাঁথের পক্ষাশ্রয়্ করিয়া! তিনি বিষম
পাপে লিপ্ত হইয়া পড়িতেছেন। তজ্জন্ত তিনি নীরবে অশ্রমোচন
করিতেন, অনুতাপ করিতেন; কিন্তু যখন কোনও আব্যকীয়
কাগজপত্র স্বাক্ষর করিবার জন্ত ভোলানাথ তাহার কাছে উপস্থিত
করিত, তখন সুমধুর ধর্মমোপদেশ প্রদানান্তর তিনি বিষুগ্ধচিত্তে
ভোলানাথের অনুরোধ প্রতিপালন করিতেন।
কিন্ত পরক্ষণেই আবার শাস্তিমী অন্ুশোচনাঁর অনলে দগ্ধ
হইতেন। এইভাবে আট নর বৎসর ব্যাপি মামল! মোকন্দমার প্রুর
সেইদিন তোলানাথ জগদিদ্দূর বাস্থুতিটা পর্যন্ত হস্তগত করিয়াছে ।
স্ খা "শি সু
ভোলানাথ জমিদারীর৬ ভার লইতে আসিয়া প্রচার
করিয়াছিল ঘে, এতদিন পে বিলাতে থাকিয়া পুরাদস্তর সাহেব
বনিয়া আমিরাছে, এবং মাতৃভাষার সহিতও তাহার একটা বিষম
্রান্তিবিচ্ছেদ ঘটিরা গিয়াছে।
তৎসহ্ধর্ষিণী শ্রীমতী পারুলকণাও একটি মিশনারী-সঙ্বে,
প্রতিপালিতা, অজ্ঞাত-কুলশীলা--বিদুষী রমণী । মাসীমার প্রভাবে
কেহ প্রকাগ্যতঃ এতছ্বভয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক অন্নশাসন যি
প্রয়োগ করিতে পারে নাই বটে, তথাপি ভোলানাথ এবং পারুল
১হ
গলী-ভ্ী
জমিদার বাড়ীর অন্দর-পশ্চাতে এক বিরাট বাঙ্গাল! গৃহে স্বতস্থভাবেই'
বাস করিয়া থাকে ।
মাসীমার ইচ্ছা গ্ছুধের বাছারা ছুইদ্িন ইচ্ছামত জীবনটা
উপভোগ করিয়া লউক, তাহার পর সময় মত নিশ্চয় আপন! হইতেই
তাহাদের ধনে মতি হইবে; তখন, তিনি যথাশাস্ত্র প্রায়শ্চিতাদি
দ্বার তাহাদিগকে ন্বধন্মে সুপ্রতিষ্ঠিত করিয়া! যাইবেন। যতদিন
তিনি বাঁচিয়া আছেন, ততদিন স্বর্গীয় কর্তার সংসারের আচার
অনুষ্ঠানের কোনও ত্রুটি হইবে না । তাহার পর, বয়সকালে ইহাদের
ধর্মজ্ঞান জন্মিবে__সে বিষয়ে শান্তিময়ীর সন্দেহ ছিল না ।"
ভোঁলানাথ সাধারণতঃ ্মা্টার ভেল্বেটিন শ্রাটো” নামেই
আত্মপরিচয় 'দিরা থাকে। সে মাসীম! এবং সহধর্মিণী ছাড়। আর
কাহারও সঙ্গে মাতৃভাবার উচ্চারণও করে না। আধা বাঙ্গলা,
উর্থ, আরবী এবং ইংরাজী-মিশ্রিত এক অপূর্ব্ব ভাষায় সে অপরাপর
সকলের সহিত আলাপ ব্যবহার করিরা থাকে । তাহার বিশ্বাস,
এইপ্রকার সাহ্বৌ চাঁলেই তাহার? পরপ্রতিষ্ঠা প্রবল হইতে
প্রবলতর হইয়! উঠিতেছে।
ভোলানাথের একটিমাত্র পুত্র। তাহারই নাম শ্ঠামল। ভূমিষ্
ইওয়ার পর হইতেই সে দিদিমার অঙ্কাশ্রয় করিয়া লালিত,
বাঞ্ধত হইতেছে। | র
তোলানাথের কুশিক্ষার বিষময় ফল শান্তিময়ী বেশ উপলব্ধি
' করিতেছেন। তাই, তিনি অতি সতর্কত। সহকারে শ্টামলের
সুপিক্ষার দিকে লক্ষ্য রাখিয়াছেন।
১৩
পিজী-ভী
গ্রমলের সঙ্গে তাহার পিতামাতার কোনও সন্বন্ধ নাই বলিলেও
হয়। বিনা খরচায় অনাহারী “আয়ার হাতে পুত্রের প্রতিপালন-
ভার সমর্পণ করিয়া ভোলানাথ-গৃহিণীও পরিপূর্ণ বিবিয়ানার মোহে
ডুবিয়া রহিয়াছেন।
আজ প্রাতঃকালে, বড় তরফে দখলি পরওয়ান! জারী করিবার
ভার তাহার সুযোগ্য শ্তালক “মিঃ নেতা গেপেল স্যামেভারের উপর
অর্পণ করিয়া আকুল উৎকগ্ঠায় শ্তাটো এবং পারুল জনৈক বিশেষজ্ঞ
থানসামার পরিচর্যায় আত্মসমর্পণ করিয়াছে ।
সাতদিনের ঝুিতে মেদিনী এক আর্ ম্নানরূপ ধারণ করিয়াছিল ;
সেই মলিনতা কৃষ্ণসাহেব-দম্পতির অন্তরে প্রবেশ করিয়া এক বিরাট
কালিমা স্থজন করিয়াছে। বোতল বোতল তরল সুধা ঢালিয়!
তাহার! সেই কালিম! ধৌত করিল।
শুভ্র আমেজে ক্রমে তাহাদের মেজাজ প্রফুল্ল হইয়৷ উঠিল।
বিচিত্র হল কামরায় দুইজনে ছুইজনের অঙ্গ জড়াইয়! নৃত্য করিতে
লাগিল। ক্ষণপরে বড়*তরফের অবস্থাটা ন্বচক্ষে পর্য্যবেক্ষণ
কবিবার 'জন্ত বিরাট আনন্দে পারুল পুকুরধারে দৌড়াইয়া
গেল। |
সেই অবসরে শ্টাটে৷ ভৃত্যের দ্বারা, দেওয়ান শ্রীযুক্ত অনস্তদেব-
শন্মাকে আহ্বান করিল। আভূমি বিস্তৃত সেলামাস্তে একান্ত প্রতুতক্ত
দেওয়ান মহাশয় কর্তীর মুখপন্বজের মধু আহরণে ব্রতী হইলেন।
প্টূমি যাইটে পারে নাই কেন?” বলিয়! শ্তাটো-_বেচারী
দেওয়ানকে চমকাইয়! দিল।
১৪
গন্নী-ভী।
রৃদ্ধ আজ্জাকারী ভৃত্য মাটির দিকে চাহিয়া কহিল, “আজ্ঞে
সেইরূপ ত আদেশ ছিল না ।”
বৃদ্ধের প্রত্যু্তরে অসন্তুষ্ট হইয়৷ ফথারীতি- বিকৃত উচ্চারণে হ্যাটো
বলিল, “তবু তোমারই যাওয়া উচিৎ ছিল।.কে নাজিরের সঙ্গে গিয়াছে?”
“আজে স্বয়ং শ্তালাবাবুরই যাওয়ার কথা ছিল, তিনিই
গিয়াছেন। কৃত্রী-ব্যক্তি, ধুরন্ধর লৌক, মহাশয় মনুষ্ণ তিনি”
4১10০ 80 তোমার খোঁশামুদে রসনা! ০8 01
101, !” বলিতে বলিতে শ্তাটো৷ নিঃশেষিতগর্ভ কাচপাত্র টেবিলের
উপর রাখিল। |
“এতক্ষণ ফিরিয়। আসিতেছে না৷ কেন? আমার ভ।ল লাগছে
না। তোমরা কোন কাজেরহ নও, খালি লম্ব৷ বাক্যের কীদি 1”
বিরক্তি-ব্যঞ্ক কুঞ্চিত ললাটে ঠাটো৷ বারেন্দাময় পরিক্রমণ
করিতে লাগিল।
এই ক্ষেত্রে কি কর! ব৷ বলা প্রয়োজন তথিষয়ে গভীর গবেষণান্তে
অনন্তদেব জোড়-করে নিবেদন করিল “ভ]জ্জে অনুমতি হয়ত একবার
দেখে আসি 1”
“না, এতক্ষণ নিশ্চয় কেল্লা ফতে হ্ইয়৷ গিয়াছে । আমার
বিজয় পতাকা এতক্ষণ জগদার ভিটায় উড়ে ঘুঘু চরাচ্ছে।
বলিতে না৷ বলিতেই নবগোপাল বিজয় দস্তে সেইখানে উপস্থিত
হইয়া বলিল-_” |
“আজ্ঞে বোনাইসাহেব! উড়ছে বলে উড়ছে! একেবারে ঝড়ের
মুখে কাকের বাসার মত দাদ সাহেব”
১৫
পপরী-জী
মূল্যবান কবিত্বের ফোয়ারামুখে বাধ! দিয়া স্তাটো৷ বলিল; __“ওদের
বাড়ীর বের কোরে দিয়ে এসেছ ত ন্তাঁবা গেপাল 7”
«সে কথ! আর বলতে বৌনাইসাহেব? একেবারে মায়ে পোয়ে
দাদাবাবু__বৌএ ঝিয়ে দাদা সাহেব__এক কাপড়ে!” বলিতে বলিতে
নবগে|পাল একটা বিকট পেশাচিক হাসির রোলে গৃহতল কাপাইয়া
তুলিল।
শ্তাটো নেই অস্বাভাবিক হাসির বীভৎস বঙ্কারে একটু শিহরিয়া
উঠিল।
সহসা সংযত হুইয়। সে বলিল,-“ছি ছি, ভদ্রলোকের মত
হাসতেও শেখনি তোমরা? যাঁক_কোথায় গেল তার! ?”
“আজ্ঞে কোথায় যে -গেল সেইটি ঠিক কিনা অর্থাৎ” জড়িত,
আড়ষ্ট কণ্ঠে _-বলিতে বলিতে নবগোপাল মাথা চুলকাইতে লাগিল।
“কেন দেখে আম্তে পারলে না?” শ্তাটোর জলদকঠোর
হুহ্কারে নববাবু প্রমাদ গণিলেন।
“দেখে আসিনি কি * বোনাইসাহেব__অর্থাৎ কোথায় আর
যাবে? খুব সম্ভবতঃ ঠাকুর বাড়ীর আঙ্গিণায় গিয়ে এতক্ষণ
কেঙ্গলার দল আঁচল পেতে বসেছে- আর রাজ্যিগুদ্ধ লোকে-_
হাঃ হাঃ বোনাইসাহেব৮_”
একটি একটি করিয়া চিবাইয়া ধীরে ধীরে সভয়ে সন্তর্পণে
নবগোপাল কৃত্রিম হর্যভরে এতগুলি কথা বলিল। তাহার
গুক্ষ্মঞ্রবিরল বদন কেন্দ্রে তাণ্ডব হান্তের দীপ্ত তেজ জলিয়া
উঠিল।
১৩
পরী
“সে কি দাওয়ান? ঠাকুরবাড়ীটা ডিক্রীর ভিতর নয়?” বলিয়!
শ্টাটো-_মনের সমস্ত আক্রোশ, দীন অনন্তদেবের উপর ঢালিবার
প্রচেষ্টা করিল।
“আজ্ঞে দেবোত্তর সম্পত্তি” অনস্তদেব বিষম মনহ্ঃখে ঘ্িয়মীণ
রহিল।
তাহার মুখাবয়ব একটা নীরব ভাষায় যেন প্রচার করিতে
ছিল যে--“দেবোত্তর বলিয়াই ত ঠাকুর বাড়ীটি পর্য্যন্ত আয়ত্ব করা যায়
নাই । কিন্তু সেই ক্ষোভ এজন্মেও তাহার যাইবার নহে ।'
“দেবোত্তর আবার কি? কেন তখন সেইটি শুদ্ধ দলিলে
লিখিয়ে নেও নাই ?” বলিয়৷ স্থিরকণে শ্যাটো৷ দাঁওয়ানের কৈফিয়ৎ
তলপ করিল।
“আজ্ঞে গোলাম চিন্তার কণতর করে নাই। তবে কি না, কত
পুরুষের দেবোত্তর সম্পত্তি-_দলিলে লিখতে গেলে সকল কথাই ধর!
পড়ে যেত। সাঁত চাল আগে ভেবে তবেইত গোলাম এক চাল
চেলেছে । নৈলে আমার মনের ছুঃখ-_”
নেমকহালাল বৃদ্ধের কণ্ঠরোধ হইল-_ছুইটি চক্ষু ছলছল করিতে
লাগিল । সহানুভূতির দৃিতে এক! নবগোপাল তাহাকে সান্বনা দিল।
“কোন কাজেরই নও তোমরা ! যাঁক, এবার থেকে আবার
সব কাগজপত্র তৈরী ক'রো। এ দেবোত্তর টেবোত্বর কিছুই আমি
ছাঁড়তে চাই না ।” ০
বলিতে বলিতে শ্তাটো বিরাট আরামে ইজিচেয়ার আশ্রয়
করিল।
১৭
এমন সময় খল খল হাসির উৎসে ভাদিতে ভাসিতে চঞ্চন-
চরণ, ঈথবসনা শ্রীমতী পারুলকনা সেইখানে প্রবেশ করিলেন।
আসিয়াই তিনি শ্ঠাটোর অঙ্গে শ্রীঅঙ্গ ঢালিয়া দিবার উদ্যোগ
করিতেছেন দেখিয়া, অমনি শ্তাটো তাহাকে ইঙ্গিতে নিরস্ত করিল।
গ্রীমতীর আদেশে শ্ভাটো অগত্যা অনন্তদেব ও নবগোপ ল্লকে
বিদায় করিল। তাহারা উভয়ে সেই স্থান ত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলে
হ্যাট! বলিল,-- |
“ছি ছি এক ফৌটা মুখে পড়লেই তোমার দিগবিদিকৃ জন থাকে
না! গুদের সামনে অমন কোরে আমার গায়ে পড়ছিলে লজ্জা!
করল না £
40০০7; ! এ বুড়ো বাদরটাকে আবার লঙ্জ। কি? বেরাল
কুকুরকে মানুষে লজ্জা করবে? আর নব ?-_সে ত ছেলে মানুষ !”
জড়িতকঠে এই করটি কথা বলিতে বলিতে পারুল গ্রাটোর
অঙ্গে ঢলিয়া পড়িল। তাহার বুকে বুক, অধরে অধর, নরনে নয়ন--
মিলাইল।
শ্রাটোর গল! জড়াইয়।৷ ধরিয়। সুরাবিহ্বল। আনরিণী আবার
বলিল, -“৪ট।কে তাড়িয়ে দাও__বাদরটাকে আমার আদৌ পছন্দ
হয় না।”
4) 1০৮৮! বল কি প্রেয়পী! একটা আন্ত জুয়েল!
ওকে তাড়িয়ে দেব? আট বছরে-_তিন পুরুষের খাতাপত্তর, দলিল
দাস্তাবেজ__-বেমালুম বদল করতে পরে-_এই বুড়ে বাদরটি ছাড়া,
আর একটিত তেমন জানোয়ার আমার চক্ষে পড়লে। না। বিয়াল্লিণট!
১৮
*পলী-ভ।
'সাক্ষীকে পায়র! পড়িয়ে আদালতে দীড় করালে-_-আহা- _নির্জল।
মিথ্যাম্থরের একট! একটানা নিখুত কন্নর্টি বাজিয়ে গেল।
নিজে হাব বৌকার মত ভাঙ্গা ভাঙ্গী কথায় এমন সাক্ষ্য দিলে,
_ উকীল কৌশলী ত ঘোল খেয়ে গেলোই-_-মাবার জজ সাহেব
লিখলে, “বোকা, কিন্তু নিরেট সত্যবাদী” | 97৮৩! 1298
11৮6 [9 বুড় বাস্ত ঘুঘু! তাকে তাড়িয়ে দোব? তোমার বড্ড
নেশ। হয়েছে পারুল-_না ? বলিয়া! শ্রীমতীর অধর শ্ধা পানে
শ্াটে বিস্ময়ের লাঘব করিল।
উভয়ের প্রাণ তখন বিপুল আনন্দে ভরপুর! নিমিষে বোতল
বালি হইয়! গেল। অন্ত বোতলের সিপি খুলিরা বেরারা টোবলে
রাখিল। পরস্বাপহারী প্রেতদম্পতির উলঙ্গ বীভত্ন নৃত্য দর্শনে
বেচান্র। বেয়ার! পর্যান্ত হস্তে মুখ ঢাকিল।
প্রমন সময় এ্হ্যা বাঁঝা---ওদের কেন তাড়িয়ে দিলে বাবা
কাকীমা*র! ঠাকুরবাড়ী কেন গেল বাব! ?”
বলিতে বলিতে বিষাদমলিন নতমুখে ঠ্রামল সেখানে উপস্থিত
হইল। হঠাৎ পৃতচিন্ত বালক, পিতামাতার অবস্থ। দেখিরা তখনি
আবার উদ্ধস্বীসে পলাইবার প্ররাস করিল। অমনি পারুল অর্ধনগ্,
শিথিল দেহবল্পরী সঞ্চালনে কষ্টে বালকের হাত ধরিয়া কেলিল।
“কি বলছ ডালিং ?”
বলিয়৷ পারুল সুরা-সৌরভ-পুরিত অধরবিষ্ব বালকের গঞ্জে স্থাপন
করিল।
কষ্টে আখ্মরক্ষা কারস ঝালক আবার বলিল,
১৩
গশন্ধলী-ী
“ওদের তাড়িয়ে কেন দিলে মা-_ওরা ঠাকুর বাড়ী গেল কেন?”
পৈশাচিক হাস্তে বাতাস কাপাইয়া শ্রাটোভামিনী বলিল৮--
প্ঠীকুর বাঁড়ী কেন গেল? কাঠি কুড়োতে, বাট্না বাঁটতে__
আঙ্গিন! ঝাঁট্দিতে আর শেল কুকুরের অধম হয়ে ছুবেল! ছুমুঠো মুখে
গুজতে ! বুঝলে 17 0911112 1”
বলিয়। পারুল বালকের মুখে সুধার পাত্র স্থাপন করিবার উদ্ভোগ'
করিল। ভয়ে শ্তামল মাতার দুর্বল বাহু-বন্ধন ছিন্ন করিয়! দূরে
সরিয়। গেল । |
.. শনা মা আমায় ছাড়, কড় দুর্গন্ধ! ও খেলে মরে যাব তোমার
পায়ে পড়ি মা”
বলিয়৷ বালক বিষম আতঙ্কে কাপিতে লাগিল।
4017 7094 68061015০19 ০০০1?” বলিতে বলিতে গ্লাত্রস্থ
মধুর সরবৎ উদরস্থ করতঃ গ্ঠাটোর উদ্দেশে পারুল পুনরার বলিতে
লাগিল,
“আমার এসব জাল লীগে না। ছেলেটাকে আদর দিরে কেমন
বকিয়ে দিয়েছে গ্ভাখ ! বাপ মায়ের কথাও শুনবে না? ছি। ছি!”
ধীরে অখচলে চক্ষু মুছিতে মুছিতে শান্তিমরী সেখানে আসিয।
বলিলেন,
“ভুলো॥ যা শুন্ছি তাকি সত্য
গ্রাটোর তখন প্রবল নেশার অবস্থা । শাস্তিময়ীর কথা তাহার
কাঁণেই গেল ন|।
“্যাওধ্যান ধ্যান ভাল লাগে না এখন |” বলিয়া সে ইঙ্গিতে
৩
সল্লী-গী
'গ্ঞামলকে কাছে ডাকিল। ভয়ে আড়ষ্ট হইয়! শ্তামল “ঠাকুরমার
জানুপ্রদেশ জড়াইয়। ধরিল।
“কি হয়েছেরে শ্টামল ?”
সন্গেহে ক্রোড়ে তুলিয়া! লইয়া! শাস্তিময়ী শ্তামলের মাথায় হাত
বুলাইতে লাগিলেন। ঠাকুরমার বুকে মুখ লুকাইয়া শ্তামল আক্তে
সন্তর্পণে বলিল৮--
“ন| আমার কি সব থেতে বলে ঠাকুমা ৮
ক্ষোভে, ছুঃখে, অভিম।নে প্রজ্ঞাময়ী স্ির়মাণ হইয়। পড়িলেন।
“তোদের সঙ্গে এখন কথা কওয়াই বুথা। তবু জেনে রাখ ভুলো,
'আমাকে লুকিয়ে যা করেছিস, তার চেয়ে মহাপাপ আর কিছুই হয়
না। আর বৌম। ! তুমি এই ছুধের ছেলের মুখে নাকি এ বিষ দেলে
দিতে চেয়ে ছিলে ?”
«একশ বার দোব ! আমার ছেলে, আমি--”
বাধা দিয়। শাস্তিময়ী বলিলেন__-“বিষের নেশায় পাগল হয়েছ
তোমরা» তাই মাপ করলেম। তোমার হ্থেলে,_-নয়? গুধু বিষুলেই
ছেলে হয় না বৌ! আঁতুড়বর থেকে আমার কোলে শুরে, আমার
বুকের রক্ত চুষে, আমারই আদরযজ্রে এত বড়টি হয়েছে__সে তোমার
ছেলে-_নয়?” প্রত্যুত্তরের প্রতীক্ষা না করিয়াই আহতমধ্যাদা
মহীয়সী প্রস্থান করিলেন ।
বীভৎস উল্লাসে উন্নত দম্পতি সুরাশ্্োতে ভাসিয়৷ সমস্ত দিন-
রাত্রি উদ্দাম আনন্দে অতিবাহিত করিল।
১.
(৮ শু )
ঠাকুর বাড়ীতে আসিয়া! সত্যভাম। দেবী মানসিক দুশ্চিন্তায়
কাতির হইয়া পড়িয়াছেন। ভ্রাতা শ্রীধরের সহিত দিবারাত্রি
নাঁন।বিধ আলাপে তিনি স্থির সিদ্ধান্ত করিয়াছেন যে, জগদিন্দু সামন্ত
গ্রকটু চেষ্টা করিলে স্বর্গগত কর্তার জমিদারী--মায় বাস্বভিটা পর্যান্ত
প্রমন করিয়৷ শক্রর হস্তগত হইত না।
তিনি নালা কৌশলে আদেশ, অনুরোধ, উপরোধ এমন কি
তিরস্কার করিয়াও জগিন্দুকে পুনরায় মোকদ্দমায় লিপ্ত করিতে
পারেন নাই। 5
এখনও ঠাকুর বাড়ীর বাৎসরিক আয় যাহা আছে তাহাতে
গরেই ক্ষুদ্র পরিবারের অক্লেশে চলিয়া যাইতে পারে। উপরস্ত, সত্যভামার
নিজের কিছু নগদ অর্থ এবং* তাভাঁর ও বধূ 'অন্ুশীলার অলঙ্কারাদিতে
ছুই দশ হাজার টাকা রহিয়াছে । ইহাদ্বারা অনায়াসে আবার
_ একট। মোকন্দম। রুজু করিয়া লুপ্ত জমিদারীর পুন:রুদ্ধার করা যাঁর।
এই অবস্থায় সামান্য বিষয়বুদ্ধিসম্পন্ন যে কেহই আঁবার নৃতন
মামলা পত্তন করিতে দ্বিধা বোধ করিত না । কিন্তু এমনি সতাভামা
দেবীর দগ্ধ অদৃষ্ট, জগদিন্দু তাহার কথা৷ কাণেই তুলিল না। অভিমানে
সত্যভাম৷ ছুইদিন জলবিন্দু গ্রহণ করেন নাই।
তগ্ত নিদাঘমধ্যাহ্কের প্রথর মার্ভওতাপ, শুস্ত উদরজালা,
হ্খ্
পল্লীবতী
আর হৃদয়ের পরিপূর্ণ ছুঃখভার জুড়াইতে মাতা, ঠীকুর বাটা-
প্রাঙ্গঈণস্থিত__-বট, অশ্ব, অশোক, বেল ও আমলকী বৃক্ষরচিত পঞ্চবটী
ছাঁয়ার বসিয়া! মাল! ফিরাইতেছেন।
যেই মিরাদগঞ্জে একদিন সত্যভাম! দেবীর স্বামী, শ্বশুর প্রভৃতি
প্রবল পরাক্রমে “রাজত্ব করিয়! গিয়াছেন ; যেই গ্রামের মধ্যে তাহার .
পদমর্ধ্যাদী একদিন সর্বোচ্চ বলিয়া গণা হইত, ভঠাৎ সেই গ্রামেই
আবার দীন অবস্থায় পূর্বপুরুষ-স্থাপিত বিহীহসেবার উপস্বস্থে
জীবনধারগ করা সতাভামার পক্ষে দুঃসহ মর্-পীড়ার ব্যাপার,
একথা বলাই বাহুল্য ।
ইত্িমধো দলে দলে ভদ্রাভদ্র প্রজাবর্গ 'আসিয়া জগদিন্দুকে
নজরাণ দিয়! গিয়াছে । তাভারা অর্থ সাহাযোর ভরসা দিয়া সকলে
মিলিয়। আবার জগদিন্দুকে মোকদম! করিবার জন্য অনুরোধও
করিদ্াছে; কিন্ত সমস্তই অরণো রোদনের মত নিন্ফল--জগদিন্দুর
সংকন্পের কোনও পরিবর্তন হয় নাই ।
জগদিন্দু শিক্ষিত, সদ্বংশজাত, চরিত্রবান যুবক। তাহার
সমবেদনা, ' স্থবিচারশক্তি এবং প্রাণঢালা আত্মতাগের জন্য
সেই প্রদেশের আবালবু্ধ সকলেই তীহাকে যথাযোগ্য স্নেহ,
শ্রদ্ধা এবং ভক্তি করিয়া থাকে । সেই জগদিন্দু আজ কোন্
উচ্চতর আকাঙ্ষার প্রেরণায়, কোন্ প্রগাঁট মনোবেরনায়
সব্বত্যাগী বৈরাগা গ্রাহণ টিপি সে কথা ভাবিলনা ব!
বুঝিল না।
এক মুহুর্তের জন্যও জগদিন্দুর অবসর নাই । বিরাট পল্লী-কর্মকেন্দ্রে
৩
শননী-ী।
প্রাতঃকাঁল অবধি বেলা ছুই ঘটিক৷ পর্যন্ত গ্রামে গ্রাষে, পাড়ায় পাড়ায়,
_ শৃহে গৃহে ঘুরিয়া দীনবেশে তরুণ বৈরাগী আর্তের সাস্বনা, রোগীর সেবা,
দরিদ্রের সাহায্য করিয়। বেড়ায় ।
বিকালে আবার গভীর রাত্রি পর্য্স্ত ঠাকুরবাটা-প্রা্ঈণে-পঞ্চবটা-
বিচ্ছায়ে শ্তামল দুর্বাদল গালিচা-মপ্ডিত ভূমিতলে, চন্দ্রতাঁরকামালা-
খচিত বিশাল চন্দ্রাতপ-নিয়ে নানাগ্রামের শত শত লোক জড়
হইয়া-_পারিবারিক, সামাজিক, আথিক বা! বৈষয়িক সর্বপ্রকার
মনৌমালিন্তের অবসান করিয়। যায়|
অনুশীলা প্রাতঃকালে মাতার পৃজাহ্িকের ব্যবস্থা করিয়! তাহার
পায়ে ধরিয়া সাধিয়াছেন-কিন্ত সত্যভামার ক্রোধ বা অভিমানের
লাঘব হয় নাই। দয়িতা শিশুনুলভ আব্দার-অন্ুনয়ে 'াকু'্মার,
কোলে সুখ লুকাইয়৷ কাদিয়াছে, কেনি ফলই হয় নাই। .
ভোর ন! হইতে বাঁলিক! ঠাকুর বাড়ীর বাগান হইতে নানাবিধ
ফুল তুলিয়া-_মাঁল৷ গাঁথিয়া-_এক সাজি ফুল ঠাকুর বাড়ী পাঠাইয়া
'অপর সাজি ঠাকুমার পুক্তার জন্য পৃথক করিয়৷ রাখে । ছুই দিন
সেই ফুল সাজিলুদ্ধ শুকাইয়। রহিয়ছে।
'মভিমানে, হুঃখে বালিকা একদিন “আড়ি ধরিয়া ঠাকুরমার সঙ্গে
কথাই কহে নাই। অতি ছুঃখে প্রগঁটি অভিমানে আজি আবার
_ বালিকা সতাভামার গলা! জড়াইয়া ধরিয়া ০০০৪৬ ঠাকুমার
রাঁগ পড়ে নাই।
তাই দরিতা কাদিতে কীদিতে ঠাকুরমার শয়নকক্ষে ঠাকুরমার
পুজোপচার-_কুনুম-দস্তার আগলাইয় ধূলীশষ্যায় ঘুমাইয়। রহিয়াছে।
| ৪
পভলী-ভী।
খুমের মধ্যেও কঠোর মর্খপীড়ায় মাঝে মাঝে এক একট! পাঁজরা-
কাপান দীর্ঘস্বাসের সঙ্গে বালিকার চক্ষু বহি অশ্রধার! গড়াইয়।
পড়িতেছে।
দেবালয়ের ভোগ-আরতি হইয়। গিয়াছে। পুজারিগণ অন্দর
বাড়ীর জন্য প্রসাদ পাঠাইর়৷ দিয়া আহারান্তে বিশ্রামস্থধে মগ্ন
ভইয়াছে ; সমন্ত বাড়ী নিস্তব। কেবল সত্যভাম। একাকী
পঞ্চবটানিম়্ে মাল! জপিতে জপিতে ইষ্টমন্্ ভুলিয়া, বিষম দুশ্চিন্তায়
অশ্রমৌচন করিতে ছেন।
অন্দরে অনুশীলার প্রাণেও স্বস্তি নাই---জননীবপিণী শ্বশ্রঠাকুরাণী
গভীর মনোবেদনায় ছুই দিন ধরিয়া অতুক্তা' রহিয়াছেন। সমস্তদিন
'পরে কাল রাত্রিতে জগদিন্দু ও অনুশীলা ছুই মুষ্টি শুষ্ক অন্ন মুখে তুলি
ছিল; আজ এখনও জগদিন্দু গৃহে ফিরে নাই, অনুশীলাও অভুক্ত
রহিয়াছ।
'অন্ধুণীল! কোন মতেই মন্ঃস্থির করিতে না পাঁরিয়া ধীরে ধীরে
সত্যভামার পার্খে আসিয়া বসিল। »নীরবে অশ্রমোচন করিয়া
সাধবী, শাশুড়ীর পদধূলী মাথায় লইয়। বলিল,__-
চিলমা। এমন কোরে না খেয়ে থেকে আমাদের অকল্যাণ
ই না। মেয়েটাও না খেয়ে পূজীর ঘরেই এতবেলা পর্যন্ত
ডুগ্র্থমে কোনও কথাই বলিলেন না। অনেক
সাধ্যদাধনার পর তাহার মুখে কথা বাহির হইল বটে, কিন্তু অুশীলা
ব্যতীত বাঙ্গালার দ্বিতীয় কোনও কুলবধূু শাশুড়ীর সেই সকল
৫
গশঙ্ী-ী
কটু, কর্কশ, নির্জ্ল! মিথ্যাপবাদ এবং লা্ছনাবাকাগুলি হাসিমুখে
হজম করিতে পারিত কিন! জানিনা ।
সতাভাম। দীর্ঘ মৌনব্রত-ভঙ্গে প্রথমতঃ অকর্মণ্য পুজ্রের ছুব্য বহার,
এবং আত্মমর্ধ্যাদাজ্ঞনের অভাব সম্বন্ধে সুদীর্ঘ বিলাপ বক্তৃতা
করিলেন। পরে "লক্ষণে, স্কুলপড়া, বিছুমীবধূবরে আনিবাঁর ফলে
কেমন করিয়া তাহার লক্ষ্মীর সংসার শশানে পরিণত হইয়াছে;
কেমন করিয়া অলঙ্গীর প্রতিমূর্তি, রঙ্গপরিহাসপরায়ণা, রূপসী, ডাঁকিনী
অনুশীলা, মাতার স্নেহ ক্রোড় হইতে কাড়িয়! লইয়া তাহার
সর্বগুণের আধার পুক্ররত্রকে বিপথে চালিত করিতেছে ; কেমন
, করিরা শ্ত্রেপে জগদিন্দু, পত্বির সহিত একদিনের বিচ্ছেদ ভাবনায়
সদরে যাইতে কুষ্ঠিত হইতেছে, ইত্যাদি যাবতীয় প্রসঙ্ষের অবতারণা
করিয়৷ অনেকক্ষণ ধরিয়! একপক্ষদুষ্ট বাক প্রবাহ্মগ্ন রহিলেন।
অনুশীলা কোনও প্রতিবাদ করিল না। তাই গুছির 'অভাবে
বাকারজ্ছববচনায় অসমর্থ হইয়া অগত্যা সতাভামা নীরব হইলেন।
ভাস্তমরী অগ্ুশীলা বিনয়নগ্ভাবে সকল অপরাধ স্বীকার করিরা'
লইল-_সত্যভাম!র মার্জন|ভিগ্রা করিল |
“মা, শত অপরাধ করেছি আমরা । তুমি যেমা! মাগুরা
অলক্ষণে মেয়েকে যে তুমি মেয়ের মতই এতদিন প্রতিপালন রুরু
মা! 'আমাদের অপরাধ মাপ করো 1৮.
বলিয়া সরলতামযী সত্যভামার পদপ্রান্তে অশরবৃষ্টিু্ীতে লাগিল ।
এমন সময় শ্রীধর আহারান্তে ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম করিনা
দক্ষিণতন্তে বাজনী ও পান, বাঁম হস্তে হুক এবং স্কন্দে আর গামছা
১৬
পল্লী-ী
লইয়। সেখানে উপস্থিত হইল। ঘোমটা টানিয়া শ্ত্রাননুখী অনুশীলা
দুরে সরিয়। বসিল।
দোসর পাইয়া সতাভাম! দেবীর কথার তৃষ্ণা আবার জাগিয়া
উঠিল। |
“ছ়িছু, তুইও "মামার কথা শুনবি নি? এই গ্রামে আমি
সকলের কাছে হেয় হয়ে থাকতে পারব না। আমাকে, বাধা
বিশ্বেশ্বরের পায়ের তলায় রেখে আয় ভাই ।”. বলিতে বলিতে মাতি।
কীদিয়া ফেলিলেন।
শ্রীধর স্থযোগ পাইয়া বধুকে সন্বোধন করিয়া বলিল -“আচ্ছা
বৌম! ! দিপ্দির উপর এই অতাচার---এটা কি ভাল হচ্ছে ?”
অনুশীল৷ স্তস্তিত হইয়া গেল। সে ত কখন৪ ভানতঃ কাহারও
প্রতি কোনও অত্যাচার করে নাই--তবে এ কথাব্র অর্থ কি!
ভাবে বধূর মনোভাব বুঝিতে পারিরা শ্রীধর বলিল--
“তুমি ত বাছ। ঘরগেরস্থের মেয়ে, তুমি বুঝবে না । বেই গ্রামে
দিদি একদিন" সকলের উপর প্রতৃত্ব ফরে বাস কচ্ছিলেন, সেই
গ্রামেই আবার দীনভাবে বাঁস করা বায় কি? তাই বলছিলেম,
বৃদ্ধব়সে এই অত্যাচার একে তোমরা কেন কচ্ছ ?
- ভাবটা হ্বায়ঙ্গম করিয়া অন্ুশীলা আশ্বস্ত হইল। আবার
তখনই দারুণ ছুঃখে অনুচ্চন্বরে বলিল-মাকে ইচ্ছ। করে কি
আমর! কোন রঃ 'দিচ্ছি মামাবাবু?”
সুযোগের অবহেলা করিবার পাত্র শ্রীধর নহেন। তানি তাই
বলিয়৷ ফোললেন,--
হ্৭
পল্লী-্ী |
“তা ছাড়া আর কি বলব বল? ইচ্ছা করলেই যখন আবার
পৃর্বের অবস্থা ফিরিয়ে পাওয়৷ যায়__অন্ততঃ দিদির মুখ চেয়েও কি
তোমাদের, তা করা উচিত নয়। না করলে অবশ্ঠই সেটা
ইচ্ছাকৃত অত্য|চারই বলা যেতে পারে ।”
দারুণ অভিমান এবং প্রগাঢ় মন্ব্যথায় অধীর হইয়। কাদিতে
কাদিতে 'অনুশীল! অর্ধ অবরুদ্ধকঠে বলিল,__
“তকে ভাল কোরে বলুন না কেন? আমার ত তাঁর কথার উপর
কথা৷ বলা সাজে ন৷ মামাবাবু! কিন্ত মা ছুর্দিন উপবাসী, মাকে বুঝিয়ে
বলুন--এতে যে আমাদের বড় অকল্যাণ হয়।”
সত্যভাম! 'আর নীরব থাকিতে পারিলেন না ।
“আহা কথার ভঙ্গী দেখ! ছেলেটাকে ভিথারীর মত পথে
বসিয়ে আবার পোড়। মুখে কল্যাণ অকল্যাণের কথা । মুখে আগুন !
'আর আমার কাছে কারু বক্তৃতা কর্তে হবেনা । আমার ইচ্ছা
. হ'লে খাব, নয় খাৰ না, তাতে কারু ভাবন। কর্তে হবে না । রাজার
রাজ্যি লুটিয়ে দিতে দর হলে! না-_-আজ কিনা মায়ের ছুঃখে
'মায়াকার। কাদতে এসেছেন !”
অনুশীলার সদান্সিগ্ধ প্রশান্ত হৃদয়ে মায়ের কথার তীক্ষ বাণগুলি
একটু আঁচড় কাটিতেও সমর্থ হইল না। সে আশৈশব বাক্সংযম
অভ্যাস করিরাছে। মায়ের তিরস্কার সে আজীবন আশীর্বাদ
বলিয়াই বরণ করিয়া লইয়াছে; বিশেষতঃ স্বকীয় আদর্শ যতই
উচ্চ হউক না কেন-_সংস্কার, শিক্ষা এবং চিরাচরিত আচার ব্যবহার-
জনিত ধারণায় বর্তমান দৈসম্তের অবস্থা যে জমিদার-গৃহিণী, জমিদার-
ন্ট
পল্লী
মাত। সত্যভামার পক্ষে দারুণ র্লেশদায়ক, তাহা সি বুঝিতে
পারিত।
এমন সময় ভজহরি,_-
মাটির পুডুল কে বলে রে,
চিগ্নয়ী তুই মৃষ্যয়ী মা।
গাহিতে গাহিতে শ্তামলের সঙ্গে সেইখানে উপস্থিত হইল।
আজ ছুই দিন দয়িতার সঙ্গে শ্যামল খেলা করিতে পায় নাই।
তাই বাঁলক অভিমান ত্যাগ করিয়! দয়িতার খোঁজে আসিয়াছে।
অগত্যা অনুশীল! অনারে প্রস্থান করিল। এক লম্ফে বালক.
কাকীমার কোলে উঠিয়াই তাহীর মলিনমুখ দেখিয়। বিমর্ষ হইল।
সত্যভামা মনের হুঃখে অনেক আক্ষেপ করিয়া, অবশেষে
কাশীধাম যাত্রাই সমীচীন বলিয়! স্থির করিলেন। শ্রীধর অগত্যা
আবার একট! বিরাট মোকদামার বিপুল মাদকতার আশ! ত্যাগ
করিয়া, ভগ্মির সহযাত্রী হইতে সম্মত হইল ।
ক্ষণকাল এই সকল কথায় অতিবার্হত ' হইলে ডাক হরকর!
জগঘিন্দুর নামীয় একখান! রেজেস্বী পত্র শ্রীধর বাবুর হাতে দিয়া গেল।
পত্র পড়িয়া হ্র্যবিষাঁদের বিজ্লী-ছায়ালোক-সম্পাতে_-শ্রীধরের
ব্দনমগ্ডল আচ্ছন্ন হইয়! উঠিল। অধৈর্য উৎকগায় আকুল হইয়!
ভ্রাতা ভগ্নী অন্তমনে ভজহরির সুমধুর সঙ্গীততরঙ্গে ভাসিতে লাগিল ।
প্রায় ছুই ঘটিকার সময় জগদিন্দু ক্লান্ত অবসন্র দে, গৃহ প্রত্যা-
বর্তন করিল। বিমল উৎদাহে পত্রধান৷ ১০৪ তত দিয়া শ্রীধর
বলিল, _
২৯
পলী-ী
“আর অমত করোনা বাবাজী ! এত বড় উকিল রসিক বাবু?
তিনি লিখেছেন : গ্ভাখ, মিথ্যা “রিটার্ণ দিয়ে ডিক্রীজারিতে. দখল
নিরেছে বলে, এবার সদরে গিয়ে একট। দরখাস্ত আর এফিট-ওপীঠ”
করলেই বেটা কেলফিরিঙ্গীকে হাতকড়ি দে পুলিপোলাও চালান
ক'রে দেবে 1৮
বিরাট আনন্দের হাসি-হিল্লোল অন্তর ছাপিয়৷ শ্রীধরের শ্রীমুখ
প্লাবিত করিয়া দিল। পত্র পাঠাস্তে অনেকক্ষণ জগদিন্দু নীরব রহিল।
তাহার মতের পরিবর্তন হইয়াছে ভাবিয় শ্রীধর মহাহর্ষে-বলিল,--
“আর দেরি করো না বাবাজী, আজকের মেলেই যেতে
হবে ত'।”
ধারে স্পষ্ট-স্বরে জগদিন্দু বলিল,__
“মাম। না, আর আমায় প্রলোভন দেখিও না। শৃঙ্ুমুক্ত
হয়েছি, আর সেই শূঙ্খলে বাধতে চেওনা আমায়»
বিস্মগবিমুঢ়া সত্যভামা বলিলেন, “সে কিরে জগত ? উক্িলবাবু
লিখেছেন, ওদের পুলপে্লাও চালান কোরে দেবেন-_তধু তোর
ঘুম ভাঙ্গল না ?”
“না মা, এই উকিল. জাতটাকে আমি বেশ ভাল করেই চিন্ছি।
সরল প্রাণ বিষরলিগ, দের অনায়াসে পাহাড়ে তুলে আবার পাষাগে
আছিড়ে মারতে একটু দ্বিধা বা সঙ্কোচ বোধ করে নাঁ এরা । ভিটায়
ঘুঘু চরিয়ে আবার অমনি আকাশের চাদি হাতে তুলে দিতে এদের মত,
কেউ নাই। এই জাতটাকে খুব ভাল কোরে চিনেছি ম1 1”
বলিয়া জগদিন্দ ০০৪ যাইতেছিলেন।
0৪
পর্লী-ভী।
ভ্জহরি অমনি বলিয়! উঠিল “সে কিরে জগদা ? সম্ভায় এমন
কিস্তিটা হাতে পেয়ে ছেড়ে দিলি?”
হাসিতে হাসিতে জগদিন্দু বলিল “তাইত দিলেম দাদা! তজ!
"আর জগদা যুগল ইয়ার যে এক গোয়ালে ঘাস খায়রে।”
বাধ দিয়া অধৈর্ধ্য সত্যভাম। বলিলেন,__ ৃ
প্যাথ, আমার এই শেষ কথা । আমার কথ! তুই শুনবি নি?
স্তম্তিতে জগদিন্দু ভাবিল, “মায়ের কথা শুনবো! না? না, এত
মায়ের কথা নয়! ভ্রাতার বক্ষরক্তের তৃষ্ণায় ভাইয়ের হাতে মা কখনও
ছুরি তুলে দেয় না-এ মাতুলের কথা) মা সন্তানের মঙ্ঈল-
কামনায় বুক ছিড়ে বক্ষের নিধিকে নিরাপদ নিরালায় রেখে আসে,
আঁয় মামা- সগ্ভজাত শিশুকে পাথরে আছড়ে মারে ।»
তাহাকে নীরব দেখিয়া ধৈর্যাহীন! সত্যভাম! বলিলেন,__“আমার
কথার উত্তর চাই জগত 1”
ভূমিগাত্রে নতৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া জগত বলিল,_-“আর আমি
কোন ঝঞ্চাটে যাৰ না মা।”
বিষম ক্রোধে উন্মস্ত জননী নানা বিভীষিকা'প্রস্থ জালাময়
বাক্যে পুভ্রকে ভতসনা করিতে গালিলেন। নীরবে জগত সকল
কথ! শ্তনিয়৷ গেল, একট কথারও প্রত্যুত্তর করিব ন!।
তাহাতে অধিকতর ব্যখিতা হইয়। সত্যভাঁমা বলিলেন,_
“জগ্রত, ত৷ হ'লে আমি কি বুঝব যে তুই সদরে যাবি না ?”
নম অথচ স্থিরকঠ্ঠে জগদিন্দু বলিল/--৫না মা, আর আমি
আদালতের আবজ্জনার স্পর্শে যাবনা 1৮ ্
৩১
পলী-
“বেশ, তা হলে আমি চল্লেম জগত। আর তোর মৃত কুল-
কলঙ্ক পুত্রের আশ্রয়ে এক তিলও থাকব না।” বলিয়া, মাতা,
গাত্রোথান করিলেন। ও
“কোথায় যাবে মা?”
“আমি আজই কাশী চল্লেম।”
“বেশ মা, তাই ভাল। তোমার ইচ্ছা হ'লে আমিই তোমায়
্ীবিশ্বেশ্বরের কাছে পৌছে দিয়ে আসি মা 1»
«কোন কাজ নেই। তোর মুখ দেখলেও পাপ হয়_তুই
আমার পুত্র নস্! তুই-_
ক্রোধোন্ত্ত! মাত| বিষয়বিত্রীন্তির মোহে পুত্রকে আরও কট্যুক্তি
করিতে যাইতেছিলেন। সহান্তে জগদিন্দু বাঁধ! দিয়! বলিল---
“অমন কথা! বলো নামা! আমি তোমারই পুত্র! যাও
মা-_শ্রীভগবান তোমার প্রাণে শাস্তি বিধান করবেন। তোমার
আজন্মার্জিত সংস্কার অভিমান-বাথ! আমি বুঝতে পারি মা । কিন্তু
প্রতীকারের পন্থা নাই। তবু মা» আবার একদিন এসো-_তোমার
অযোগ্য সন্তান যেদিন মাতৃমন্ত্রের সাধন! করে এই পল্লীপীঠ বুকের
রক্তে ধুয়ে, আবার আহ্বান করবে তোমায়, সেদিন এসো মা |”
বলিতে বলিতে ভাববিহ্বল নবীন সন্ন্যাসী সেই সুপবিত্র বাটচ্ছায়ায়
[ুত মাতৃপদধূলি মাথায় তুলিয়া লইল।
শ্রীধরের হাত ধরিয়া! সতাভামা অন্দর মধ্যে প্রস্থান করিলেন।
চাঁড়াতাড়ি নিজের সমান্ বঙ্্রালঙ্কার, অর্থাদি বাঁধিয়৷ লইয়৷ ভ্রাতার
[হিত সত্যভাম! কাশীধাম যাত্রা করিলেন।
৩২
অনেকক্ষণ নীরবে বসিয়া থকিয়া ভঞ্জহরি জগদিন্দুর কাছে
'আসিয়৷ বলিল, “সাবাস ভাই--কিন্ক পারবি ত?”
গভীর মর্ববেদনা চাপিয়। রাখিবার ব্র্থ প্রবাস করিয়া আর্,
রুদ্ধকঠে জগদিন্দু বলিল,--
“কি জানি ভাই, হৃদয় স্বভাবতঃ ছুর্ববল-কর্ম বি। তবে
চেষ্ট! করে দেখি ।” নী,
“তুই পারবি জগদা। আমি দেখছি-দত্য সাধকের জ্যোতি
তোর মুখে ফুটে উঠেছে !”
বলিতে বলিতে বিমল আনন্দে ভজহরি-_
ভাবসাগরে নবীন তরী --প্রমের নেয়ে এ বেষে যায়।
গ।হিতে গাহিতে প্রস্থান করিল। ূ
দম্মিতা আর শ্ামল অধোমুখে সেইখানে আসিয়া, ছুইজনে
জগদিন্দুর দুইখানি হাত ধরিল।
অশ্রবুট-নতি কচি দুখখানা পিতার বক্ষে লুকাইয়৷ দয়িতা:
বলিল৮-ঠাকুমাকে যেতে রে না বাবা!”
শিশু ্বদয়ের অন্ধ আগ্রহবাণী জগদিন্দুর প্রণে নৃতন করিয়। তুফান
তুলিল। দে ভাবিল,---
যাক, সকল সঙ্কল্প চরণ হয়ে যাক, তবু সংসার উদ্ভানের এই
সুধাবৃক্ষের মুলোচ্ছেন কর্ে পারব না।”
এই প্রকার ' প্রবন দ্বন্, জয়পরাজয়ের ঘূর্ণ্যাবর্তে পড়িয়া!
জগদিন্দুর পবিত্র আদর্শ প্রায় ভাঙ্গিয়া গেল।
“মা-ধীর দেহাভ্ন্তরে এই জরা» মরণ, আধি, ব্যাধি-মন্দির
৩৩
শ্গী-
মাংসপিও_ থম রূপ-পরিগ্রহ করিয়াছিল; বার ধমলীয় হত্তধারার
সুধাপ্লাবনে এই অহমিকাকিগ্ত দেহে প্রথম অমৃতবিদ্দু সিকি
হইয়াছিল? ম-_যাঁর নিগ্চ অতয়ক্রাড়ে অজ্ঞান, ক্গীণ শিশুও সংসারের
»ত বিভীষিকার ভয় পরিহার করে__যীর বক্ষ শোদিতধারা শিশুমুখে
তগবান ক্ষীরামুত-রূপে ঢালিয়। দেন, ধার নিস্বার্থ স্গেহ, ভালবাসা,
আজ্জত্যাগ কোন প্রতিদান চায় না_সেই মায্কের প্রাণে ব্যথা
দিয়েছি! না, তা হবে না!”
ভাবিতে ভাবিতে মীতুভক্ত সাধকের মন একাক্ষর মাতৃমন্ত্রে
দ্বমৃত মদিরায় ভরিয়া উঠিল।
বিষম সনোহে তাহার সমস্ত সতা। কীপিয়া উঠিল। “এষে
যা! চিন্তাময়ী, ধারণাময়ী, প্রত্যক্ষ ভূতা, জগদীশ্বরী জননী। আর”
অপর দিকে-_বিরাট কর্পনাময়ী, ভাবময়ী, প্রেরণাময়ী, ভগন্ধাত্রী-
ব্ূপিণী জন্মভূমি । একদিকে জাগরপ- অন্ত দিকে স্বপ্ন । একদিকে
জড় প্ররত্যন্ীভূতা৷ দেবী-_-অপরদিকে লুক মানসপ্রতিমা । একদিকে
প্রত্যক্ষ অনুভূতি ; অপরদিকে অতীন্জিয়, পরোক্ষ জ্ঞান,
ভাবনা-বিহ্বল, পথহারা৷ জগদিন্দু আপন মনে ভাবনা রাজ্যে
বিচরণ করিতে লাগিল। দয়িত পিতার এই উদ্ভ্রান্ত ভাব লক্ষ্য
করিয়৷ তাহার পায়ে আছড়াইয়৷ পড়িল। কাদিতে কাদিতে বলিল,
প্ঠাকুমাকে ঘেতে দিও না বাবা!” |
সহস! শিশুর ক্রন্দনে জগদিন্দুর জ্ঞান সঞ্চার হইল। শিশু
যুগলের কোমল দেহবন্পরী বক্ষে ধরিয়৷ তাহাদের মন্তকে সাধনার
হাত বুলাইতে বুলাইতে সে বিরাট ছুঃখে দীর্ঘনিশ্বীস ত্যাগ করিল।
শঙগী-
অচিরে জগদিন্দু নানাপ্রকার মধুরবাক্যে শ্রামল এবং দয়িতাকে
শান্ত করিল। প্পরবুদ্ধ বালক বালিক৷ মধুর নীরব আপ্যায়নে, নিভীজ
'অমৃতময় বাক্যচ্ছটায়-_জগদিন্দুকে অনেকক্ষণ ধরিয়! তুলাইয়! রাখিল।
অচিরে দূরে নাটমন্দির মধ্যে তাহার! খেলায় মগ্ন হইল।
এমন.সময় ধীরে ধীরে অনুশীল। আসিয়া স্বামীর পারে দীড়াইল।
বিষম হবন্বতুফানে তাহারও ব্বদয় মথিত হইয়াছে। ইতিকর্তবা-
নির্ধারণে অসমর্থ হইয়। সাধবী, স্বামীনকাশে আগমন করিয়াছে।
তাহার চক্ষু বহিয়। অশ্রমাল! গড়াইয়। পড়িতেছিল।
“মাকে বারণ কর্লে না?” বনিয় স্বামী-সোহাগিনী আঁচলে
চক্ষু মুছিল।
“বারণ করে কি হবে অন্তু? যেই গ্রামে একদিন ম! সর্বসয়ী
ক্তৃরূপে বাস কচ্ছিলেন সেই গ্রামে এমন দীনভাবে বাস কর্তে কি
তিনি পারবেন? ভাবছি_ স্থলে কি করব! আবার বিষন্বের
মোহে গ! ভাসিয়ে দেবনা যেই সঙ্কল্প করে ঘর থেকে বেরিয়েছি,
তাই নিয়ে এগিয়ে যাব”
জগদিন্দু আবার দীর্ঘনিশ্বীস ত্যাগ করিল।
“মাকে ছেড়ে কখনও থাকিনি। তাঁকে ছেড়ে সংসারে কি
কোরে থাকব? অথচ বুঝতে পাচ্ছি, এমন কোরে তিনি--”
বলিতে বলিতে কি ভাবিয়া অন্ুশীলা নীরব হইল। তাহার
প্রাণের কথ! হৃদয়ঙ্গম করিয়া জগদিন্দু বলিল,_-
“তুমি জানন! অন্থু, ভগবৎ প্রেরিতের মত তুমিই এই মহামন্ে
দীক্ষ/ দিয়েছে আমাগন। আমর! বৈরাগী-_বৈরাগীর সংসার নাই।
৩৫
লীন
প্রাণ দৃঢকরে কর্্মআোতে ডুবে থাক। ছূ'দিন পরে আবার ফিরে
আসবেন তিনি। অনু, তিনি যে মা! সন্তানের উপদী মাছের
অভিমান ক'দিন স্থায়ী হবে? তিন দিনে অভিমান গলে গিয়ে
আবার স্নেহের আকর্ষণে অধীর হয়ে ছুটে আসবেন তিনি!”
বলিতে বলিতে- প্রগাঢ় ভক্তি বিশ্বাসের বিমল জ্যোতিঃতে
জগদিন্দুর বদনমণ্ডল উদ্ভাসিত হইয়া! উঠিল।
দুরে দেব-মন্দিরের অবরুদ্ধ হুয়ারে প্রণাম করিয়া সত্যভামা ও
শ্রীধর জনৈক ভৃত্য সহ গৃহত্যাগ করিলেন। নীরবে পুত্র, খ
মাতৃপদপ্রান্তে, নগিত হইল ।
অভিনানিণী সত্যতামার অ'খিপন্ম প্লাবিত করিয়া আঁবণের
বন্যা বহিয়। গেল |
বহুদূর পর্য্স্ত পলকবিহীন দৃষ্টিতে মাতৃভক্ত দম্পতি মায়ের পানে
চাহিয়া রহিল। সত্যভামা অনৃপ্ত হইরা গেলে অন্থণীনার চমক
তাঞ্গিল। বিরাট-মনোবেদনয় সে বলিতে লাঁগিল৮-
“না__নাঁ-নাঁকে ফিরিয়ে আন, মায়ের কোলছাড়! হয়ে থাকতে
পারব না। ওগো-ওগো- তোমার প্রাণ কি পাথর দিয়ে গড়! ?”
“হবে নৈলে ম| চিনলেম না!”
ভাব বিহ্বল যৃবক পাথর দৃষ্ধির নত দীড়াইয়। নন চক্ষে
প্রবল অশ্রুধারা, বক্ষে ঘন দীর্ঘশ্বাস!
(নেতাজি
' ক্ীক্লী-ী
৯. ৫ 47 ০
০, রশ
“এবারটি মাঁফ, ৮ হবে কর্তাবাবু। তারপর কয়টা দিন
আঁর? এই ফশলট! উঠে গেলেই কড়ায় ক্রাস্তি খাজনা গুণে দিয়ে
ষাব, তাঁতে আর একটা কথ।ও কইতে হবে না 1”
বলিয়! মিঃ শ্তাটোর সন্তরান্ত মাতব্বর গ্রাস করিমশেখ জৌড়করে
তাহার সম্মুখে ঈ।ড়াইল |
শ্র।টোর বিশাল কাছারী বাড়ীতে বু লোক দমাগম হইয়াছে ।
এক্ষখ(না! আরাম কেদারায় স্বরং শ্র/টে! গড়গড়ার নলটি হাতে করিয়া
বসিয্না আছে। বৃহৎ তাঁকিয়ার ছুই পার্থে ফরাশের উপর অনন্তদেব
এবংশবগোপাল।
দুই ধারে কলম কাণে গুজিরা এক একটি কাঠের বাকের পশ্চাতে,
জমাওরাশিল তলববাকির অগাঁধ তেরিজবারিজ গর্ডে ভাবমগ্র ভাবে
দেড় ডজন পরিমিত গোমস্তাবর্গ বসির আছে । নিযে, _অনুচ্চ,
লক্ষিত কা্ঠাসনে প্রজাগণ এবং দরজার দেশীর বিদেশীর পাঁইক
বন্ধকন্দাজগণ যথাযোগ্য বংশ হস্তে দণ্ডায়মান ।
বহুবসরব্যাগী মোকদমার দরুণ শ্তাটোর ভাগারে গ্মর্থ নাই।
অধিকন্তু সে মহা খণজালে৪ জড়াইয়া পড়িঘাছে। বড় হিস্তার
বিষয় হস্তগত হইলে, সে কড়া শাসনে প্রঞ্জাগণের নিকট রি টাকা.
আদায় করিবার জন্য বন্ধপরিকর হইয়াছে ।
খণপরিশোঁধ করিয়া অচিরে তাহার ধনভাগারে যথেষ্ট
শপ
পন্নী-ী
অথসঞ্চয় করিবার বলবতী ইচ্ছায় শ্থাটে! প্রতিদিন ছুই এক গ্রামের
প্রজা্দিগকে তলপ করিয়া৷ বিষম উৎপীড়ন করিয়৷ টাক! আদায়ের
চেষ্টা করিতেছে।
কাঁজেই করিমের কথায় কর্ণপাত করিবার মত মেজাজ বা
অভিরুচি শ্তাটোর ছিল না। আরক্ত নয়নে উচ্চৈত্বরে তাই সে
বলিল,__
: «ও সকল আবদারের কথা আমি গুনতে চাইনা-_-আজই পাওনা
টাকা সমস্ত মিটিয়ে দিতে হবে 1৮
করিম নানাপ্রকার দৈব ছুবিপাক এবং পারিবারিক বিপৎপাতে
অধুনা অত্যন্ত লাচার হইয়া পড়িয়াছে। তথাপি, স্বগ্রামের মধ্যে .
সৎ চরিত্র এবং বুদ্ধিবলে তাহার মর্ধ্যাদ! এখনও অক্ষুঞ্ন রহিয়াছে।
আজ, বাড়ী হইতে আসিবার সময় বেচার৷ খোদাতাল্লার দোয়া
ভিক্ষা করিয়৷ দুই ফোটা অশ্রুমোচন করিয়৷ আসিয়াছে যেন তাহার
'বেইজ্জত হইয়! গৃহে ফিরিতে না হয়|?
গ্রাটো৷ জবরদত্ত, জয়িদার। বিশেষতঃ উভয় হিন্তার যোল
আন! জমিদারী হাতে পাইয়! তাহার দাপট দশগুণ বাড়িয়া গিয়াছে।
কাজেই তাহার' ভয়ে গ্রজাগণ লাই শঙ্কিত হইয়া থাকে। অনেক
কষ্টে মনেরগ্ছুঃখ মনে চাপিয়া রাখিয়! করিম বলিল,” |
“ইন্সাফ্ কর ছুগুর! এই মাগি গণ্ডার দিনে ফশল ন| উঠলে
কোথেকে দেড়কুড়ি টাকা দিই। ছুই বছর ধ'রে অজন্মা, তার
উপর একটা বছরের ভিতর তিন তিনটা লায়েক ছাওয়াল
আমাকে ছেড়ে গেল। ভিট|র ঘর, গোয়ালের গরু সব খু'ইয়ে বিবির
৮
পলী-ভ।
হাতে ছুগাছি কাচের চুড়ী সার করেছি। আজ কচি মেয়েটার
বাউটা জোড়া বেচে সাতটি টাকা এনেছি। পাঁচ টাকা জমা দেব,
ম্সীর বাকি দুই টাকার ধান কিনে নিলে তবে ছাওয়াল বাচ্ছারা
ছুইদিন পরে একমুঠা মুখে গু'জতে পাবে। তুমি মা বাপ, একটা মাস
মেহেরবাণী কোরে সয়ে যাও_-তাঁর পর আর আমাকে কইতে
হবে না ্
বলিতে বলিতে করিম ছল ছল চক্ষে শ্াটোর পানে চাহিয়!
রহিল।
চল্রামাল জারা 'আর ুধিত ব্যাত্ের মুখ হুইতে
ধর্মের দোহাই দিয়া আত্মরক্ষা করিবার চেষ্টা করা--ছুইই সমান কথ! !
চীৎকার করিয়া শ্তাটো অধৈর্ধা ভাবে বলিতে লাগিল যে৮_
তোহার ব্দমায়েস প্রজাদের চিনিতে বাকি নাই। অন্য সক
কাজ 'অবাধে চলিয়া যায়, কেবল জমিদারের খাজনা দেওয়ার বেলাই
যত মিথ্যা ওজর ওজুহাত ! সে আজ কিছুতেই কাহাকেও ছাড়িয়া!
দিবে না। যদ্দি অপমানের ভয় থাকে তাহা হইলে করিমন্ছি
এখনই সমস্ত টাক! মিটাইয়। দিয়! যাঁক্
করিমদ্ধি মনে মনে প্রমাদ গণিল। “ইজ্জত খুইয়ে বেঁচে থাকার
চেয়ে বরং ইজ্জত বজায় রেখে মৃত্যুই শ্রেয়ঃ।, এই ভাবিয়া সে
সাতটি টাকা সমুদয় স্টোর পায়ের কাছে রাখিয়া স্গল চক্ষে
বলিল,
“এই নাও কর্তী। এত্বার কর _মার একটা কাণা কড়িও
“মামার নাই। যা আছে জমা করে নাও-_তার পর খোদা যদি
৩৪
প্পভনী-ী
খাঁনাবেগর জানে মারেন, তাই মরব। আমার বেইজ করে! না'
সাহেব__এতটুকু অনুগ্রহ কর।” ,
এই অময় একট| বীভতন হান্ততরঙ্গে সমবেত রর
প্রাণে বিষম বিভীষিকা ইনি তুলিয়া অনস্তদেব কর্তার হইয়া
বলিতে লাগিল,
২. “সেকিহে করিমদ্দি? অন্যায় করে কাদলে ত আর টাকার
কীজ-উলবে না। দাও ত হে বামুগ ঠাকুর--করিমের বাকিজায়
ফাটা 1” ্
বলিয়া সর্বাজনের সহানুভূতি আকর্ষণ করিবার উদ্দেস্তে সেই
মহামূলা ফণ্দানা তিনি পাঠ করিতে লাগিলেন,_
“তোমার কিস্তির খাজনা হোল গিয়ে পাঁচ টাকা আঁট
আনা। তার পর জলকর, পথকর, পার্সিকর, মাথট, চৌগ্নকর,
সব মিলিয়ে ধরে নাও তোমারগে সাত টাকা সওয়া নয় আনা ।
পার্ববনী, দস্করী, হিসাব_-আঁনা, সালিয়ানা হোল গিয়ে ধরে নাঁও--"
তিন টকা পচ আন! সাত পাই। তোমার বাপের ফরত!র রাঁজধুতি
পাঁচ টাকা, তমুর বিয়ের তিন টাকা, বড়হিন্তার জমিদারী দখলের
নজরাণ। তোমার হোল গিয়ে এই দশ টাকা।
“বাস্। মিলিরে নাও কড়ায় গগ্ডায় কাঠার কিয়ার হিসেব
কোরে সরকারি পাওনা হোল তোমার এই--আটত্রিশ টাঁকা সওয়া
এগারো আন! ! আর তুমি কিন! সাতটি ট|কা এনে হাঁজির কর্লে ?
চক্ষের ফৌটা ঢুচ্চার পানী খরচ করে কিস্তি মারতে চাও বাপু! এটা
কি উচিত হলো করিম? বলত তোমরা পাঁচজনে বিচার কোরে!”
৪
পঙী-ী
সুদীর্ঘ বক্তৃতান্তে অনন্তদেব নীরব হইলেন। ক্ষণকালের জন্য
শ্তাটোর দরবারে একটা মান নিস্তবূত। বিরাজ করিতে লাগিল।
একট! প্রবল দীর্ঘ-শ্বসে বক্ষের পাঁজরার হাড়গুলি কাপাইয়। করিম
বলিল,_
“ঠেকা ডিঙ্গির বাইছ, নাই সাহ্ব--এই আমার আছে,
আর নেই।”
অমনি দোর্দগগ্রতাপ জমিদারের হুকুমে উলঙ্গপ্রায় করিমের
কাছা কে।চা সমস্ত তল্প!স করিয়া দেখ! হইল বে আর কোথাও
লুকান কিছু আঁছে কিনা। বার্থ আশার তীক্ষ কশাঘাতে তখনই
হুকুম হইল--
“মোতাদিন শুকুল! লে যাও শুয়ারকো, দেউরীমে দিনভর
ধুপ্যে খাড়া রাখো । কপালমে পৈরেগ চড়ায়কে-_সম্ঝে। £”
নেমকহালাল মোতাদিন জমনি মনিবের তািল কনিবার
জন গ্রস্ত হইর! করিমের হস্ত ধারণ করিল রি
এই অভিনর আজি নৃতন নহে। পনিত্য নানা গ্রকার নৃন
নৃতন উৎপীড়ন-গ্রণালী অবনগ্ধনে প্রবল প্রতাপান্িত জমিদারের
খাজন! আদায়ের ব্যবস্থা হইত। কাজেই বাপারটা মকলেন
কাছেই এক প্রকার স্বাভাবিক হিসাবে গা হা হইয়া.
গিয়াছে।
কিন্ত ব্যাভিচার চরমে উঠিলে তাহার প্রতিক্রিদ্া গ্রক্কৃতির নিতা
নির্ধারিত নিয়মের মতই ঘটির। থাকে । হ্ঠাটোর : অত্যাচার,
প্রবঞ্চনা॥ ব্যাভিচারের মাত্রাও চরমে আরোহণ করিয়াছে, তাই
৪১
পঙ্লী-ভী
আজ তাহার জমিদারীর আবহীওয়াও এক মুহূর্তে ভিন্ন তাৰ ধারণ
করিয়াছে। |
মোতাদিন করিমের গাঁয়ে হস্তাপ্ণ চর দূর
সম্পকিত এক ভাগিনেয়-_স্থগঠিত বলিষ্ঠ দেহ মফিজ-- উঠিয়া
বড়াইল। সমবেত গ্রজামগ্ডলীর মধ্যে একটা চাঁঞ্চলোর ভাব
জাগিয়া উঠিল। যাহা হউক অপেক্ষাকৃত বিনীতম্বরে মফিজ
বজিল,_
“খুব হয়েছে সাব -বাস্! এখন মামুর হাতটা ছেড়ে দিতে বল।”
“তোম কোন হ্যায় শয়ার? আমার মুখের উপর লক্বা বাঁ
করণেকো৷ আয়া ভায়--হারামজাদা---+
সমবেত সমস্ত প্রজার ধৈর্চ্যুতি ঘটিল। এক শুভ্রগুন্ষ শোভিত
প্রশীস্তবদন বৃদ্ধ অমনি বলিয়! উঠিল,
নিবো নাভ চিত
না! এ নোধ্ড়া গালটা পা ফিরিয়ে নাও ্
বলিতে বলিতে সৌমা, প্রশাস্ত, দিব্য-কাস্তি, জ্ঞনবৃদ্ধের ছুইটি
গড বহিয় প্রবল অশ্রধার! প্রবাহিত হইল।
দ্বত প্রঙ্গেপে অনলের মত, প্রদীপ্ত ক্রোধে জলিয়। শ্তাটো! চীৎকাঁর-
স্বরে কি বলিবার চেষ্ট! করিল, কিন্তু 'অতিশয় ক্রোধে তাহার বাক্যক্ুস্তি
হইল না। ভিংত্র, বীভৎস, জালাময়ী দৃষ্টিতে মে জনৈক পাঁইকের
পাঁনে চাহিল।
তাহার মনোভাব বুঝিতে পারিয়৷ বুদ্ধ বলিল, _ গরেখে দাও
$২
পজী-ভী।
-সাহ্কেব তোমার--ডাল কুত্ত'র মত চোখ রাঙ্গানি! আমার নাম
সমসেরশেখ। তোমার নানা যখন বেঁচে ছিলেন তখন তিনি
'আমাকে ত।র পাঁশে এথানে বসতে দিতেন--আমাঁর কথায় তার
জমিদারী চলতো! পুছ কর এ কোণের এ বুড়ে। থুবড়ো আচার্ধ্ি
'মশায়কে।
“তারপর তোমার আমলে এই বুড়াকে তোমার কাছারীতে
একদিনও দেখ নাই। তোমার পাইক বরকন্দাজ কে আছে
ডাক দেখি! আমর এই হাঁওয়ায়পড়া হাড় করখখনাতে হাত
ছোঁয়াবার হিম্মত আছে কার ?”
অনেকক্ষণ স্তব্ধ হইয়া! ধাড়াইয়৷ থাকিয়া বৃদ্ধ আবাঁর বলিল৮-_
“দুই দুইটা বছর রাইয়তের পেটে ভাত নাই--তোমার নান!
'বাইডে থাকলে আজ তোমার বাড়ী দানছত্তর খুলে রাইয়তের মুখে
ভাত দিয়ে, তবে নিজে খান! মুখে তুলত। আর তুমি? প্রজার
রক্ত শুষে খাচ্ছ, তাদের মুখের পানেও ফিরে চাইছ না! আর, যাদের
দোস্তির দৌলতে তোম[র নানা এই বাঁজত্বি গড়ে তুলেছিল, তুমি
'ছুঃসময়ে তাদের মান ইজ্জতের ও একটু খাতির কচ্ছ না 1”
বলিতে বলিতে বৃদ্ধ আবার আবেগরুদ্ধ কে নির্বাক হইল।
বাপার দেখিয়! অনন্তদেব শ্যাঁটোর কাণে কাণে বলিল ণ্গতিক
খারাপ, একটু চেপেই যান ।”
কিন্তু শ্তাটোর মাথায় তখন শয়তানের বিশ্ব বিনাপিনী বুদ্ধি
'সুদটভাবে চাপিয়৷ বসিয়াছিল। অনস্তের স্পরামর্শে কর্ণপাত করিবার
স্পৃহা তাহার হইল না।
8৩,
জনৈক হিন্ুস্থানী বরকন্দাজকে শ্ঠাটো৷ অস্লীল :উগ্র তাঁষায়
| সমসেরের ধৃষ্টতার জন্ত তাহাকে কড়া শানন করিতে আদেশ করিল।
অমনি সমবেত জনসঙ্ঘ ঘোরতর উত্তেজিত হইয়। গাত্রোথান
করিল। সমসেরের অনুরোধে সকলে নীরবে প্রাঙ্গণে তাহার
আদেশের প্রতীক্ষায় দরাড়ীইল। সমসের আবার শ্ঠাটোকে লক্ষ্য
করিয়া বলিল,_-
“শোন সাহেব! মনে করোনা আমরা চীষ 'বলে কিছুই
বুঝি না। এ বুড়ো বাঁদর দেওয়ান যে ফর্দ শুনালে- তাতে কোরে '
করিমের কাছে তোমার ভ্াযা পানা মাত্র সাড়ে পাচ টাকা,
তা তুমি পেয়েছ ।
“বার হাত লাউ, তার তের হাত বাঁচি সে আমরা বুঝতে পারি।
তবে, তাও এদিন দিয়ে এসেছি; কেন জান? ফেন লা
আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। আর, তোমরা ত আমাদের সতি
দরজার কুত্তা_আমর! ন! দিলে তোমরা খ|বে কি? তাই।
কিন্ত আর না । যারা খাজনার উপর এক ক্রান্তি আর বাড়তি
জম আমর! দিচ্ছি না। আজ থেকে আমার গায়ের খাঁজনা,
সামার একলার হাত দিয়ে তুমি ঘরে বসে পাবে। এমন সক
গীরে এক একজন মোড়ল আমিই ঠিক কোরে দেব। আজ থেকে
আর কেউ তোমার ডাকে তোমার কাছারতে আসবে না জেন!
বান রেোকশোদ্ |”
“বলিতে বলিতে সমনের প্রাঙ্গণে নামিয়। ধাড়াইল। সকলে
সমবেতকঠে জয়ধ্বনি করিয়। শ্ঠ/টোর বাটা অতিক্রম করিয়! চলিল।
৪88
পী-জ
যাইতে যাইতে ক্ষোভে দ্বণায়--কর্কশ কে বুদ্ধ সমসের সকলকে
বলিতে লাগিল,__
“তখন বলেছিলেম না, যে এই হারামখোর। বেইমানের
কাছে দরিয়প পাবি নি? তবু বড় জাক করে এসেছিলি, দশ
বৎসর পর এই বুড়োকেও টেনে এনেছিলি। এখন গ্াখ জমিদার
তোঁদের কে ! জমিদার আঁর মহাজনকে গতরের সমস্ত রক্ত ঢেলে
দিয়েছিলি। চশমখোরের জাতের চক্ষে পরদা তাইতেই আরে!
বেশী পাতলা কোরে দির়েছিস।
“গতরভাঙ্গ। শ্রম ক'রে ফশল পয়দ। কচ্ছিদ তোরা- রর বৃষ্টতে
তেতে ভিজে, পাথর মাটিতে সোঁণ! পয়দা কচ্ছিন তোরা! আর
তোদেরই পয়সায় লবাবী কোরে জানোয়াররা আবার তোদেরই
রোদে খাড়া কোরে রাখছে; নেংটো করে বেত মারছে, সুতো
মারছে। তবু মুখ্যু তোরা-_-পাঁচ টাকা খাজনা আর পয়ত্রিশ টাকা!
টেক্স দিয়ে রাজ সম্মানে সেলাম ঠকছিস-_এই হুদে রাজার পাকের
তলায় !” | |
সমসের এই প্রকার বনু উত্তেজনাপূর্ণ জালাময়ী ভাষায় সকলকে
গ্রবুন্ধ করিয়া তুলিল। সকলের. মুখে স্থির গ্রতিজ্ঞর ছায়ীপাত
হইল। সমসেরের উপদেশ অনুযায়ী কার্ধঢ করিতে সেইদিন
সেইখানে সকলে “হজরতের' নামে শপথ করিল ।
এদিকে প্রজী বর্ণ দল ঝাধিয়া সুপর্ক কদলী ফল প্রদর্শনাস্তর চলিয়!
গেলে, শুাটো৷ আহত গর্ববাভিমানের দুঃসহ গাত্রগ্রদাহ-পাঁইক
বরকন্দাজদিগকে তিরঙ্কার করিঘ়। শ্রীতল করিবার প্রয়াম কৰিল।
৪৫
: ঞ, একে একে সমন্ত দেশীয় পাইকগণ লাঠি শোটা; বিয়া
তদগডে করসে ইন! দিয় গেল।
বহু প্রাচীন পাইঞ্জ অমীর সরদার সকলের মুখপাত্র বর দা
সময় বলিয়া গেল,--
“শোন সাহেব! ভিন পুরুষ তোমার নিমক ছি বে ্
দেখে শুনেও সব সয়ে ছিলেম। আমাদের ছঃখ তুমি বুঝবে না।
নৈলে, তোমার হুকুমে আমারই জাতভাই-_সুখ ছুঃখের সহায় যারা,
তাদের ভিটা মাঠি উচ্ছন্ন কোরেছি! শেল কুকুরের মত তুমি চিরদিন
ভ্তবু ধেন্ন/য় আমাদের একট! মিঠা কথ|ও কও নাই। আর নাঁ_
আজ এই শেষ কোরে চল্লেম। বোদা খেতে দেন খাব, নয়ত না
খেয়ে মরব! কিন্তু তবু তোমার হাঁরামীর আর কোন সহীত্বতা,
করব না- বাস্।”
এত অপমান স্তাটো৷ তাহার জমিদারী জীবনে আর কখনও হয়
নাই। সে বুঝিল না ধে সময় বলিয়৷ বড় একট! নিত্য সত্য অমোঘ,
বস্ত নিয়মিতভাবে মানুষেরংপৃষ্ঠলগ্ন হইয়া থাকে ।
সুসময়ে কটু তিক্ত ভাষাও অমৃত ফল উৎপাঁদন করে। কিন্তু
হুঃদময়প্রত্যুষে সকলই বিপরীত ভাব ধারণ করিয়! বসে।
তাহার শুভগ্রহের স্থিতিকাল শেষ হইয়াছে; আজ হইতে
বিষম কুগ্রহ তাহার স্বন্ধলগ্ন হইল। এখনও বুঝিয়! চলিলে তাহার
'অমঙ্গলের মাত্র! লাঘব হইতে পারিত। কিন্তু গ্রহকলে দাস্তিক যুবক
দি গ্রতিহিংসার তৃষ্ণায় চেতন! হাঁরাইয়! ফেলিল।
তাহার কল্পিত গুভানুধ্যায়ী-_-কৈতববাদী, স্বার্থপর, চাটুকার
৪৬
গশন্তলী-ভী।
আমলাবর্গও সময় বুঝিয়! নানাপ্রকার উ্তেনায |ক্যে তাহাকে
বিশেষরূপে উষ্ণ করিয়৷ তুলিল।
অনন্তদেব বলিল “ছোট লোকের জৌট আমি অনেক দেখেছি !
দেখুন না তিন দিনেআ'মি সব বেটাঁকে লম্বা কোরে দোব-_ তবেই
আমার মাম অনন্ত শর্মা ৮
ভন্তান্ত আমল! কন্মচারীবর্গ গ্রীঝ বাঁকাইয়। তাহাতে সাম
দিল। |
নবগোপাল বলিল,__“কিসের ভাঁবনা তোমার বোনাই সাহেব?
জেলার জজ মাজিষ্টর ত তোমার হাতধরা । দিদিকে নিয়ে সদরে
গিয়ে তুমি_ একটু ম্বদেশীগন্ধ এর মধ্যে মাখিয়ে, তাঁদের চাঙ্গা
কোরে তোল, আর ভেটু চালাতে থাক! আমর! রইলেম-_ এই
সি-্মই-ডি, আর থানার তাদের হাত কোরে কেমন কুরুক্ষেত্র__
লঙ্কাকাও বাঁধিয়ে দি দেখ না। চাষার আবার ধর্মঘট ! এই
একে দিয়ে ওকে, তাকে দিয়ে তোকে-_-করে, কেমন ঘরে ঘরে
বিভীষণের স্থটি করে তুলি চেয়ে দেখন! ।*
অর্ধ আশ্বস্ত, অর্ধ ভাবনাবিব্রত হাট! অন্যমনস্ক ভাবে নীরবে
গাত্রোথান করিল। বিষম অস্তরজাল! জুড়াইতে সে অহোরাত্র রক্তিম
তরল মাধবী, কাতম্ব, গৌরী প্রত্বতির নৃতন বিলাতি সংস্করণ সুধার,
বস্তায় ভূবিয়। রহিল।
হাওয়ার সঙ্গে মিশিয়। কথ।টা তড়িৎ বেগে গ্রাম হইতে গ্রামাস্তরে
পৌঁছিল। শ্তাটোর অত্যাচারে জর্জরীভূত গ্রজাসজ্ঘ অনেক দিন
ধরিয়া গ্রাণে প্রাণে দারুণ উত্তেজনার চাপা অনলে দগ্ধ হইতেছিল।
৪৭
লীন
অকস্মাৎ কাধ্যকারণের বাতস্পর্শে বিরাট জনসঙ্ঘ এক সঙ্গে
উত্তেজিত ভাবে জমিদার বাঁড়ী অভিমুখে ধাবিত হইল।
হ্/টোর বাড়ীর অদূরে যুক্ত প্রান্তরে সহস্র সহস্র তদ্দ/ভ্দ নিরীহ
গ্রামাপ্রজাবর্গ সন্সিলিত হইয়া তাহাদিগের কর্তব্য নির্ধারণে রত
হইল। |
দারুণ গ্রীষ্মের মার্ভগ-তাপ-তপ্ত মস্তি এবং বিষম অপমান, লাঞ্চনা-
জনিত অন্তর জ।লার একত্র মিলনে সকলের মানসিক অবস্থা তখন তপ্ত
বাক্দপূর্ণ অ:তসথা নার ভাঁব ধারণ করিয়াছিল । সামান্য একটু ক্ষুলিঙ্গ-
স্পর্শে ই তাহাতে বিশ্ব বিদহাম'ন মহ! অনলের স্থটি হইতে পারিত।
অতিশয় বুদ্ধি অনস্তদেব তখন সেই পথে গৃহে যাইতেছিল।
তাহার ধারগা--শ্'টোর উপর প্রজাদের যতই ক্রোধের কারণ
থাকুক ন। কেন, তাঁহার ব্যবহারে সকলেই তাহার প্রতি সবিশেষ
অন্ুরক্ত |
এমনি এক একটা ভুল ধারণায় অতি বড় কুটবুদ্ধি ধুরন্ধরগণ ও
মহা বিপদে পতিত হয়। অথবা তাহার গ্রহের আকর্ষণও হয়ত
এবনিধ স্বখ|দ শহুট গর্ভ স্থজনের জন্য দারী হইতে পারে।
অনন্ত ভাবিল নর্থ নিরক্ষর সরলপ্রাণ গ্রাম্য কৃষকদের হুইটা
গুরুব্রিয়ন।র ধর্ম পদেশ গ্রদানে যদি বশীভূত কর! যায়, তাহ! হইলে
ঠ্রটোর কাছে তাহার পদমর্যাদা অক্ষুণ্ন হইয়। রহিবে। একত্রে
এতগুলি লোককে আর পাওয়া যাইবে না।” তাই উদ্মীলিতপক্ষ
পতঙ্গ বিশেষের মত গ্রহ-বিতাড়িত, সুলভ যশঃলিগ্দ, বৃদ্ধ, ধাঁরে ধীরে
সেই জনসদুদধে ঝম্প প্রদান করিন।
৪৮;
অনৃষ্টের ফল খণ্ডান যায় না। অসাম অনন্ত জনতরঙ্গের মধ্যবর্তী
হইয়াই অনন্তদেব স্বীয়ভ্রম বুঝিতে পারিল। কিন্তু তখন আর তাহার
ফিরিবার পথ ছিলন| | ক্ষণেক ভাবিয়! বৃদ্ধ মিলিত প্রজামগ্ডুলীকে ছুই
একটা প্রবোধবাক্য বলিবার জন্য প্রস্তুত হইয়া দীড়াইল।
প্রকৃতপক্ষে ভ্রান্ত, অন্ধ, “অজ্ঞ যাহারা--শক্তিমদিরার নেশায়
তাহার! মনে করে যে, নিরক্ষর কৃবকগণের হিতাহিত বিচার শক্তি
নাই।
কিন্ত কাধ্যতঃ যাহারা এই অক্ষর-পরিচ্যহীন সং চিন্তারত বিরাট
প্রজাশক্তির সঙ্গে দ্ ঘনিষটভাবে মিলিত হইবার সুযোগ পাইয়াছে,
তাহাঁরাই স্বীকার করিতে বাধ্য যে, ইহাদের সাধারণ জ্ঞান অনেক
পু'বীগত ব্দাভিমানীর. অপেক্ষাই গ্রথর,।
প্রজারা তালমতই জানিত যে, বৃদ্ধ অনন্তই শ্তাটোর প্রধান কুগ্রহ |
ইহারা প্রাণে প্রাণে তাই অনন্তদেবকে অধিকতর ্বণার চক্ষেই
দেখিত। ফলতঃ, তাহাকে দেখিয়া তাহারা বিষম উত্তেজিত হইয়া
উঠিল।
ভাগ্যঞ্রমে দেশের প্রায় সকলেই আজি এক বিরাট পুরুষের
অহিংসা-মন্ত্রে দীক্ষিত, তাই সমসেরপপ্রমুখ বৃদ্ধগণ অল্পকথায় অনন্তের
অন্তহীন অবিষৃষ্য মূর্খতার কথা বুঝাইয়। দিয়! তাহাকে তৎক্ষণাৎ
সেখান হইতে নিরুপদ্রবে বিদায় করিয়া দিল।
তথাপি তরুণের দল সকল সময়, সকল দেশেই যেমন হয়, তেমনি
কতিপয় যুবক নিরভীজ সরন অহিংসভাবে নুদীরঘ স্মরণ'থ, ছই চারিটি
চোরা ঘুষি, কিল, থাপড় গ্রদানে আপ্যায়িত করিয়৷ অনস্তদেবের
8৯
পল্লী-ী
বার্ঘক্য-জী পঞ্জরাস্থিতে, বেনার কারণ জন্মাইয়৷ দিতে ইতস্ততঃ
করিল না৷ |
সমসের প্রভৃতি নেতৃবর্গ সংবাদ পাইবার পূর্বেই বেদনাকাতর,
ততোধিক আতঙ্ক-বিহ্বল, প্রায় লুগুচৈতন্- অনন্ত শশী ভূমিগাত্র
আশ্রয় করিয়াছিলেন। যাহা হউক,*'অচিনে তিনি পাড়ার জনকয়েক
কম্মীর স্কন্ধে আরোহণ করিয়া স্বগৃহে খট্াঙ্গতলে শয্যায়
করিলেন।
_. বুদ্ধের করুণ, আব, আর্তনাদের সঙ্গে গৃহ্ণীয় গগন-বিদারি ক্রন্দন-
রোল এবং আবণপ্লাবদাক্র একত্র হইয়া অনন্তের শুভ অনন্তশধ্যার
কথা গ্রামমর ছড়াহ্য়। দিল।
( ডে )
সভ্যতাম দেবার ৬কাশীধাম যাত্রার পর হইতে উত্তরোত্তর একটা
ঘন মলিনতাঁর ছায়! পড়িয়া! অন্ুশীলার প্রাণের স্বস্তি সম্পূর্ণ লুপ্ত
হইয়াছে। শৈশব হইতে মাতুলাননে গ্রতিপালিতা, পিতৃহীনা৷ অন্ুশীলা
মাতুলানীর লোকদেখান আদর যত্বের মধ্যে এতটুকু মাতৃত্বের দিদ্ধত৷
খুজিয়া পায় নাই।
কৈশোরে বিরাট আশা, আশঙ্কা লইয়া অনুপীলা যখন গ্রথম
জগদিন্দুর গৃতে আসিল, সেই সময় সে জীবনের প্রথম সত্যভামার,
৫৬
পলী-ওী
নিভাজ প্রাণের কোমল, কর্কশ, নিঃনক্কোচ ব্যবহারের মধ্যেও সত্য
মাতৃভাবের পরিচয় পাইয়াছিল।
সত্যভামা কখনও প্রাণের কথ! চাপিয়া রাখিতে পাঁরিতেন প৷।
একটুকু অন্যায় করিলে তাহার জন্ত তিনি অন্ুশীলাকে দশগুণ তিরস্কার
করিতে দ্বিধা বৌধ করিতেন না । পক্ষান্তরে সামান্ত প্রশংসার কীর্য্যেও
তিনি বধূর অতিরিক্ত গুণগান করিতেন। এই তিরস্কার প্রশংসা
উভয়ের ভিতরই এমন একট। আত্তরিকতা৷ ছিল, যাহা কেবল নিঃস্বার্থ
মাতৃত্বের মধ্যেই পাওয়া যায়।
এই ভাবে অন্ুশীল৷ অকৃত্রিম মাতৃত্বের অধিকারে দীর্বকাঁল বাস
করিয়! সংসারের প্রত্যেক খু'টি নাঁটি ব্যাপারেই সত্যভামার একাস্তি
মুখাপেক্ষী হইয়া পড়িয়াছে। তাই আজি সত্যভ!মার অনুপস্থিতিতে
অন্থুশীলা বড়ই অসহায় হয়! পড়িয়াছে।
সত্যভামা সাধারণ দশজনের মতই হঙ্বীর্ণতামূলক শিক্ষা এবং
সই্কাতরর-বুশ্বহ্ধিনী । কিন্তু তাহার প্রাণের শুভ্রতা_ উন্মুক্ত হবদয়ের
অবাধ স্বাধীনতা, আঁতি অল্পলোকের মধ্য দেখিতে পাওয়া যাঁয়।
তাই অনুশীল। সত্যভামার প্রত্যেক কার্যের মধ্যেই অপূর্ব
মাতৃত্বের স্পর্শ অনুভব করিয়াছে । অন্ুশীলা কোনও দিন সত্যভামার
তিরস্কার, বা কঠোরত৷ কিছুই গায়ে মাখিয়! লয় নাই। আজি অনুশীল৷
সত্যভামার অনর্শনে-_বিশেষত৮ তাহার সংসার ত্যাগের মূলীভৃত
কাধ্যকারণ ম্মরণ করিয়া অত্যন্ত ঘরিয়মাণ হইয়া পড়িয়াছে। ..
সংসারে কোনই কাজ নাই। থাঁকিলে হয়ত কাজের ব্যস্ততার
মধ্যে অন্ুশীল! বিশ্বৃতির শাস্তি লাভ করিতে পাঁরিত। হুই দিন
৫১
পলী-ী।
ভাবিয়া তাই আজি অন্ুশীল৷ 'অনরের ক্ষুদ্র পরিবারের ফাব্ঠকীয়
দ্রব্যাদি দেবভাগ্ডার হইতে আনাইয়া৷ অতি পরা কশ্োতে গ
ঢালিয়৷ দিয়াছে ।
ভোর না হইতে গাত্রোখান করিয়া দয়িতার সঙ্গে অনুশীল।
নানাবিধ ফুল তুলিয়৷ আনিল। মাতা-কন্তায় গ্রতিত্বন্বিতা করিয়া মালা
গাখিয়৷ এক প্রান্ত ফুল ঠাকুর বাড়ী পাঠাইয়া দিল। স্নানাদ্দি সমাপন
করিয়! বাকি ফুলদুর্বাদি সত্যতামার পূজার ঘরে রীতিমত সাজাইয়া
পুজার সর্ববিধ আয়োজনাস্তে ধূপ, ধূনা, নৈবেগ্ধ পূজার আসন নিম্নে
স্থাপন করিল ।
অনেকক্ষণ ধরিয়া! অন্ুশীলা সেই গৃহে গীতা, চণ্তী প্রভৃতি পাঠি
করিল। তাহার পর ভক্তিভরে মাতার উদ্দেশে প্রণাম কবিয়! পুজার
ঘরের ছুয়'র বন্ধ করিয়া বাহিরে আসিল । .
এই ভাবে একাগ্রনিষ্ঠার সহিত সত্যতামার পুজার গৃহে অনুশীলা
প্রতঃকাল হইতে মধ্যরজনী পর্যন্ত বথারীতি পুজা, 'আহ্িক, ভোগ,
আরতি, পাঠ ও ধ্যানধারণ।য় অতিবাহিত করিতে লাগিল।
বণাকালে পাড়ার 'অনেক মহিলাধৃন্দ আসিয়৷ অনুশীলার সঙ্গে
মিলিত হইল। ক্রমে সেই পবিব্র মাতৃ-পূজামন্দির পল্লী-মহিলাগণের
কানে ধর্মচষ্চ, নীতিকথা এবং শিল্পপিক্ষার একটি কেন্দ্র হইয়া! উঠিল।
প্রাতাক্কত্য সমাপন করিয়া সামান্য জলযোগাস্তে জগদিন্দু বাহির
হইনার উদ্ভোগ করিতেছে, এমন সময দয়িতার হাত ধরিয়া শ্তামল
সেখানে উপস্থিত হইল।
কয়েকদিন মানসিক কুয়াসাচ্ছ্ন থাকিয়া আজ দয়িতা “ঠাকুমার”
৫
গরনী-ভী
পূজা! করিয়া! প্রফুল্ল হইয়াছে । দিবাফুলের মাল্যালঙ্কার পরিয়া,
“ঠাকুমার” আশিস নিম্মাল্য মাথায় ধারণ করিয়া! বালিকা
হ্ামলদের বাড়ী গিয়াছিল। হষ্টচিতে শ্যামল তাহার সহিত খেলা
করিতে ঠাকুর বাড়ী আসিয়াছে । . জগদিন্দুর প্রাণ এই দিব্যদর্শন
যুগ্ম শিশু হৃদয়ের অবাধ, সরল স্বাধীনতার মাধুর্য ভরিয়। গেল।
স্টামলকে ঘোড়া বানাইয়া, তাহার মুখে রাশ কশির! দিয়_-চাবুক
হাতে ফুলের অগ্মর! দয়িতা তাহাকে তাড়! করিয়৷ চলিয়াছে।
আর গাহিতেছে,--
চল্ চল্ চল্_চল্রে ঘোড়া চল্”_
(দোব ) আস্তীবলে চাঁয়ন| দানা,
বালভী ভর! জল
গ্রকান্ত অন্ুরক্ত ভক্ত শ্তামল দয়িতাঁর চাঁবুকের ভয়ে ছুটিয়া
চলিয়াছে। ছুই জনের হাসির তরঙ্গে দেবমন্দির-প্রাঙ্গণ মুখরিত
হইয়! উঠিয়াছে। |
জগদিন্দু ভাবিল,--“হীয় মূর্খ মানুষ! এমন অনাবিল আনন্দের
হিল্লোলে ক্ষুা্দ জীবনতরণী ন! ভাসাইয়া, তোমরা কেন পরস্পর কলহ
বিবাদে অশাস্তির সমুদ্রে ডুবিয়৷ মর !
অন্ুশীল! কার্য্যব্পদেশে সেই পথে যাইতেছিল__-জগদিন্দুর প্রফুরর
মুখের দিকে চাহিয়া সে তাহার সহিত মিলিত হইল।
“আবার, অন্দরে সংসার পতনের আড়ম্বর চলছে শুনলেম |”
বলিয়। জগদিন্দু অনুশীলার চিবুক স্পর্শ করিলেন ।
“মা গিয়ে অবধি আর কিছুই ভাল লাগছে না । তাই আবার
৫৩
পল্লী-ী।
একটা খেলাঘর পেতে দেখছি, যদি ভুলে থাকতে পারি রি অনলা
অন্ঠামনস্কে দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগ করিল।
গর্ধের স্বরে জগদিন্দু একটু আগ্রহের স্গে জিজ্ঞাস! টির
“তা বেশ। শুন্ছি পাঁড়ীর আরও অনেকে তোমার খেলায় যোগ
দিতে আসেন ?৮
একথার উত্তর দিতে অনুণীলা প্রথমে একটু সক্কোচ বোধ করিল।
তাহার পর মৃছু মধুর সঙ্গীত বঙ্কারে বলিল,
“জানিনা কেন আসে-ছুই চাঁরিজন নয়, চার পাঁচ গ্রামের
মেয়েরা প্রার নিতাই আনসে। মায়ের পূজার ঘরে আমরা
আলোচনা, পাঠ, প্রার্না এই সব করি। আবার সাত আট
জনে জুটিরা সুতাকাটা, জাম! সেলাই, ছবি আঁকা আরও নানা
শিল্প চর্চার ভার নিরাছে। আমাদের “কণ্ডে এরই মধ্যে অনেক
টাকা উঠেছে । একবার ও ঘরটা দেখে এসো গিয়ে |”
বলিতে বলিতে অনশন অবনত মন্তকে বাম হাতের আঙ্গুলের
নখগুলি ভান ভাত দিয়ে খু'টিতে লাগিল ।
জগদিন্দু সকল কথাই জানিত। সে গোপনে তাহার মায়ের
ধরটি দেখিয়াও আসিরাছে। তাহার পুস্তকগুলি এতদিন পোকায়
কাটিতেছিল ! কিন্তু সম্প্রতি সেই সকল বইগুলি আবার মালক্ীদের
একাগ্র কর্মকুশলতরি ফলে চকৃচকে ঝকঝকে ভাবে গোছান
হইয়া আলমারীর শোঁভ! বাড়াইয়! তুলিয়াছে-_তাহাও সে লক্ষ্য
করিয়াছে। |
শতাধিক চরকা, ্ইখানা তাত আরও কত বস্তুতে অন্দরের
৫৪8
শললী-জী
আঙ্গিণা ভরিয়া! গিয়াছে তাহ! দেখি! গর্ধ্বে আনন্দে তরুণ কর্মবীরের
প্রাণ পুর্ণ হইয়া উঠিয়াছে।
তাই সে বলিল-_“সবই দেখেছি অন্থু__খুব একটা গর্বও বোধ
কচ্ছি, কিন্তু বড় হূর্ধল আমরা, তাই ভেবে এক এক সমর মনে
হুর্বলতাও এসে পড়ে 1৮ |
এবার অনুণীলার মুখ খুলিল। দৃঢ় বিখ্াসজনিত স্থির গম্ভীর
ভাবে মে কহিল, “কর্মেই অধিকার আমাদের ফলাফলে কারু ত
হাত নেই।”
এমন সময় মসের ধীরে ধীরে সেখানে উপস্থিত হইয়! আস্ভৃমি-
প্রণত শেলামান্তে বলিল-_“মা একটু ভিতরে যান। অনেকগুলি
গায়ের লোক বাবুর সঙ্গে দেখ! কর্তে এসেছে ।”
স্বমুশীলা ঘোমটা টানির অন্দরে প্রস্থান করিল ।
ক্ষণপরে পঙ্গপালের মত সহআঁধিক গ্রাম্য হিন্দুমুললমান-_
গৃহস্থ চাঁধীতে নাটমন্দির ভরিয়া গেল। সকলে একে একে
যথাযোগা সেলাম, অভিবাদনান্তে জগস্জিন্দুর সম্মুখে এক হইতে
দশ টাঁকা পর্যান্ত “নজর প্রদান করিয়া মুক্ত ভূমিগাত্রে বসিয়া
পড়িল।
বিস্মিত স্তম্ভিত জগদিন্দু বিহ্বলভাবে দড়াইয়৷ রহিল-_
হর্যোৎফুল্ল শ্তামল ও দয়িতা আসিয়া তাহার ছুই হাত ধরিয়া দীড়াইল।
বিদ্ময়ের প্রথম চমক ভাঙ্গিলে জগদিন্দু বলিল৮_-“এসব কি
সমসের ?” রা |
- একি তা জানি না কর্তা। সাত পুরুষ তোমাকে আজকের
৫৫ .
দিনে নজর দিতে এসেছি, তাই আজ ও দিচ্ছি” ভক্তি গদগদ-
স্বরে এই কয়টি কথ৷ বলিয়৷ সমসের নীরব হইল।
জগদিন্দুর মনে পড়িল সেই দিন রথ-দ্বিতীয়! ; পুরুষাহুক্রমিক এই
স্তভদিনে তাহাদের “পুণ্যাহ” হিরন দুই চক্ষু জলে ভাসাইয়৷
দিয়া জগত বলিল,
“না, সমসের, আমার জমিদারীর বাঁধন ত ঘুচে গেছে । আজ
আমিও তোমাদেরই মত দীন প্রজা! । এ আমার প্রাপ্য নয়-_
তোলনাথই এখন ষোল আনা জমিদারীর মালিক-_এই নজর তারই
প্রাপ্য ।” ব্যগ্র সরলতার ভাব স্পষ্ট তাহার মুখে ফুটিয় উঠিল।
সকলের মুখপাত্র রূপে সমসের দীড়াইল। স্থির গম্ভীর : উচ্চকণে
সে বলিতে লাগিল»
“তবে শোন কর্তাবাবু। প্রজার কাছে নজরের দাবী আইন-
কান্ুনে জমিদারকে দেয় নাই। সেই দাবী দিয়েছে যে, আইন-
কান্ুনের ভাষায় তার কোন নাম তৈরী হয় না। জমিদার কে?
চাষাই জমীদার--কেনন!* তারাই জমির প্রকৃত ভোগ-দখলের
অধিকারী । |
“জমীদার চাষীর প্রতিনিধি হয়ে রাইয়তের চাদ! দেশের খাজাঞ্চির
হাতে পৌছে দেয়-_-আমরা মূর্থ হলেও এই সত্য কথাটা বুঝি।
তবু নজর, বাজে জমা, আমর! জমিদারকে দিই-_কেন দিই
আন? প্রাণের টানে দিই। জমিদার আমাদের মুখচেয়ে থাকে,
আমাদের হয়ে দশটা তাল. কাজ করে, ছুর্ভিক্ষে অন্ন, দাঁনছত্র
খুলে প্রজার প্রাণ বাচায় ; রাস্তাঘাট, নদীনালা পুকুরঘাঁট, হাটবাজার
৫৬
প্ী-জী
সব দিয়ে প্রজার অভাব অভিযোগ দূর করে-_তাই দিই। আমর
জানি, আমাদের দিয়ে যখন তার টাঁট্ বজায় রাঁখতে হয়, তাতে
আমাদেরই মান, তাই দিই।
সেই প্রাণের টানেই তোমাকে আজ নজর দিতে এসেছি ।
£খ কি ছোট বাবু? তোমার জমিদারী গেছে কে বলে? লক্ষ
রাইয়তের কল্জের উপর তোমার জমিদারী! লক্ষ প্রজা যখন
বেঁচে রয়েছে, তখন তোমার জমিদারীও আছে। আর এই টাকা
কি তোমাকে দিচ্ছি? না ছোট বাবু! সকলের প্রতিভূ হয়ে
তুমি এই পরগণার প্রজার সুখ ছুঃখ, অত|ব-অভিযোগ দেখবে শুনবে--
সে'ত বিন! খরচে হবে না, তাই তোমার জিন্বায় আমাদের তহবিল
রইল ”
ব্দ্ধের সমস্ত হৃদয় তখন দেশাআবোধের মহান পবিভ্রতীয়,
ভরিয়া গিয়াছে । সেই ভাববন্তার আবেগে তাহার ক্ঠরোধহইল।
ক্ষণক।লের জন্য একট। বিরাট নিম্তব্ধতায় সেই জনসমুদ্র সনাচ্ছন্
হইয়া রহিল। বিষাদে, গর্বে, দৈন্তে একটা পবিত্র বিহ্বলতার
আবেশে জগদিন্দও ক্গণকাঁল কোন কথাই কহিতে পারিল না ।
ক্রমে আঁত্সংবত হ্ইয়। ধীরে ধীরে সে বলিল, .
“আমি বুঝতে পাচ্ছি না, সমসের ! আমায় বুঝিয়ে বল, কি
মহান উদ্দেস্টে তোমরা সমবেত জনমণ্ডলী আজি আমায় এই সম্মান
দান কচ্ছ ৮
সমসের গাব বলিল, --“এর চেয়ে কি আর বুঝিয়ে বলব
বাবু? আমর! যে চাঁষা, অত যদি পার্তেম তা হ'লে ত আর কোন
৫৭
শলী-
দুঃখই থাকতে! ন। ছোট বাবু। আমাদের কথ! হচ্ছে এই, যে খাজানা
আইনত যা” আমাদের দেবার তা” পাঁবে ভোলানাথ বাবু-..আইনের
খাতিরে । আর বাজেজমা--যা আমরা আমাদের সুখ, হুঃখ, মান
অপমান, স্থবিধা, অসুবিধার জন্য দিই, তা” পাবে সে, আমরা সনন্ত
প্রজা এক বাক্যে যাকে তার যোগ্য বলে মেনে নেব।
“আপাততঃ তোমাকে সে ভার নিতে হবে; কেননা, তোমার
বাপ দাদ। সকলেই তা নিয়েছে। ইংরাজের আইন মাথায় থাকুক,
সেই আইন তার দেংকানদারীর জন্তে তৈরী-_তাতেই খাটে।
তুমি অংখাঁদের এই পরগণার প্রজার জগ্ঘ এমন আইনকা
গড়ে দা৪ যাতে কোরে দেশে এক বছর অজন্মা হ'লে রাইয়ত
ভাতের অভাবে মরে না যার। যাতে এক এ্রাম থেকে অন্ত গ্রামে
বার মাস চলাফেরা কর! যার। খাতে কোরে, পুকুরের তরলশ্পাক
খেয়ে বিস্ছচিকার গারের অর্দেক লোক অকালে খরে লা যায়।
ঘাতে জমিদার মলাজনের পাইক পিয়।দার। গ্রজার ঘরবাড়ী আর না
উচ্ছন্ন করতে পান্ধে ) যাতে “মূর্খ” বলে আমাদের কলঙ্ক ঘুঁচে যায়”
আবার দমসের নীরব হইল ।
ভগদিন্দু আবার উদ্্বল আলোক দেখিতে পাইল। কিন্তু তথনও
তাহার ছিপ! সম্পূর্ণ দূর হয় নাই, সে বলিল,--“শুনেছি তোমরা
ভেোলি।নাথের বিরুদ্ধে বিদ্বোভ করেছ ?”
জল? গম্ভীর তারস্বরে সমসের বলিনু,প্রাজার বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ
হয়-_ভোলানীথের বিরদ্ধে বিদ্রোহ কি করে হবে? সে সরকারের
তহশীলদার, সরকারী খাঁজান প্রাপ্যগণ্ডজা আমর! তাকে দিব।
৫৮
পশলী-ী
বাজে জমার দাবী তার নেই, আপাতিতঃ বাজে জম! আঁমরা তোমাকে
দিব, কেন না তুমিই আমাদের “প্রধান । ভুমি বৈরাগী, তুমি ইচ্ছা
কোরে আমাদের সমান অবস্থ। বরণ করে নিয়েছ; তুমিই আমাদের
সুখে রাখতে পারবে |»
সকল কথা পরিস্ফুট হইয়া গেল। জগদিন্দু বুঝিল, তাহার
সামান্য করদিনের পরিশ্রম বিফল হয় নাই। প্রজাদিগের উদদে,
তাঁহার নেতৃত্বে সেই প্রদেনে একটা আদর্শ পল্লীসজ্ঘ গড়িয়া তোল,
যহাতে পরগণার প্রতোক প্রজার অনসমস্তার সমাধান হয়-_স্বাস্থা-
বটিত, 'অর্থ-বঁটিত, কুবি, বাণিজ্য বটিত সর্বপ্রকার উন্নতি বিধানের
ব্যবস্থা হয়, ঝগড়। কলহ মনোনালিন্ত এবং সাম।জিক সন্বীর্ণতা যাহাতে
বিদৃরিত ইরর। নরল নিপিষ্ নিষ্পৃহভাবে সে বলিল,_-
“তা হলে আমি কি এই বুঝবো যে এই টাঁকার উপর ভিন্তি
কোঁবে এই পরগণাতে একট। পঞ্জী-দাদন-ন্ত্র গড়ে তুলতে তোমরা
'আমাকে আহ্বান কচ্ছ ?”
নকলে মমস্বরে বলিল “হা”
“বেশ, আমি মাথা পেতে তোম।দের আশীর্বাদ নিমন্ত্রণ গ্রহণ
কর্লেম। একটা কথা মনে রেখ আমি জমীদার নই-_দীন প্রজা-_
তোমাদের ভ্রাতৃস্থানীয়। কাঁজেই আমার ক্রটি ব্চিতি হবে,
ত। তোমর। শুধরে নিও।” বলিতে বলিতে বিমল আনন্দে জগদিন্দুর
গণ্ড বহিয়া অশ্রবিদু গড়াইয়! পড়িতে লাগিল।
সহজেই প্রত্যেক পল্লীতে এক একজন নেতার অধীনে এক একটি
সজ্ঘ গঠিত হইল। সকল পল্লীর কেন্দ্রবূপে জগঘিন্দুর নেতৃত্বে এক
.৫৯
পঙী-ওী
মহাসজ্ব স্থাপিত হইল। অন্তান্ত নিয়ম প্রণালী প্রণম্নদের ভার
জগদিন্দুর উপর ন্যস্ত করিয়। প্রফুল্লচিত্তে সকলে গ্রস্থান। করিল।
' যাইবার সময় সমসের আর্র কঠে বলিল,” |
“শোন ছেটিবাবু! আমর! ছোটলোক, বড় গরীব__বন্তায়,
বিস্চিকায়-_নিরক্ষর আমরা বছর বছর হাত পা৷ ছেড়ে মরণের পারে
চলে যাই। বাজ্যশাসকের অত্যাচার, মহাঁজনের উতৎগীড়নে বড়ই
কাতর হ'য়ে পড়েছি আমরা । তুণি আমাদের বাঁচাও---আমাদের :
মানুষ কোরে গড়ে তোল ছোট বাবু”
বলিতে বলিতে বৃদ্ধ, জগদিন্দুর পায়ের তলায় চলিয়া পড়িল।
বিরাট সহানুভূতির ছুঃখে বিগলিত হইয়া জগদিন্দু বৃদ্ধকে বুকে জড়াইয়।
ধরিল, সুমধুর সাস্বনা-বাঁক্যে তাহাকে আশ্বস্ত করিল! জয়ধ্ণি-
সহকারে সকলে একে একে হৃষ্টচিতে গৃছে ফিরিয়া গেল ।
এক প্রান্ত হইতে অমনি ভঙ্গহরি গাহিয়া উঠিল,
“ম। কমনার অটল আসন-_জাছিল কোন্থানে ?--
ধানের ক্ষেতে আমবাগানে পলীকুঞ্জবনে ।”
নাচিতে নাচিতে স্টামল 'ও দতিতা এই মহাসঙ্গীতের প্রাণমাতান
সুরে সমস্ত পল্লী মুখরিত করিয়া তুলিল! অশ্রপ্লাবনে স্নান করিয়
তজহরি উন্মন্ত উল্লাসে জগদিন্দুকে গাঢ় আলিঙ্গণপাশে বদ্ধ করিয়া
ভাবের শোতে ভাঁদিতে লাগিল। হর্ষে, টিপ উর্ধ দৃষ্টিতে
ভগবৎ করুণা ভিক্ষা করিল।
হের হেত র
পললী-জী
(৬)
্াটোর কাছারি বাড়ীতে অনেক দিন আর 'লোৌক সমাগম নাই ।
ছুই চারিজন কর্মরচারিবাতীত অপর সকলেরই জবাৰ হইয়াছে।
যাহারা! আছে, তাহাদেরও কোন কাজকর্ম নাই।
গ্াটোসাহেবও বহুদিন কাছাঁরিতে পদার্প। করেন নাই.
অর্থাভাব জনিত হুশ্চিন্তায তিনি কাতর হইয়া পড়িয়াছেন;
প্রজাদিগের ধর্মঘটও বিপুল বিস্তৃক্তি লাভ করিয়। গ্তাটোর মস্তিফ চঞ্চল
করিয়! তুলিয়াছে। এতদুভয় ছুংখ ভুলিয়া থাকিবার নিমিত্ত সপত্বিক
ঠ্ঠাটো অলক্তক-বরণী সুধাকল্প! স্থরাদেবীর উপাঁসনায় মগ্ন রহিয়াছেন ।
কারি বাড়ীতে কর্ধহীন কর্মচারিবুন্দ নাঁনাগ্রকার গল্প-গুজবে
সময়ের সদ্ব্যবহার করিয়া থাকে । আজ জনতাবিহীন কাঁছারিতে
আড়ম্বরপুর্ণ ফাঁকা আম্ষালনে শ্রীযুত নবগোপাল সমন্বার বেশ
গুলজার করিয়া তুলিয়াছেন।
কথাপ্রসঙ্গে জনৈক কৌত্কপ্রির কর্মচারি ধর্মঘটের কথা পাড়িল।
বীরত্বব্যঞ্ক অর্গ-তঙ্গী সহকারে নবগোপাল সকলকে জাঁনাহয়া
দিলেন যে, তিনি এবং অনন্তদেব ভগবৎ কৃপায় সুস্থ শরীরে বীচিয়া
থ[কিলে “বেটাদের শীঘ্রই বুঝিয়ে দিবেন, যে, কত ধানে কত চাল।”
সকলে স্থুলভে রসিকত। উপভোগ করিবার জন্য বহুবিধ সরসবাক্য
এবং মুখভঙ্গীতে সেই কথার সম্পূর্ণ পৌষকত| কারল।
“তা” আর দেবেন না! 'আপনি হচ্ছেন কিনা গিন্লীমার আপন
৬১
গল্লী-ী
মার পেটের সহোদর, অর্থাৎ কিন! দামোদর, বুকোদর, লক্োদর-_
সর্ববোদরের সেরা পরম পৃজনীয় কুটুঘ মহোদর। এ ক্ষণার ব্চনেই
আছে না।
শ্বশুরের পুত্র দি ভাধ্যার হন ভাই,
তাহাকে লিখিবে পাঠ প্রীঅচ্চতত গৌশাই।”
বলিতে বলিতে জনৈক যুবককন্মচারি সসম্মান গান্তী্যের সহিত
শ্রীযুতের পানে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিল। |
“তা অবিস্তি অর্থাৎ কিনা-দিদি বেঁচে থাকলে আমার ভাবনা
কি?”
বিরাট আত্মপ্রসাদজনিত গর্ধের সহিত নবগোপাল বঙ্গিতে
লাগিলেন।
“বুড়ো! মানুষ দাঁওয়ান মশায়__বেচারাকে একেলা শাবালগ
পেয়ে ন! সেই দিন এই অপমানটা করলে ! আমি হ'লে দেখে নিতেম।
বেটাদের গোটে গোটে চণ্তী-মণ্ডপের ছুয়ারে জবাই করব--তবে ত
প্রাণের জাল জুড়োবে |;
“হক কথা অনুমতি কোরেছেন মামা মশায়। ভাগ্যিস
আপনার শ্রাজঙ্গে কেউ হস্তবন্ষেপ করেনি নৈলে, এতদিনে বিরাটপর্ক
রচে ফেলতেম না!”
“তা” যাইি বল”_-আমার আর সহ হচ্ছে না। বোনাই সাহ্বও
যেমন একদিনের হুমকি দেখেই কিনা একেবারে মুন্ড়ে গেল।
বল্লেম আরে! জনকয়েক দারোয়ান রেখে বেটাদের ঘরে ঘরে আগুগ
জালিয়ে দিই, ত বোনাই সাহেব বুঝলেন না 1" |
৬
পলী-ী
আপশোবে নব-গোপাঁলের আরক্ভিম . মুখমণ্ডল অকন্মাৎ ম্লান ভাব
ধারণ করিল। ৰ ্
এই প্রকাঁর নানাবাক্য গুজবে নববাবু নির্জন কাছারি-গৃহ
মুখরিত করিয়া তুলিয়াছেন, এমন সময় মাধব গোবিন্দ মুধোপাধ্যায়
মহাশয়ের কুলগুরু শ্রীমৎ রবিলোচন ধেঁদাস্তশান্ত্রী মহাশয় এক হাটু
কাঁদা আর গালভরা হাঁসি লইয়! ক্লান্ত অবদন্ন দেহে তথায় প্রবেশ
করিলেন।
বিনা বাক্যব্যয়ে তিনি হস্তস্থিত “নবাব জান” মার্কাক্যান্ভাস
ব্যাগ এবং তৎদহ পষ্টরজ্ভু “বদ্ধ থেলোহুকা, কলকে, গ্রভৃতি
ফরাশের উপর রাখিয়! ছাতার বাটে জড়ান জীর্ণ মলিন গামছাখানি
খুলিয়। গাত্র প্রবাহিত ঘন্ম প্রবাহ মুছিতে মুছিতে শ্ঠাটে। সাহেবের
থাস ব্যুবহারের আরাম চৌকিথান! অধিকার করিয়া বসিলেন।
এবশ্রকার অনধিকার কাধ্যে এবং ব্রাহ্মণ পণ্ডিতজন-স্ুলভ
অপরিমার্জিত স্বাধীন ব্যবহারে নবগোপাল বাবু ভিতরে ভিতরে
একটু উষ্ণ হইয়! উঠিলেন।
ক্ষণপরে নবগোপালকে লক্ষ্য করিয়া শাস্ত্রী মহাশয় বলিলেন,
«একটু তামাকের বন্দোবস্ত করত বাপু ।”
এতগুল নিম্রপদস্থ কর্মচারির সাক্ষাতে স্বঘং ু(টো-গ্তালকের
প্রতি ইত্যাকার হীনকার্যের আদেশে মহিমার্ণৰ মহাশয়ের ধৈরধ্চ্যুতি
ঘটাই স্ব(ভাবিক, তাই তিনি অতান্ত অবজ্ঞ।র স্বরে বলিলেন ।
“কে হে ভুমি জঙ্গলি জানোয়ার | যাকে, তাকে যা” ইচ্ছে তাই
বলছ ?
৬৩
ক পজলী-ী। |
শাস্ত্রী মহাশয় এতৎ প্রদেশের একজন স্থুশিক্ষিত!: অধ্যাপক
কোনও সিদ্ধমহাপুরুষের বংশধর তিনি। বিশেষতঃ স্বীয় কর্তার
আমলে এই পরিবারের উপর তাহার প্রতিপত্তি অনুজ ছিল। হালে
শ্টাটোর ক্কেছাচারহেতু তিনি প্রায় দশ বৎসর এই . বাড়ীতে
পদার্পণ করেন নাই। বল্প্রতি শাস্তিময়ী দেবীর সনির্বন্ধ অনুরোধে
স্বয়ং_শিষ্য পরিবারের মঙ্গল কামনায় শাস্তিম্বন্তয়ণ করিতে সম্মত
হইয়। শিষ্যগৃহে আগমন করিয়াছেন।
অর্ধাচীন নবগোপালের অভদ্দোচিত ' বাক্যে শাস্ত্রীমহাশয়
নিরতিশয় মর্্াহত হইলেন । সাধারণতঃ, শাস্তজ্ঞ ব্রাহ্মণ পণ্ডিতগণ
যেমন হইয়া! থাকেন- শাস্ত্রী মহাঁশয়ও সংসারীর হিসাঁবে তেমনই একটু
বুদ্ধির লোক, তাহার মেজাজটিও অপেক্ষাকৃত অল্পকারণেই
উষ্ণতা! পরিগ্রহ করিয়৷ থাকে । ক্রোধান্ধ ব্রাহ্মণ তাই বলিলেন,
“দূর হও বূর্থ
এত বড় অপমান" সহা করিবার পান্র নবগোপাল নহেন। সহা
করিলেও তাঁহার সমুচ্চ পদগৌরব সহসা গু হইবার নিশ্চিত
আশঙ্কা বিভ্ধমান। অগ্র পশ্চাৎ না ভাবিয়া তাইঞ্তিনি সক্রোধে
দণ্ডায়মান হইয়া ব্রাহ্মণের গ্রীবাদেশে হ্তার্পণ করিতে দ্বিধা বোধ
করিলেন না।
হীন অপমানে জ্নহারা শাস্ত্রী মহাশয় দারুণ অভিমানে এবং নষ্ট-
সর্ধ্যাদার বিষম ব্যথায় অশ্রু স্বরণ করিতে পারিলেন ন৷। ইতস্ততঃ
বিক্িপ্ত- উত্তরীয়, ব্যাগ, হুকা, কলিকা, ছত্র, পাছকাদি ঝটিতি গ্রহণ
করভঃ, ভু'ড়ী প্রদেশের খখলিত বসন ও ভূমি গাত্র মার্নশীল অঞ্চল-
৬৪
পশঙ্লী-ভী।
কচ্ছ কোন প্রকারে আয়ত্বাধীন রাখিয়া জ্ঞান্হীরা ' অধ্যাপক
অগ্রিমূত্তিতে একেবারে প্রাঙ্গণে গিয়া ধাড়াইলেন।
এই ঘটনা ঘটিতে অতি অল্লমাত্র সময় লাঁগিল। আমলাবর্ের
মধ্যে মাত্র একজন অতি বৃদ্ধ কর্মচারী ছিলেন, ফিনি শীস্থী মহাশিয়কে
চিনিতেন। মুখোপাধ্যায় পরিবারের উপর এই প্রবীণ ব্রাহ্মণের পূর্ব্ব-
প্রতিষ্ঠা ও প্রতিপত্তির কথ।ও তিনি অবগত ছিলেন।
ব্যাপার দেখিয়া প্রথমে বৃদ্ধ বিন্বয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়৷ গেলেন।
ক্ষণপরে ইতিকর্ডব্য নির্ধারণ করিয়া লইয়া, প্রাঙ্গণকেন্দ্রে উলঙগপ্রায়
অর্দোন্মত্ত বেদাস্তশান্ত্রী মহাঁশয়ের পদতলে লুটাইয়া৷ পড়িয়া, বৃদ্ধ
তাহাকে ক্রোধ সম্বরণ করিতে অনুরোধ করিলেন ।
জলস্ত অনলে দ্বৃত প্রক্ষেপের মত ইহাতে শাস্ত্রী মহাশয়ের
ক্রোধান্মি দ্বিগুণ বাড়িয়া গেল। জবাকুস্থম-সন্নিত লোচনছয় হস্ত-
পৃষ্ট্বারা পেষণ করিতে করিতে তিনি ভোলানাথের উৎনন্ন গমনের
ব্যবস্থ। দিলেন ।
তখনও নবগে(পালের ক্রোধের উপম হয় নাই। ভোলানাথের
অগোচরে তত্প্রর্তি অভিসম্পাত বর্ষণে, নেমকহালাল আত্মীয়বরের
কাগুজ্ঞান লুপ্ত হইল।
কবি বলিয়াছেন “তপণের তেজ মস্তকে ধারণ কর| যায়-_-
কিন্ত তপণ-তাপ-তণ্ত বালুকার উত্তাপ পদতলেও সহ্ হয় না।”
তাই ভোলানাথের শক্তি-সদিরান্ধ আশ্রিত কুটুম্বের মস্তিষ্কে অসহ্
তেজের সঞ্চার হইল।
বৃদ্ধের মার্জনাভিক্ষা 'ও মিনতিবাকা নবগোপাল--ত্রান্মণ্যশাসিত
৬৫ |
€
পল্লী-্ী
শুদ্রাদি ইতর জাতীয়ের ছুর্বলত| বলিয়াই ধরিয়া লইলেন। শ্রাটোর
সহিত এই অপমানিত ব্রাঙ্মণের যে সাধারণ ব্রাঙ্গণপত্তিত অপেক্ষা
অপর কোনও ' উচ্চতর সম্মান-সন্বন্ধও থাকিতে পারে, সে কথা
কৈতবাদকুশল মূর্খ নবগোপালের মন্তকে প্রবেশ করিল ন!।
ক্রোঁধান্ধভাবে সে বার বার ব্রাহ্মণকে স্তব্ধ হইতে বলিলেন।
শাস্ত্রী মহাশয়ও নিদারুণ লাঞ্ছনা, অপমানে সম্পূর্ণ লুগ্ুচৈতন্
হইয়াছিলেন। তিনি নবগোপাঁলের কথায় ভ্রুক্ষেপ না করিয়া, পুনঃ
পুনঃ ভোলানাথের উদ্দেশে অভিসম্পাত-অনল বর্ষণ করিতে লাগিলেন ।
অবশেষে নিযতি-কর-রজ্জু-পরিচালিত ব্রাঙ্মণ, নবগোপালের প্রহারে
জর্জরিত হইয়! শ্তাটোভবন পরিত্যাগ করিলেন । নবগোপালের সহিত
সমুচ্চ বাকৃবিতগ্া-পরায়ণ বুদ্ধের চীৎকারে অন্দর মধ্যে এই অমঞ্গল-
বার্তা বিঘোযিত হইল।
স্বতঃই শান্তিময়ীর মনে একটা অমঈল-আশঙ্কা জীগরিত ছিল;
তাই বৃদ্ধের আকম্মিক চীৎকারে তিনি কীপিয়! উঠিলেন।
পরে, গুরুদেবের লাঞ্ছনার কথ! শুনিয়া তিনি সগ্ভমৃত-পুক্র-
শোকাতুর৷ জননীর স্তায়, গগনতেদী আকুল আর্জনাদে গৃহ-বিগ্রহের
চরণ-প্রান্তে অজ্ঞান হইয়া পড়িয়া রহিলেন।
মদিরা-পান-বিহ্বল শ্তাটোদম্পতির কাণে এই ব্যাপারের কোন
কথাই পৌছিল ন|।
৬৬
লল্লা-রী
(এ)
অন্দরন্থিত পুকুরের পাড়ে মার্বেল বীধান ঘাটের কোণে বসিয়া
গ্াটো ছুর্ভাবনার হাত এড়াইবার জন্ত ঢোক ঢোক্ দ্রাক্ারিট
গলাধঃকরণ করিতেছিল।
এমনি অদৃষ্ট তাহার--যেই বিলাঁতি মহৌধধের এক আধ মাত্রা
পেটে পড়িলে, পথের ভিখারীর প্রাণেও রাজহস্তী ক্রয় করিবার
আহ্লাদ জাগিয়! উঠে, সেই অমোঘ অরিষ্ট বোতিলশুদ্ধ পাঁন করিয়াও
ঠাটোর অন্তরের অন্ধকার তিরোহিত হইল না-হুূর্বল মস্তিক্ষ
সুরাদেবীর প্রবল প্রভাব বিস্তৃত হইয়৷ বরং তাহার আঁধার প্রাণের
তমোরাশি উত্তরোত্তর ঘনীভূত করিয়! দিল ।
দল বীধিয়। সমস্ত জমিদারীর প্রজাগণ খাঁজন। বন্ধ করিয়াছে ।
অনস্তদেবের সুপরামর্শে অনেকের নামে মোকদ্দাম! করিয়া আদালতের
ডিক্রীও পাওয়া গিয়াছে। কিন্তু তাহাতে কোনও সুফল হয় নাই।
প্রথমতঃ ন্তাষ্যপ্রাপ্য থাজন! ব্যতীত স্থদীর্ঘ বাঁজেজমার কর্দ
আদালতে গ্রাহ হয় না। অথচ, বাজেজম! ব্যতীত ন্ুধুমাত্র স্তাষ্য
খাজানা গ্রহণ করিতে হইলে জমিদ্ারীর আয়ের তিন ভাগই কমির।
যায়।
দ্বিতীয়ত*_সামান্ত টাকার মোকদদমায়, দাবীর অপেক্ষ৷ বেশী
খরচ পড়িয়া যাঁয়-_আদালতের মাশুল, উকিল মুহুরীর সেলামী,
আমলাঁগণের দস্তরী, পিয়াদার ভালমান্যী--তদ্ির খরচ ইত্যাকার
৬৭
গলনুনী-ওলী
সিননারানাহ্রনিরাাতিচনহিরিনাকা
ডিক্রী পাওয়া যায়।
তদুপরি আর এক নূতন বিপদ এই ফে_এত করি ডিক্রী-
জ্বাত্বিতে প্রজার মালক্রোক করিলেও তাহার দিলাম ডাফিবার লোক
পাওয়া যায় না। এমন কি, কেহ পাঁচগ্ত? পারিশ্রমিক গাইলেও এ
সমস্ত মাল আদালতে পৌছাইয়া দিতে সম্মত হয় নাঁ।
এব্রকার বার্থ মোকদ্দাঁয়। করিদ্না কোনও লাভ হয় নাই।
আদালতের সহিযোহরযুক্ত মূল্যবান “ফয়সলা” গুলি দগুরের
আলমারীতে পোকার আহার জোগাইতেছে মাঞ্র।
ইতিমধ্যে “ননকো” নামধের় ভরঙ্কর বরক্মটৈত্যের দোহাই দিয়া,
শ্রীধৃত হাটো সদরে মাজিষ্টেটি সাহেবের অন্তুগ্রহ ভিক্ষা করিয়া
আসিয়াছেন। কিন্তু এমনি প্রবল গ্রহের প্রকোপ--এমন অব্যর্থ
মন্ত্র পর্য্যন্ত ফলপ্রস্থ হয় নাই ।
আনয়ন করিতে ' সেই গ্রেলার নবাগত শ্বেতাঈপুষ্গৰ রাজি হন
নাই। অধিকগ্ প্রজার কাছে মার্জনা চাহিয়া গোলঘোগ মিটমাটু
করিবার অসঙ্গত পরামর্শ দিয় তিনি শ্তাটোকে বিদায় করিয়াছেন ।
বিশাল জমিদারীর একচ্ছত্র অধিপতি হাটোসাছেব ভাই একটা
বিরাট ছুর্ভাবনার প্রাতিদিন ঘনান্ধকারে নিমজ্জঘান হইয়! পড়িতেছে।
তহবিলে যৎসামান্য নগন্দ অর্থও আগ মাই) নিজে জমি রীর
অংশ দুইবার বন্ধক দেওয়া! হইঘ] গিয়াছে-তৃতীয়ধার জার কেহ
উহা! বাধা রাখিতে ও চাহে না।
| ৬
পীর
গৃহিগীর রঙ়ানস্কাঁরের অবশিই ছুই চারি খানা বীধা দিয়া
আশ্বিনের ক্িস্তী দ্র খাঁজানা দেওয়া হইম্বাছে; কিন্তু পথকস
ফ্েওয়। হয় দ্বাই ৰর্গি প্রায় প্রতিদিন হুই চাঁয়ি খানা
কালেক্টারির অস্থাবরক্রেক্ষি সার্টিফিকেট আদিতেছে, কোঁনও
প্রকারেই আয় জমিদার পরিবারের সম্মান রক্ষা হইঘার উপায় নাই।
শ্ত/টো! এবং পাঁঞ্চনের মিলিত রূক্ষ ব্যবহারে, শাস্তিময়ী আর
তাহাদের সহিত খাক্যালাপ করেন না। নচেৎ তাঁহার হাতে
এখনও বহুপরিমাণ নগদ অর্থ এবং প্রাচীন পরিবারের যাবতীয় মূল্যবান
আসবার, অলঙ্কারাধি রহিয়াছে । দারুণ অভিমানী শ্তা্টো অপর
কাহারও দ্বারায়ও মাসীষার সাহাযাভিক্ষা করিবার চেষ্টা করিতে
পারে নাই। | |
নিত্য খুটি নাটি কথার পারুল এবং শ্যাটোর মধ্যেও অহ্থ!
দাম্পত্যকলহের সথচনা হইয়াছে। এতাদৃশ সর্বপ্রকার গ্রহবৈগুণ্যের
ফলে, শ্াঁট! মৌনধিলষন করিয়! সর্ব ছঃখনাঁশিনী নুরাদেবীর তরল
করুণা জোতে গা ঢালিয়৷ দিয়াছে-কিন্তু প্রফুল্লতার পরিবর্তে
তাহাতে তাহার মন ক্রমশঃ ঘোরতর কালিমাচ্ছ এবং দেহ দুর্বল
হইয়! পড়িতেছে।
অনেকক্ষণ ব্যর্থ কারণ-সাধনায়” মগ থাঁকিয়! প্টাটো৷ বিষম ভাবনা-
জলধির অতলতলে নিমঞ্জিত হইয়! পড়িল।
এমন সময় শাল একটি ফড়িঙের পশ্চাতে দৌড়াইতে দৌড়াইতে
সেখানে আিয়৷ ক্ষুদ্র ফড়িউটি ধরিয়া ফেলিল--পশ্চাতে দয়িত। ছুটিয়
আসিয়া অমনি তাহরি হাত চাপিয়! ধরিল।
৬৯
সহনী-্রী
«ছেড়ে দাও, মাথা খাবে-_ওর ডান! ছি'ড়ে ওকে কষ্ট দিওনা
'ভাই।” বলিতে বলিতে বালিক। সত্যই চক্ষের জল মুছিল। :
“ধরেছি ত' ছাড়বো কেন-_হছু"!» বলিয়! শ্ামল দয়িতার হাত
ছাড়াইয়! ফড়িউ, লইয়! দৌড়াইবার চেষ্টা করিল।
কষ্টে শ্তামলের হাত উউরািনী৮7 ন্রা ত
নানাপ্রকারে শ্তামলকে বুঝাইয়। দিল যে__ন্ডান! ভাঙ্গিয়! দিলে
সত্যই ফড়িওটি বাথ পায়-_মাঁন্ুষ বলবান বলিয়া, ক্ষুদ্র ফড়িও এর প্রতি
অত্যাচার করিলে স্বর্গের দেবতারা রাগ করেন ।”
বালিকার সরলতার সকরুণ প্রার্থনা! ব্যর্থ হইল না। প্রবুদ্ধ বালক
নিজের খেয়াল চরিতার্থ করিবার বিরাট ইচ্ছা ত্যাগ করিয়া-_-খেল!র
সাথীর মান রক্ষা করিল।
অমনি হর্ষোৎফুল্পল বালকবালিক। উভয়ে উভয়ের বাহুবন্ধনে বন্ধ
হইয়া অনাবিধ খেলার সন্ধানে চলিল।
এতক্ষণ বিমুগ্ধচিত্তে শ্তাটো বাঁলক বালিকার এই ক্ষুদ্র স্বার্থত্যাগের
মধ্যে একটা মহৎ দার্শর্নিক তত্ব আবিষ্কার করিতেছিল। শিশুয্ধয়কে
চলিয়া যাইতে দেখিয়া-__সে তাহাদের ডাকিল।
শ্যাটো যে সেইধানে ছিল, একথা দয়িতা বা শ্তামল কেহ তখনও
জানিতনা। চমকিত শিশুযুগল, ভয়ে বিন্বয়ে স্থির হইয়া দ্লাড়াইল।
আবার শ্তাটে৷ তাহাদের আহ্বান করিল।
“যাস্নি দয়ি--বাবা কি খাচ্ছে গ্াখ? কাছে গেলে তোকেও
খাইয়ে দেবে-তথন টের পাৰি কেমন মজা 1৮ বলিয়া শ্তামল
দয়িতাকে বারণ করিল। দয়িত| কিন্ত তাহার কথ৷ শুনিল না।
৭৩
শলী-ভী।
সোল্লাসে দৌড়াইয়। গিয়া! সে একেবারে “জ্যেঠামশায়ের কোলে
গাপিয়া বসিল।
ক্ষুদ্র, কোমল বাহুলতাঁর বাধনে শ্ঠাটোর কণ্ঠ জড়াইয়। ধরিয়।
(য়িতা বাশরীর সুরে বলিল”_-“তুমি সরবত খাচ্ছ?”
সরলা বালিকার প্রশ্নে কি জানি কেন গ্ঠাটে। একটু অনুতপ্ত
ইদয়ে উত্তর করিল,-“না মা-__বিষ খাচ্ছি»
বালিকা বুঝিল না-মান্ুষে কেন বিষ খাইবে! তাই সে
বলিল-“ছি, বিষ কি থেতে আছে? মরে যাবে যে!” বলিয়!
গাঁটোর হাত হইতে পানপাত্র কাড়িয়। লইল।
“মরেই ত আছি মা-_-আঁর মরব কি?” বলিয়! শ্তাটে। আবার
ভাবনার জলে ভাসিয়। চলিল। দয়িতা অত কথ! বুঝিল ন|।
মানুষে আবার বিষ খাইয়! মরিবে কেন তাহা সে জানে না।
“না জ্যাঠামশায়, বিষ খাবে কেন? আমি তোমাকে বিষ থেতে
দেবনা । আমার বাবা ত বিষখান না 1» বলিয়৷ বালিক-_
সকাতর প্রার্থনার আর দৃিতে শ্যাটোর দিক্লে চাহিল।
অনেকক্ষণ নীরব থাকিয়া শ্ঠাটো৷ বলিল,__«ন! মা! তোমার বাবা
যে মানুষ, আমার মত জানোয়ার নন__যে বিষ খাবেন। বরং এই
বিষ যাঁরা খায়, তাদের ছু'লে তিনি স্নান করে শ্তদ্ধ হয়ে আসেন।”
“তা হলে তুমিও খেয়ো নাঃ তুমি ত বাবারও বড়-_যা থেতে
নেই, তা খাবে কেন? এই ঢেলে ফেলে দিই” বলিয়া বালিকা!
কথ! মত কাঁধ্য করিবার সাহসের অভাব বশত: শ্তাটোর সম্মতির
অপেক্ষায় তাহার প্রতি অকৌতুক দৃষ্টি নিক্ষেপ করিল।
৭ $
পল্লী-ভী
শ্তাটো এই ক্ষুদ্র বালিকার সকাতর প্রীর্থনাবাক্যের মধ্যে ৷
ভগবঘ প্রেরণার ছাঁয়৷ দেখিতে ০৪ নীরবে দে সেই কথা
ভাবিতে লাগিল।
শ্তাটোকে নীরব দেখিয়৷ দয়িত| চির রান
শ্াটো কোনও উত্তর দিল না। সাহস পহিয়। বালিকা «এই ঢেলে
ফেল্লেম।” বলিয়া! ক্ষণকাল অপেক্ষা করিয়া! সত্যই সেই দ্রবীভূত
হলাহল ঘাটের উপর ঢালিয়৷ ফেলিল। সাফল্যের আত্মগ্রসাঁদ-
জনিত হর্ষোৎফুন্ন বালিক! বারঘার শ্তাটোর গণ্ডে স্নেহ চুম্ধন করিতে
করিতে বলিল,
“বল আর এ খাবে না?”
“ব্লতে পারি না মা। মনটা একটু বশে আছে এখন, -আবার
কখন বিগড়ে যাবে কে জানে?” বলিয়৷ আজি জীবনের প্রথম
শ্তাটো শক্রকন্ঠাকে অনাবিল স্নেহে বক্ষে চাপিয়া ধরিল।
এমন সময় ভজহরি__ |
_ আমি পাগল,কি মমট! পাগল--ন| পাই টকানা--
সাত পাগলে পাগল করলে, কেউ ত যোবেন। ॥
গাহিতে. গাহিতে একটা বিহ্বল উন্মাদনার সঙ্গীত তরঙ্গ লইয়!
সেখানে উপস্থিত হইল। .
দৃয়িতা৷ এবং শ্তামল উভয়েই ভঙ্জহরিকে পাগল বলিয়৷ বড় তয়
করিত-_তাঁহাকে দেখিয়াই তাহারা কাহারও বাঁধা না মানিয়৷
উর্ধশ্বাসে সেখান হইতে পলাইয়! গেল।
একমনে হ্াটো! ভজহবির উল্মাদ সঙ্গীত শুনিতে গুনিতে আত্মহারা
এ
ঝা পড়িল। ঘনীভূত নু আকাশে বাতাসে, জলে স্থলে,
পুপকানসে, তনয় বনে সর্করর ছড়া ইয়। পড়িয়া এমন একটা আকুল
উন্মাদনার সৃষ্টি করিল, যে সুরা-বিহবল শ্তাটো একাগ্র মনঃসংযোগে
সেই সুধার সমুদ্ে ডূবিয়া রহিল ।
শরতের ্গিপ্ধ সুনীল আকাশের পশ্চিম প্রান্তে বসস্তের ফাঁগ
ছড়াইয়া তখন তিরোহিততেজঃ সন্ধ্যার হুর্ঘা, ক্লান্ত অবসন্ন দেহভার
নৈশ নিদ্রীর কোঁলে ঢালিয়৷ দিতে চলিয়াছিলেন। মূছু মলয়-হিল্লোলিত
দীর্িকার জলে সেই রক্তিম আভা পড়িয়৷ এক অপূর্ব দৃশপটের স্জন
করিয়াছিল-_-আর মলয়ের স্বন্ধে আরোহণ করিয়! পদ্পপরিমল সেই
যঙ্গীত-বঙ্কারকুহরিত রঙঈগমঞ্চের আঁবেশ-বিহবল ভাবদম্টির মধ্যে
পূর্ণতা আনিয়৷ দিতে ছিল।
গান শেষ হইল-_কিন্তু তখনও গায়ক এবং শ্রোতা উভয়েই সেই
সঙ্গীতম্থষট দিব্য মুচ্ছনায় বিভোর । অবশেষে চমক ভাঙ্গিলে শ্যাটো
বলিল__“ত্কু- তুমি কি সত্যই পাগল?”
“নিছক্” বলিয়া ভজইরি হোঃ হো করিয়! হাসিয়া উঠিল।
“তুমি কবে এলে ভঙ্জু ?
“অনেক দিন এসেছি বাঁবা- জমিদার মানুষ, বিষয় লয়ে বাস্ত
ছিলে কিনা--তাই চোখে পড়ে নি।” বলিয়া ভজহরি স্বীয়
পঙ্ী-ভী।
পাঞিয়ে দেবে বাব! ? না, না _-সে যামগাটা, বড়. নোঞ । বারণ করো,
'আর তোমার পুকুরধারে আসব না বাবা”. বলিতে বলিতে ভরি [ও
দ্বিতীয়বার প্রস্থানের উদ্যোগ করিল। :
দ্না-_না ভজহরি, আর পাঠাৰ না তোমায়। তুমি ত পাগল |
নও, পাগলের গানে_ পাগলের প্রাণে এমন মত্ততা আন্তে পারেনা 1”
বলিয়া গ্তাটো ভজহরির হাত ধরিল। তজহরির আপাদমস্তক তখন ভয়ে,
বিশ্ময়ে কিংবা হর্ষে-_যে কারণেই হ'ক-_থর থর করিয়! কাপিতেছিল।
“না- আমায় ধরোনা বাবা, আমি সত্যি পাগল । নেশা ভ্যাং
করিনে বাবা, ষে তার দোহাই দিয়ে বলবো “আমি পাঁগল নই ॥
জমিদীরী নেই, বে সেই অছিল! কোরে পাগলামী ঢেকে রাখবে !
স্বদেশ প্রেম নেই ষে_বঙ্গমাতার কীছুনী কেঁদে বলবে “আমি পাগল
নই আমি সত্যি একট! পাগল বাব 1” ভজহরি ভীমবলে শ্যাটোর
ন্গীণ হন্তের বন্ধন ছিন্ন করিয়া! দীঁড়াইল।
“না, না, তুমি পাগল নও-ভুমি বিশ্বপ্রেমিক- তুমি মহাপুরুষ-_
তুমি পাগলামীর আবরণে সম্য পাগলদের জ্ঞ।নবিধাতা ! তৃমি-_”
ঠ্রাটোর কথায় বাঁধ! দিয়া ভজহরি বলিল “আমি সব পাগলের
গুঁছা--একটা নিঃস্ব, ভণ্ড, বন্ধপাঁগল--” অমনি সে কোনও প্রত্যুত্তরের
প্রতীক্ষা না করিয়াই দ্রুত প্রস্থান করিল।
দুরে. ক্ষীণ হইতে ক্ষীণতর হুইয়! সান্ধ্য শঙ্খনাদের সঙ্গে তাহার
সঙ্গীতের শেষ রেশ্ মিলাইয়া গেল, এই শ্ুটিল ছুনিল্লাস্ত
_েলইত স্বামী? ল্লাত্রিদিনন সাল্প_শ্শিবিি
বাথ! পাস্্র।%
৭8
পলী-গ্ী
অনেকক্ষণ অন্তরালে দীড়াইয়। পারুল- শ্তাটো এবং ভক্জহরির
উন্মত্ততাঁর অভিনয় দেখিতে দেখিতে বিরক্তির হাঁসি হাসিতে ছিল।
ভঙ্গহরি চলিয়া গেলে গ্ঠাটোর কাছে আসিয়া সে বলিল”__“এমন
ক'রে পাগলামীর অভিনয় আর কতকাল চলবে ?”
তখনও শ্তাটো সম্পূর্ণ আত্মহারা হইয়া! আপনার মানসিক দৈন্তের
অবস্থার সহিত-_ স্বাধীন, উন্মাদ ভজহরির অবস্থার তুলনা করিয় গাঢ়
চিন্তায় মগ্ন ছিল। অন্যমনক্ষে মে বলিল--“হছ' 1”
পারুলের ধৈর্য্চযুতি ঘটিল। খুষ্টীয় মিশনারী সংসর্ে 'আদীন:
প্রদান মূলক আদর্শে গঠিত তার জীবন। কখনও কল্পিত উচ্চ ভাবের
আবেশ তাহার মন্তিষম্পর্শ করিতে পারে নাই। জীবনটাকে পূর্ণ
উপভোগ্য করে নেওয়াই তাঁহার জীবন ধারণের উদ্দেন্ত |
উদ্দাম উচ্ছলতার, মধ্যেই, তাহার শাস্তি, স্বার্থসিদ্ধিই তাহ
আদর্শ । হীন সঙ্গলিগ্দাই তাহার দাম্পত্য ভীবুনের উদ.
“- পরার্থপরতা, সমবাথা, প্রেম, প্রণয়, সদসং্বিচার-বিধি তাহার
মানমঅভিধানের বহিভূতি অর্থহীন শমথ্যা পদমাত্র! শ্যাটোর
মত তুশ্চিন্তায় বিমর্ষ হইবার মেজাজ তাহ!র নয়! শ্ঠাটোর কাতরত।
দেখিয়া সমবেদনায় গলিয়! যাইবার মত শিক্ষাও সে পায় নাই।
তাহার অন্তমনক্ক, অসন্বন্ধ উত্তরে তাই ক্রোধভরে পারুল বলিল/_
“গলায় দড়ি জৌটেন!? সামান্ত বিপদে এমন ক'রে মুষড়ে
যাও-_-আবার মানুষ বলে গর্ব কর? ছি, ছি, ছি!”
সুতীক্ষ বাক্য-বিদ্ধ হইয়৷ স্তাটো প্রক্ৃতিস্থ হইল। অনেক কাতর
অনুনয়ে সে পারুলের করুণা ভিক্ষা করিয়া বিফল মনোরথ হইল।
৭৫
পহদী-
দৃশ্িন্তায় তাহার খভাবসিন্ধ রুক্ষ স্বভাব অধিকতর ভঞ্চল হইয়। '
পড়িয়াছে। ক্রমে কথায় কথায় সে পারুলকে স্পষ্ট করিয়। বলিল যে, '
তাহার সংসর্গ আর তাহার ভাল লাগে লা, তাহার পরামর্শে যতদুর
সম্ভব অধঃপতনের পথে দে নামিয়াছে-_আর পারুলের পরামর্শে
তাহার প্রয়োজন নাই”
পদদলিত৷ বিষধরীর তেজে জলিয়া উঠিয়া পারুল নানি! তীন্র
বাক্যে বেচারী শ্ঠাটোর ভাবনাবিব্রত অন্তর বিদ্ধ করিতে গাগিল।
ক্ষোভে, অভিমানে, অন্থুশোচনায় ষ্ঠাটো গ্রিয়মান হয়া পড়িল।
সুযোগ পাইয়া পারুল পুনরায় অশেষ প্রকার তিরঙ্কারবাকো
শ্তাটোকে উত্যক্ত করিয়া তুলিল।
এমন সময়__ সমস্ত দিন অল্গাতা, উপবা্িনী শান্তিময়ী কম্পিত
পদে সেখানে আসিলেন। তঙ্নও বুকভাঙ্গ! দীর্ঘনিঃশ্বাসে তাঁহার মস্ত
অবমনৰ ঘন কম্পিত হইতে ছিল।' তাহার ০০৮০০০০৮
তখনও অশ্রপ্রবাহ বহিতেছিল।
অপেক্ষাকৃত গ্রক্ৃতিস্থ ছুইয়া তিনি বলিলেন,_“ভুলো, আমার
পিতৃভিটাঁয় এই অত্যাচার আর আমি সহ করতে পারি না--আমার
একট! বিহিত করে দে।৮
গ্রাটো কিছুই বুঝিতে পারিল না। বধূর প্রতি মাসীমাতার
আন্তরিক বিরক্তির কথ! সে অবগত ছিল, তাই বলিল, _
“সবই বুঝি মাসীম! | কিন্তু ঘরের পাগল রাস্তায় ছেড়ে দিলে,
তাঁতে আরও বেশী লৌকাপবাদেরই আশঙ্কা ৷”
মাসী মা কিন্ত বুঝিলেন ন! যে, নবগোপাল তাহার পিতৃপরিবার
ণঙ
গপসুনী-ভনী
মধ্যে কেমৰ করিয়া প্ঘরের পাগল”রূগে পরিগণিত হইতে পারে !
তাই তাহার প্রাণের সখ আবার উথলিয়! উঠ্ঠিল,_
“তোদের ঘরের পাগল লিয়ে থাক তোর! ভুলো, বুড়ে! খুবড়ো
হয়েছি আমি, আমায় বিদ্দায় দে।” বলিতে বলিতে শাস্তিময়ী
সাটোর দিকে বিহ্বলভাবে চাহিয়। রছিলেদ।
«“বোনপোর কাছে নাকে কেঁদে আদর কারাতে এসেছেন ।”
বলিয়া পারুল অবজ্ঞবযঞ্ক ভঙ্গীতে নাসিকাকুঞ্চন করিল।
“ছি পারুল, মাসীমার মুখের উপর তোমার কথা কওয়া৷ সাজে
না-তুমি জান না মালীম। আমার কে ?”
বলিয়া গ্তাটো এমন একটা করণ ্ররঘনপূর্ণ ভঙ্গীতে পার্দলের
দিকে চাহিল, যাহাতে স্পষ্টই বুঝা গেল যে, মাসীমাঁর করুণাই তাহার
শেষ" অবলখবন-_ পারুল যেন অসংঘত কথার আঘাতে তার সেই
অবলম্বনটি পর্যন্ত ভার্গিয়া! না দেয়।
পার্ল অত্যন্ত স্বাধীন প্রকৃতির লোক । অপ্রিয়বাদিনী সে,
কুৎসিতভাধিবী সে কিন্ত তাহার অন্তরে কুটনীতির ছাত্ামান্রও
নাই। খোশামোদ ব্যাপারটাই তাহার সম্পূর্ণ অপরিজ্ঞত, তাই
শ্াটে'র কথায় জরক্ষেপও না করিয়৷ সে কহিল,
«আছি অত শত বুঝি না-_-উনি যেন আমার কাছে অমন ক'রে
নাকে কাদতে আনেন না ডা বলে দিচ্ছি।”
বিরাট মনোবেদনার উপর আঁবার পারুলের স্ৃতীস্ষ বাক্যবাণে
জর্জরিতা হইয়! শাস্তিময়ী বলিলেন,
“ঠিকই বলেছিষ ব্উ। আমরা সেকেলে সাদালিধে মাক্ুষ ।
পপ
পল্লী-ভী
তোদের হাল ফ্যাসানের চাঁলচলন আমর! জানি না ত। তাই বলছি,
আমাকে বিদেয় করে দে) তোরা সুখে স্বচ্ন্দে ঘরসংসার কর?
ভুলো! আমার পুত্র. নেই, তুইই আমার সব। তাই, তোঁকে একটা
অথণ্ড রাজত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেম__তুই সুখী হলেই আমার সু, তাই
দিয়েছিলেম। হিন্দুর আচার লোপ করে, যথেচ্ছ ছইজনে লক্ষ্মীর
গীঠে অনাচারের স্থ্টি করেছিস, তাতেও কোনও কথ| কইনি। কিন্ত
আজ-_ওহো হো---” |
আর বলিতে পারিলেন না । একট! প্রবল আবেগে শাস্তিময়ীর
কঠরোধ হইল।
সহস৷ গ্তাটোর জ্ঞ।ন সঞ্চার হইল । ক্রন্দনশীলা শাস্তিময়ীর রুক্ষ
বদন, শীর্ণ দেহবন্লরী এবং অবিরত ক্রন্দনহেতু স্ফীত চক্ষুপল্লব দেখিয়া
সে শিহরিয়৷ উঠিল।
হাট, সঙ্গ ও শিক্ষা! দেধে 'অনেক প্রকার দোষের আকর
হইয়! পড়ি্নাছে। অদ্ধা, ভক্তি, দয় দরাক্গিণ্যাদি কিছুই সে জানে
না, বা বোঝে না। কুট স্বারচিন্তা তাহার জীবনের সার ব্রত।
তথাপি অত্যন্ত প্রথর তাহার বুদ্ধিবৃতি। ' সে জানিত মাসীমার
অন্ুকম্প ব্যতীত তাহার ভবিষ্যৎ জীবনের কোনও আশা নাই।
হ্তামলের প্রতি শাস্তিময়ীর প্রগাঢ় ভালবানার কথাও সে অবগত ছিল।
তাহার নিশ্চিত বিশ্বাস ছিল, অতিরিক্ত দুর্ব্যবহার না করিলে অন্ততঃ
হ্ামলের হিতের জন্য হ'লেও, মাসীম! তাহার সহায়তা করিবেন ।
কল্পিত ্নেহার্্্বরে সে বলিল,
“কি হয়েছে মাসীম!? চেহারা দেখে বুঝছি, তুমি সারাদিন
৭৮
প্পল্লী-্রী
স্নান আহার কিছুই করনি, বুঝি কেবল কেঁদেই কাটিয়েছ-_কি হয়েছে
মাসীমা ? | |
“কি আর হবে, তোমার মাসীমার পিগ্ড বুঝি শেয়ালে চটকে
গেছে ।”
বলিয়া নির্লজ্জা পারুল পৈশাচিক হাঁসির তরঙ্গে গা ভাসাইয়া
দিল।
“ছি, ছি, পারুল ! তুমি না ভদ্রবংশে জন্মেছিলে? ছি ছি !”
বলিয়৷ বিষম লজ্জায় গ্ঠাটো নীরব ইঙ্গিতে মাসীমার মার্জনা
প্রার্থনা করিল।
“তুমি বুঝবে না বৌম ! কত সোহাঁগে, কতবড় আশায় তোমাকে
ভোলার সঙ্গে বরণ কোরে এই ঘরে এনেছিলেম ! যাক্, আমাৰ
সবই গেছে । বাকি ছিল কেবল তোমার ভাহিয়ের হাতে গুরুদেবের
লাঞ্ছনা, তাঁও আজ-_» ৃ |
আবার শাস্তিময়ীর ক্রোধ হইল, কথা শেষ না হইতেই তিনি
নীরব হইলেন।
গ্তাটো, আচারত্রষ্ট কদীচারলীন হইলেও তাহার হিন্দু জনোচিত
ছুই একটা দুর্বলতা ছিল। দে জানিত যে, শাস্তি স্বস্তযয়নের জন্য
বহুদিন পরে তাহার মাতামহের কুলগুরুদেবের আসিবার কথা আছে।
তাই শাস্তিময়ীর কথ। শুনিয়! সে বলিল,__
«সে কি মাসী মা! ঠাকুর মশায় এসেছিলেন ?”
“এসেছিলেন, এসে ধুলো পায়ে তোর শ্তালার হাঁতে উত্তমস মধ্যম
আহার কোরে, তোকে আশীর্বাদ করে ফিরে গেছেন ভুলো ।”
৭৯
শুনিয়া পারুল একরার তীর প্রতিবাদ করিতে উদ্যত হইল।. কিন্ত
শ্তাটো তখন ক্রোধোন্মাদ। বিষম চীৎকারে সহধর্সিীর শ্রীণে
গ্ররল ভীতির উদ্রেক করিয়! দিয়া সে তারন্বরে ভৃত্যকে ডাকিল।
তৎপর তৃত্যের ছ্বারায় নবগোপাঁলকে তখনি ডাকিয়া পাঠাইয়৷ সে
'শীরকে অশ্রু মোচন করিতে লাগিল ।
আর যাঁহাই হউক হিন্দু সে। একট! বৃহৎ ক্রিম্াকর্শ্পরায়ণ
জমিদার বংশের সুখ্য।ডি স্থনাম রক্ষার ভার তাহারই উপর ন্তস্ত।
ছদেময়ের ঘহচর নান| কুসংস্কারের ক্রীতদাস সে। তাহার গৃহ হইতে
সর্বজনপুজ্য গুরুদেব অপমানিত হইয়া ফিরিয়৷ গিয়াছেন, এই দারুণ
মনহ্ঃখে তাই শ্তাটোর অবয়বে তখন একট! হিংঅ্রজন্তর মৃত্তি প্রতি-
ফলিত হইয়। উঠিল। তাহার-চক্ষে বিষম আগুগ অলিয়া উঠিয়াছে__
গ্রবল অঙ্র প্লাবনেও সেই অনল নির্বাপিত হইল না।
ক্ষণপরে নবগোপাল ভগিনী-ভগিনীপতি প্রভৃতির চিরশ্লিগ্ঠ
সামীপ্যে উপস্থিত হইয়া শ্াটোর উগ্র ভীষণ সৃষ্তি দেখিয়। চ্মাকত
হইয়। গেল। মৃত্যু দণ্জ্ঞা প্রচারণীল বিচারকের স্তব্ধ গাভীর্য্ের
সঙ্গে হাটে বলিল,
- “আজ এই দণ্ডে আমার বাড়ী হইতে দুর হও জানোয়ার!”
সুদৃঢ় অনুজ্ঞার স্বরে এমন একটা! তীত্রত! ছিল, যাহাতে নবগোপাল
মনে মনে প্রমাঁদ গণিল।
«কোথার যাব ৰোনাই সাহেব? আমার যাবার আর স্থান
আঁছে কোথায়?” বলিতে বলিতে শিশুর অধম উপায়হীনভাবে
দাস্তিক মূর্খ কীদিয়া ফেলিল।
পল্লী-ওী
“গোল্লায় যাও তুমি- মোদ্দা আমার বাঁড়ী আর তোমার স্থান
হবেনা । একটি কথাও ক'ও না_-কইলে অনর্থ হবে জেন।”
হ্টাটো অবিচলভাবে এই কয়টি কথা বলিয়া! মুখ ফিরাইল।
-নবগোপাল তজ্জাতীয়ের স্বভাঁবসিদ্ধ অনেক অনুনয়, বিনয়, ক্রন্দন,
বিলাপ করিল। কিন্ত কিছুতেই কোন ফল হইল না । অবশেষে
বিষম বিরক্তিসহকারে শ্র(টো নবগোপালের শ্রীমঙ্গে হস্তার্পণের
উদ্যোগ করিল।
এতক্ষণ পারুল নীরবে এই দৃণ্ত দেখিতেছিল। সহসা শ্াটো
এবং নবগোপালের মধ্যবর্তিণী হইয়া সে বলিল__“আমি জান্তে চাই,
এই গৃহে আমার স্থান আছে কি না?
"তোমাকে কেউ কোথাও যেতে বলে নি!” বলিয়৷ বিজাতীয়
প্বণার সহিত শ্টাটো গৃহিণীর পানে চাহিল।
“তা হলে এও কোথাও যাবে না।” প্ররত্যুত্তরের. প্রতীক্ষ মাত্র
না করিয় শ্তাটে।ভামিণী ভ্রাতার হস্ত. আকর্ষণকরতঃ দেই স্থান
ভ্যাগ করিল।
্ণকাল নিস্তব্ধ থাকিয়। শ্তাটো মাঁসীমার পা জড়াইয়! ধরিয়!
কাদিতে কাদিতে তাহার মার্জনাভিক্ষা করিল। ন্নেহের প্রাবল্যে
ছাখ অভিমান ভুলিয়া, শাস্তি পুক্রতুল্য ভোলানাথকে বক্ষে তুলিয়!
লইলেন__-তাহার মস্তক, অজত্র ম্নেহাশ্রু বর্ষণে ভিজাইিয়! দিলেন।
৮১
৮৮)
মিয়াদগঞ্জ পরগণায় জগদিন্দুর নেতৃত্বে এবং প্রজাবর্ণের মিলিত
চেষ্টায় প্রতি গ্রামে পল্লীসংজ্ব স্থাপিত হইয়াছে । প্রত্যেক পল্লীতে
একজন নির্বাচিত অধিনায়কের অধীনে তিনজন সভ্যের উপর সেই
সেই পল্লীসংক্রান্ত যাবতীয় কার্ধ্যভার স্তন্ত 'হইয়াছে। এই সমস্ত
সজ্বের অধিনায়কগণ. জগদিন্দুর নেতৃত্বাধীনে মহাঁসজ্ৰের সভ্যরূপে
কাজ করিতে লাগিল।
ছোট বড় প্রত্যেক চাষীর উৎপন্ন শন্তের নির্ধারিত একাংশ
পল্লীসজ্ৰের প্রাপ্য । অন্তান্ত ভদ্রাতদ্র গৃহস্থ পরিবারেরও সর্বপ্রকার
আয়ের একাংশ সজ্মবের তহবিলে জম! দিতে হয়। এই তহবিল হইতে
পল্লীবাসীর রাজস্ব, চৌকীদদারী ট্যান্স, গুমধালন, বিগ্তালয়, প্রভৃতির
খরচ, রাস্ত। নির্ম।ণ, পুঙ্করিণী খনন, পতিত জমির চাঁষ আবাদ, খাল,
ডোবা, নালা, প্রভৃতির পক্কোদ্ধার, এপ্রকার যাঁবতীর কা কর! হয়।
ঞ্রক বসর না যাইতে সঙ্ঘের হাতে যথেষ্ট অর্থ সঞ্চিত হইল।
নিত্য আবগ্ঠকীয় খরচ বাঁদে উদ্বৃত্ত অর্থের দ্বারা ইতিমধ্যেই একটি:
ছোটখাট ভাণ্ডার খোলা হইয়াছে। এই ভাগ্ডার হইতে সমস্ত পরগণার
প্রত্যেক পরিবারের আবগ্ঠকীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ কর হয়, এবং
সঙ্বের সমস্ত সদন্তের যাবতীয় দেনা এখান হইতে নামমাত্র সুদে
পরিশোধ করিয়। দেওয়া হইতেছে । |
জগদিন্দুর আশ! বৃহৎ। তথাপি সকলের একাগ্র চেষ্টায়
৮
পন্লী-ভতী
ইতিমধ্যেই তাহার বৃহৎ আশার সাফল্য সন্ধে নিঃসন্দেহ প্রমাণ
পাওয়৷ গিয়াছে । |
সকল গ্রামের প্রধান প্রধান অধিবাসীগণ স্বতঃগ্রবৃত্ত হইয়াই
পল্লীর শ্্রীরৃদ্ধিমানসে এই মহাসজ্ঘ গড়িয়া! তুলিয়াছে ; বিশেষতঃ,
সকলগুলি গ্রথমই কৃষকবছুল। তাঁহার! নিরক্ষর, কিন্তু শান্তিপ্রিয় ।
কাঁজেই সঙ্ঘগঠন কার্ধা অপেক্ষাকৃত সহজেই এখানে, অগ্রসর
হইতেছে?
প্রথম প্রথম ছুই চারিজন হুষ্ট লোক এই কি ্
জগদিন্বুকে থে বেগ দিতেছিল। নিজের নিঃস্বার্থ কর্মকুশলতা
এবং সামীজিক শাসনের সাহাঁধ্যে সেই সকল ছুষ্ট লোকের বিষর্ধীত
ভাঙ্গিয় দিতে জগঘিন্দুর বেী দিন লাগে নাই। আজকাল আর
সজ্ঘের হিতকর কার্ধ্য প্রণাঁলীর প্রতিপক্ষ কেহই নাই।
প্রজাগণ বুঝিয়াছে যে, আঁয়ের একাংশের বিনিময়ে তাহারা যাহা
পাইতেছে, তাহা ব্যক্তিগত হিসাবে কেহই আশ! করিতে পারে না।
সঙ্ববন্ধ, মিলিত . হিসাবে প্রত্যেক গৃহস্থের” সাধারণ সকল দায়িত্ই
পরম্পর সমানভাবে পুরণ করা হইতেছে। কার্ধিতঃ সংহতিশক্তির
অপরিসীম উপকারিতা এবং লাভালাভের সমতা-_উপলব্ধি করিয়
সকলেই হষ্টচিত্তে সঙ্ের উন্নতির জন্ত কার্ধ্য করিতেছে।
জমিদার মহাজনের ব্যক্তিগত হিসাবে কাহারও উপর উৎপীড়ন
নাই। পুলিশ চৌকীদারের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক মাত্র নাই। পরম্পর
ঝগড়া বিঝাদ প্রায় নাই বলিলেও হয় চাহ আছে, তাহার মীমাংসার
জন্য “আদালতঘর করিতে হয় না। গ্রামের সকল অবস্থ। যাহার!
৮৩
পলী-ী
সুপরিজাত, সেই সকল নেতৃস্থানীয় সালিশের দারা সকল বিষয়ের
স্থবিচার হইয়। থাকে !
কাহারও বেকার বসিয়৷ থাকিতে হয় না-_সঙ্ের কার্ধ্য ভি
পারিশ্রমিকে- সকলেই খাটিয়৷ খাইতে পায়। অনাহারে আর কেহ
মরিয়া যায় না-_সজ্বের দাতব্যভাগ্ডার হইতে সকলেই হুবেলা!
দুমূঠা খাইতে পারে। রোগীর চিকিৎদা ও সেবা, স্বাস্থ্োন্নতির
যাবতীয়, বাধ্যতামূলক শিক্ষালাভ, সর্বরিধয়েই মি্লাদগঞ্জ পরগণ!
এক মহান্ আদর্শ স্থাপন করিয়াছে।
এই ভাবে ছুই চারি বর পরে সেই প্রদেশে সজ্ঘের অর্থে পাট,
ধান, কাপড় এবং তৈলের কল স্থাপন করা হইবে, এবং অন্তন্ি শিল্প
বাণিজ্য ঘটিত উৎকর্ষ সাধন করাও সঙ্ঘের অন্যতম উদ্দোন্।
জগদিন্দুর ধনী দরিদ্র, শিক্ষিত্ত অশিক্ষিত, ভদ্দাভদ্র বিচার নাই।
'ষেখীনে যে সময় তাহার প্রয়োজন হয়, সদা হান্তমুখে তিনি ভেদ-
বিচার না৷ করিয়াই সেই সকল স্থানে উপস্থিত থাকেন। কোনও
'অভিম।ন বা মর্ধ্যাদাবিচার নাই--তাহার কাছে সকলেই সমান,
সকলেই তাহার ভ্রাতুস্থানীয়।
_ এ্রইরূপে তিনি পরগণাস্থিত সর্বজনের শ্রদ্ধা, ভক্তি ও স্নেহের
কেন্দ্রীভূত দেবাসনে স্থাপিত হইয়াছেন। সকল বিষয়ে প্রত্যেক
ব্যক্তিই তাহার বশীভূত ।
কেবল একটি বিষয়ে ্জাবর্ তাঁহার অবাধ্যতাচরণ করিম্নাছে।
তিনি ভোলানাথের প্রাপ্য মিটাইয়! দিব;র ভন্ত প্রথমেই-স
প্রজাসঙ্ঘকে অনুরোধ কাল! কিন্তু এ]রা তাহাতে সম্মত
৮৪
পর্লী-ভী
হয় নাই। তিনি মহা ত্যাগশীল কন্টাঁ পুরুষ, তাহার হাতে ছাড়িয়া
দিলে প্রজাবর্গের ইচ্ছান্গুরূপ কার্য্য হইবে না বলিয়া, _রাজস্বের
তহবিল সমসের খাঁর হাতে পৃথকভাবে রক্ষিত হইয়াছে।
প্রজাবর্শের ইচ্ছা, জগদিন্দুর ন্যাষ্য অধিকার ছাড়িরা দিয়া ক্ষমা
প্রার্থনা করিলে, তাহারা ভোলানাথের প্রাপ্য রাজস্ব মিটাইয়া দিবে
নচেৎ দেই বিষয়ে তাহারা কর্ণপাতও করিবে না ।
কাজেই চেষ্টা করিয়াও এই একটি বিষয়ে জগদিন্ু অকৃতকার্ধ্য
হইয়াছেন! নচেৎ একমাত্র তীঁহাঁরই আদেশে সঙ্বের অপরাপর
যাবতীয় কার্য নির্ব্বাহ হইয়৷ থাকে, এই কথা৷ বলিলে অত্যুক্তি করা
হয় না।
সকলেই জানে-_সর্ববত্যাগী, মহৎ, উদার, নির্লিপ্ত কম্মী তিনি,
পক্গপাতি বা স্বার্চিস্তা তাহার পক্ষে অসম্ভব। কাজেই তিনি যাহা
করেন তাহাই সর্বজনীন মঙ্গলকর, একথা সকলেই নিঃসন্দেহরূপে
মানিয়! লইয়াছে।
অন্দরে অনুশীলারও কর্মের বিরাম নাই। তাহার অধীনে
নারীসংজ্ব স্থাপিত হইয়াছে । যথানিয়ম নারী জাতির হিতকর সমস্ত
কা্ধ্য এই সঙ্ঘ হইতেই কর! হইয়া থাকে, তদ্দরুণ আবন্ঠকীয় অর্থ
মহাসজ্ব হইতে পৃথক ভাবে প্রদত্ত হয়।
এতদ্যতীত, অন্ুশীলাই জগদিন্দুর শক্তির মৃলীভূতা | তাহার সেবা,
যত্ত, প্রণয়-রূপ শ্গিগ্চ অমৃত-সেবনেই টুনির কর্মশক্তি প্রতিদিন
'বন্ধিত হইতেছে
জটল সমন্তা সমাধানে মন্ত্রণাদাতি তিনি; প্রতিকূল ঘটনার
৮৫
পনলী-ভী। .
সংজ্ঘটনে তিনিই--জগদিন্দুর প্রাণে নৃতন উগ্ভম ঢালিয়া দেন;
তাহারই নির্মন প্রেমামৃতপানে নবীন কর্মীর প্রাণে বিরামহীন কর্দশক্তি
স্থজিত হয়। বিশ্র/মের সঙ্গিণী, অবসাদে উৎনাহদাতৃ-_আশাভঙ্গে
নবপক্তিরূপে-__অনুগীলাই জগদিন্দুর মহান ব্রত সাফল্যের নিদান।
আজি প্রত্যুষে গাতোখান করিয়। সামান্ত জলযোগান্তে জগদিন্দু
পল্লীকেন্দ্র পরিদর্শনার্থ বাহির হইয়। গিয়াছেন। ঠাকুর বাড়ীর
নাটমন্দিরকেল্সে বিবিধ পুষ্পাঁভরণে সাজিয় হ্টামল ও দয়িতা নাচিয়া
নাচিয় গান করিতেছিল ; অদূরে অন্ধুশীলা গ্রাম্য মহিলাগণের মধ্যে
বসিয় নান! প্রকার শিল্পচর্চ। করিতেছেন। আজি সঙ্ঘস্থাপনের
ষাণ্মাসিক উৎসব। গ্রাম্য বালক বালিকাগণের বিগ্ভালয় বন্ধ, তাই
ঘরে ঘরে আনন্দোতৎসবের হান্ত কলরব উঠিয়াছে।
সহসা মুক্তকচ্ছ, ঘর্মাক্র-কলেবর এক দিব্যকাস্তি ব্রাঙ্মণ সেইখানে
উপস্থিত হইলেন । সুশিক্ষার প্রভাবে, খেল! ভুলিয়া বালক বালিকা-_
দেবকান্তি, দবিজবরের পদতলে নশিত হইল!
অন্তরের তাপ-_দেহের বেদনা ভুলিয়। অমনি ব্রাহ্মণ ন্গিগ্ণ, সুন্দর,
বিনয়-বিনত্্ শিশুদ্বরকে বক্ষে তুলির! লইর! সরল প্রাণে তাহাদিগকে
আশীর্বাদ করিলেন।
পরে জিজ্ঞাসা করি! যখন তিনি বালক বালিকার প্রকৃত পরিচয়-
প্রাপ্ত হইলেন, তখন তাহার বিশ্ময়ের সীমা রহিল না। আচারভ্রঈ,
শ্নে্ছম্বভাব--ভোলানাথ ! আর এই গ্তামল তার বংশধর! দগ্লিতার
পিতাকে তিনি ভালমতই চিনিতেন । তাই তিনি দয়িতাকে বলিলেন,
“তোমার বাঝকে ডেকে আন ত ম। 1৮,
৮৬
পলী-
বিমর্যমুখে বালিকা উত্তর করিল-_“তুমি ঠীঁকুরবাড়ীতে এসে
বোস, বাবা! ও বাড়ী নেই, দূরে কোথায় গ্রেছেন। নৈলে ডেকে
আনতে পারতেম |” বালিকা মনে করিল, “ইনি এসেছেন__বাবার
বাড়ী থাকাই উচিত ছিল ॥
“তোমার মা বাড়ী আছেন ত? তোমার র ঠাকুরম। ?” বলিয়া
রান্ষণ আদর করিয়! দরিতার চিবুকম্পর্শ করিলেন।
দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া! কুসুমকোরক-নিভনয়নে শিশিরাশ্র
নাখাইয়া মানমুখে বাঁলিক। বলিল-__“্ঠাকুরম! কাশী গেছেন। মা
আছেন_-তিনি কি আপনার কাছে বেরুন ?”
“আমার পরিচয় পেলে বেরুতে পারেন ।”
“বল “ঠাকুর মশায়” এসেছেন।” বলিয়! ব্রাহ্মণ দয়িতাঁকে বাড়ীর
ভিতর পাঠাইয়| দিলেন। শ্ঠ।মল কৌতুহলবশে বলিল, _-
“আপনি ঠাকুর মশায়? সকলেরই ঠাকুর মশায়? আমাদেরও
ঠাকুর মশায় আছেন. ঠাকুরমা বলেছেন_তিনিও আসবেন, আজ
কি কালের ভিতরই আসবেন। কত ফুলতুলে দিয়ে এসেছি-_তিনি
পূজা করেন কিন৷। আপনি পুজ! করেন ?”
বিল্ময়-নির্বধাক ব্রাহ্মণ কি বলিয়া যে এই সরল, উদার বালকের
সোৎম্ুক প্রশ্নের উত্তর দিবেন তাহ। ভাবিয়৷ পাইলেন না। তাহার
মনে হইল, সত্য উত্তর দিলে বুঝি এই সংসারজ্ঞানহীন শিশুরও প্রাণট
পুড়িযা যাইবে।
ঠাকুর মহাশয়ের আগমনসংবাদ শুনিয়। আসনহাতে--অন্থুশীল|
সেখানে আমিলেন। শাস্ত্রী মহাশয় হীন্তমুখে আসন পরিগ্রহ.করিলে
৮৭
পল্লী
অনুলীল৷ গল-লগ্ীকৃতবাসে তীহার চরণ-বন্দন! করিয়া মধুর বিন
বাক্যে কুশল প্রশ্না্দি করিলেন ।
অনেকদিন দেখাসাক্ষাৎ নাই বলিয়৷ তিনি তাহাকে চিনতে
পারেন নাই। শিষ্বের আশ্রমে, গুরুদেব অনেকক্ষণ তাই উপযুক্ত
সম্ভাষণ প্রাপ্ত হন নাই বলিয়া, অস্ুশীলা গুরুদেবের ার্জানাভিক্ষ
করিল।
অচিরে গুরুদেবের জন্ত সত্যতাম! দেবীর শয়নঘর যথাযোগ্য-
রূপে সঙ্জিত হইল। শ্রামল ও দয়িতা কোমর বাঁধিয়া গুরুদেবের
খুঁটিনাটি কার্য করিয়া দিতে লাগিল। শ্রামল নিজ হাতে ঠাকুর
মহাশয়ের জন্ত*তামাক সাঁজিয়৷ আনিল, হুইজনে মিলিয়! শাস্ত্রী
মহাশয়ের প্রকাণ্ড ভূ'ড়িশোভিত বরবপু তৈলাক্ত করিয়। দিল। বিমল'
আনন্দে সকল ছুঃথ তুলিয়া! ব্রাহ্মণ, শ্নানাদি সমাপনান্তে পূজা! আহ্িকে
মগ্ন হইলেন।
যথাকালে জগদিন্দু আসিয়া গুরুদেবের আগমনজনিত আহ্লাদে
বিহ্বল হইয়৷ গেল। ইতিমধ্যে নবগোঁপাঁলের অত্যাচার-কাহিনী সমস্ত
গ্রামে নান! বর্ণালঙ্কার সংযোগে ছড়াহিয়৷ পড়িয়াছিল। দলে দলে
স্ত্ীপুরুষ সকলে আসিয়! ঠাকুর বাড়ী ভরিয়! ফেলিল।
শীস্তিময়ী গভীর মনোছুঃখে সমস্তদিন ঠাকুরঘরে দ্বার রুদ্ধ
করিয়া-_কীদিয়া কাটাইয়াছেন। কাঁজেই আর. কেহ শ্তামলের,
খোঁজ করিল না। গ্ঠামল প্রায়ই ঠাকুর বাড়ীতে দয়িতার সঙ্গে
আহার করিত-_-আজ ছুইজনে পরম ভক্তিসহকারে ঠাকুর মহাশয়ের।
প্রসাদ পাইয়া ধন্য হইল।
পলী-গী
পূর্ব পরিচ্ছেদ-বর্ণিত ঘটনার অব্যবহিত পরে, গ্ভামল গল্পচ্ছলে'
ঠাঁকুরমাকে দয়িতাদের বাড়ী ঠাকুর মহাশয়ের আগমনের কথা
জানাইল। শাস্তিময়ী এখন জানিতে পারিলেন ফে, শাস্ত্রী, মহাশর,
তখনও গ্রাম ত্যাগ করিয়া যান নাই। অভূক্তা, অন্নাতা শান্তিময়ী--;
মান, অভিমান, সপ্তাব, অসস্ভাব, সকল তুলিয়া অমনি ঠ্ামলের হাত
ধরিয়া একেবারে ঠাকুর বাড়ীতে আসিয়! শীস্ত্রী মহাশয়ের পদ প্রান্তে
লুটাইয়া পড়িলেন। :
অধ্যাপকের ক্রোধ, বালুকার উত্তাপ তুল্য। তাহাদের, ক্রোধ,
যেমন সহজেই সঞ্চরিত হইয়! থাকে, আঁবার তেষনি অতি শ্ীদ্ব
শীতল হইয়া যায়।
বনুপূর্ব্রেই শাস্ত্রী মহাশয় সমস্ত কথা তুলিয়া, গ্রাম্য বিদ্যজ্জন-
মণ্ডলার সহিত বহুবিধ শাস্ত্রালাপে রত হইলেন) মন্নেহে শীস্তিময়ীকে
সাত্বনা দিয়া তিনি বুঝাইয়া দিলেন যে, গুরুশি্যসতবন্ধ ক্রোধ
অভিমানের অতীত-__সমুচ্চ, হুস্ম এক মহাঁন তত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত।
তাহার মনে মুহূর্তের জন্ভও ভোলানাধের অমঙ্গলকামন! জাগে
নাই। বিশেষতঃ মূর্খ, চাঁটুকার পরাশ্রিত নবগোঁপালকে তিনি
নিতান্ত দয়রপাত্র বলিয়াই মনে করেন!
শান্তিময়ীর বু অনুরোধে, ইচ্ছা সত্বেও-শান্্ী মহাশয়
ভোলানাথের .গৃহে পদধুলী দিতে পারিলেন না । কারণ, পরদিন
গ্রামান্তরে তাঁহাকে অপর কোনও শিষ্যগৃহে স্বস্তযয়ন করিতে হইবে।
অনুশীলা এবং জগদিন্দুর মিলিত উপরোধে শীস্তিময়ী ঠাকুর-
বাড়ীতে রন্ধনাদি করিয়া গুরুদেবের প্রসাদ প্রাপ্ত হইলেন।
৬৯
পললী-ী
তাহাদের আড়্বর্হীন ভক্তিপূর্ণ ব্যবহারে আজি জীবনের “প্রথম
শাস্তিময়ী পুত্রপুত্রবধূর অক্ুত্রিম সেবার পবিত্রতা উপলব্ধি
করিলেন!
ভোলানাথ ও পারুল তাহার পুত্র ও পুক্রৰধূতুল্য বটে_কিন্ত
ভর্টাচারী, বিলাসমগ্র তাহারা । এযাবৎ তাহাদের সেবা, শ্রদ্ধা ঝ!
যন্ত্র উগভোগ কবিবার সুযোগ শান্তিময়ী পান নাই।
পক্ষান্তরে সেবা, যত, শ্রদ্ধা, আপ্যায়ন--জগদিন্বুও অনুশীলার
স্বভাবসিদ্ধ প্রকৃতি । *ত্রমিত্রভেদ তাহর! জানে না। মাতৃস্থানীয়
'শীস্তিমনরীর চরিত্রের উচ্চ আদর্শ তাহীদের জান! ছিল। কাজেই
মাতৃড্ঞানে তাহার৷ শাস্তিমরীর অভ্যর্থনা করিলেন।
এইরূপে সেইদিন হইতে শান্তিমরী পরমতৃপ্তির সঙ্গে জগদিন্দু
এবং জন্ুণীলার সংসর্গ উপভোগ করিতে লাগিলেন। ক্রমে
তাহাদের ত্যাগ, তিতিগ্। এবং কাধ্যকুশলতা। দেখিয়া! তিনি সত্যই
সুগ্ধ হইয়া! পড়িলেন।
পী-ী
(৯ 9)
গাটো আর পারুলের মধ্যে মনোমালিন্তের ব্যবধাঁন উত্তরোত্তর
বাড়িয়াই চলিল। প্রকৃত দাম্পত্য-প্রণয় যে কি বন্ধ তাহা তাহার৷
কথনও উপলদ্ধি করে নাই। সম্ভোগলিগ্পা এবং উদ্দাম যৌবন-
চাঞ্চল্যের উপরই-তাহাঁদের বান্িক সক্প্রীতির সম্বন্ধ সংস্থাপিত
ছিল।
কাঁলআ্রোতে যৌবনের নদীতে ভাট! পড়িবাঁর সঙ্গে সঙ্গেই
দম্পতির কল্পিত গ্রণরজল তর অতীতের সহিত মিলাইয়। গেল।
আন্তরিক ভলবসার অভাব দিনের দিন সুপরিস্ফুট হ্ইয়া
উঠিল।
তদুপরি শান্তিম্ধীর গ্রাতি পারুলের ন্ভীজ--তাচ্ছিল্যে
ব্যবহার, নিঃস্বপ্রায় শ্তাটে। বরদাস্ত করিয়া উঠিতে পাঁরিতেছে না।
শান্তিমদীর সঞ্চিত অর্থ এবং নির্দয় বিষয়ীংশই শ্তাটোর ভবিষ্যতের
অবদক্ষন। |
মনে যাহাই থাকুক না কেন, এই অবস্থায় সামান্ত বিষয়বুদ্ধি_
সম্পন্ন ব্যক্তি মাত্রেরই শাস্তিমমীর একাত্ত বশীভূত হইয়৷ চলা কর্তব্য,
গ্তাটোর এই কথা বুঝিবার মত বুদ্ধি ছিল। এ
.. কিন্তু নিজ খেয়ালের চরিতার্থতা সাধন এবং উদ্দাম আরামের
জনুসরণ- ইহাই পারুল জীবনের চরম লক্ষ্য করিয়া লইয়াছে।
ক্কাজেই শ্াটো। বা শান্তিময়ী কাহারও মনম্তিসাধন করাও যে
৪১
পল্লী
তাহার সর্বতোভাবে কর্তব্য, সেই কথা সে তের .জও
ভাবে না।
এইভাবে আরও কয়েক মাস অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে।
. ইতিমধ্যে স্বামীন্ত্রীর মধ্যে নিত্য কলহ লাগিয়াই ছিল, ক্রমে সেই
কলহ প্রবলতর হইয়া পূর্ণ বিচ্ছেদে পরিণত হইয়াছে। আজ এক
মাসের অধিক কাল গ্তাটো, পারুলের মুখ-দর্শন করে নাই।
হ্রাটোর অনাঁদর উপেক্ষায় গর্বিত পারুল অত্যন্ত ত্রিয়মান ভাবে
দিন অতিবহিত করিতেছে। নির্জনে একাকী বসিয়া সে নিত্য
অতীত জীবনের সকল কথা উপ্টাইয়৷ পাল্ট।ইয়! ভাবিয়াছে এবং
অন্তরের মধ্যে অনুতাপের তুষানলের দাহিকাশক্তি অনুভব
করিয়াছে। কিন্তু অজানা, অহেতুক অভিমানে সে শ্ঠাটে বা
শাস্তিময়ীর কাছে মাঁথা নত করিবার সংসাহস সংগ্রহ করিতে
পারে নাই।
সামান্য একজন পরিচারিক। ব্যতীত পাঁরুলের পরিচর্যার নিমিত্ত
আর দ্বিতীয় প্রাণী কেহই নাই। কুলবধূর নিত্যাবস্যকীয় আহার্ধা
এবং পরিচ্ছদ ব্যতীত তাহার সর্তপ্রকার বাছিল্যখরচ বন্ধ করিয়া
. দেওয়া হইয়াছে। এবশ্রকার নির্ধ্যাতন এবং স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘ
বিচ্ছেদ-জনিত মনস্তাপে পারুলের উচ্ছ্খল চিত্তবৃতিগুলি ধীরে ধীরে,
নম্রতার ভাব ধারণ করিতেছে ।
আবছায়ার মত পারুলের মনে হইল, বুঝি অবাঁধ স্বাধীন]
অপেক্ষা পাত্রভেদে অধীনতার মধ্যে উপভোগ্য কিছু আছে;,
বুঝি উদ্দাম উচ্ছঞ্খল জীবনের আবরাম-_বিত্রীস্তির নামান্তর মাত্র),
৯২.
পল্লী-ী।
সমাজ ও সংসারের চিরন্তন বাধ্যতামূলক নিয়মিত নির্ভরশীলতা
মধ্যেই বুঝি সত্য সুখের নিদান নিহিত আছে, কিন্তু বস্ত এবং পাত্র
বিশেষের মত.পারুল ভাঙ্গিতে পারে___মচ্কাইতে চাহে না।
পক্ষান্তরে আশৈশব চরিত্রহীন, হেয় স্বার্থপর, কুটিল শ্যাটো জীর্ণ
বন্ত্রধণ্ডের মত নিঃশেষিতগ্রায় রূপ-যৌবনা, সম্তোগ-সঙ্গিনীরূপা
'গৃহিনীর কথা ভুলিয়! গিয়াছে। নির্ধাগোন্ুখ জীবনের অবশিষ্ট সুখের
দিনগুলি পূর্ণমাত্রীয় উপভোগ করিয়া লইবার নেশায় ভরপুর শ্তাটো,
তাই নৃতন আরাম উপাদানের সন্ধানে ব্যাকুল হইয়া কোনও প্রকারে
দিন কর্তন করিতেছে।
শ্নেহান্ধত! বশতঃ বুদ্ধিমতী শাস্তিময়ী হাটোর চরিত্রের প্ররৃত-
স্বরূপ- আবিষ্কার করিতে পারেন নাই । কিন্তু নারীর ছুংখ নারীই
বুঝিতে পারে ! শান্তিমন্্ী শ্যাটোকে পুভ্রাধিক স্নেহ করিতেন, সেই
ন্েহের মধ্যে স্বার্থচিন্তার ভাজ ছিল না।
পুক্রাধিক ভোল|নাথের ধর্পত্তি পাক্চল তাই াস্তিমদীর একাস্ত
ন্নেহের পাত্রী। তাহার শত দোষ তিনি *্বয়ঃস্ুলভ চপলত৷ বলিয়াই
উপেক্ষা করিয়! আসিয়াছেন।
আত্মনির্ভরশীল শান্তিময়ী কখনও বধূর সেবার প্রত্যাশা করেন
নাই, তাই সেই অভাবও তিনি অন্ুঙব কারে পারেন নাই। তিনি
চাহেন, বধূর সঙ্গে শ্তাটো পবিত্র দাম্পত্যগ্রণ/নথথে সংসারংশ্্ পালন
করুক) তাহার ক্ষুদ্র জীবনের চতুর্থ পর্য্যায়ের দিনগুলি কোন প্রকারে
কাটিয়৷ যাইবে।
কর্তা মধবগেবিন্দ মুখোপাধ্যায় মৃত্্ুক।লে নিখুঢি গে সমস্ত
৬৩
পল্লী
বিষয় সম্পত্তি শীস্তিমদ্নীকে উইল করিয়া দিয়া যান। মাঁতামহের'
জীবদ্শায় ভোলানাথের মাত বিয়োগ ঘটে, কাজেই আইনত কর্তার
বিষয়ে ভোলানাঁথের কোনও দাঁবীই নাই।
আইন অনুসারে কর্তার যোলআনা সম্পত্তি জীবনন্বতথে পা্িমনী
দেবীরই গ্রাপ্য। সেই স্বত্ব প্রবলতর করিয়া কর্তা দান বিক্রয়ের সম্পূর্ণ,
অধিকার শাস্তিময়ীকে দিয়! গিয়াছেন।
কর্ত/র মৃত্যুর পরে শাস্তিময়ী যথারীতি সেই উইলের প্রবেট গ্রহণ
করিয়াছিলেন । কিন্তু 'অচিরে এক উচ্চতর ভাবের প্রেরণায় তিনি সেই'
কথ! গোপন রাখিরা, ভোলানাথকেই বিষয়ের অর্দাংশের ন্তাষ্যাধিকারী
বলিয়া! প্রচার করেন ।
_... ভোলানাথ শান্তিমম়ীর পরম স্বেহেরপাত্র। পুল্র নির্বিশেষে
শান্তিমরী আশৈশব ভে।লানাথকে প্রতিপালন করিয়ছেন। অবশেষ
শান্তিমদ্রী তাহার সমস্ত বিষয়ই ভোলানাথকে দিয়া যাইবেন, এই
সম্বপ্পও তিনি পূর্বেই স্থির করিয়াছিলেন ।
তাহার দান অপেক্ষ৷ কর্তার উত্তর-অধিকার-স্থত্রে বিষয়প্রাপ্তি,
ভোলানাথের অধিকতর গৌরব ও শ্াঘার বিষয়। এই ভ্রান্ত ধারণার
বশবস্তিনী হইয়া স্েহণীলা শাস্তিময়ী, ভোলানাথকে কর্তার উত্তরাধিকারী
রূপে স্থাপিত করিয়াছেন। | |
কার্তার উইলের বিষয় শাস্ত্রী মহশয় এবং অপর একজন বিদেশী
বন্ধু বতীত আর কেহই অবগত ছিলেন না । প্রবেটগ্রহণ ব্যাপারটাও
শান্তিমদী কৌখলে গোপন রাখিয়াছিলেন ।
শান্তিময়ীর সৌভাগ্যক্রমে জগদিন্দুও এত বড় ব্যাপারটার স্থযোঁগ
৯৪
পল্ল্লা-ভী।
গ্রহণ করেন নাই । আইনজ্ঞ উকীলগণের মিলিত অনুরোধ উপেক্ষ।
করিয়া, জগদিন্দু ভোলানাথের উত্তরাধিকার সম্বন্ধে আইনের আপত্তি
উত্থাপন করেন নাই। তাহার স্থক্্ সদসৎ বিচারবুদ্ধি ও আত্ম-
মর্ধযাদাজ্ঞান অন্য কোনও যুক্তি তর্কের বাঁধ মানে নাই।
"মাধব গোবিন্দ বাবুর দৌহিত্র সে-_তাহার বিষয়ে ভে|লানাথের
সম্পূর্ণ নৈতিক অধিকার আছে। সেই অধিকার অস্বীকার করিয়!
ক্ষু্ অন্তঃকরণের পরিচয় দিব না।”
এই বলিয়া জগদিন্দু এত বড় একটা মাহীস্ত্র হাতছাড়া করিয়া
দিয়াছেন ।
_.. শ্যাহা সত্য তাহা চিরদিনই সত্য ।” এই ধারণার বশবর্তী হইয়া
ভগমিন্দু ভোলানাথের মোকদমার মূল বিষয়ীভূত জাল দলিল গুলির
কৃত্রিমত। সগ্রমাণ করিবার জন্তই এতগুলি মোকন্দমা করিদ্বা ফলে
দরিদ্য বরণ করিয়া লইয়াছেন ।
সত্য মোকদন!র পরাজয়ের পর জগদিন্দু বুঝিয়াছেন আদীলতে
স্থবিচির পাঁওয়! বায় না। তাই একটা প্রবল বিতৃষ্তার বন্তা আসিয়!
তাহার বিষরবৈরাগ্য জন্মাইরা দিরাছে।
পন্মান্তরে পত্রির নহিত বিচ্ছিন্ন হইর! শ্তাটো একাকী সকল
বৈধিক দুশ্চিন্তার ভার বহন করিতেছে ।
শরত্তিময়ী * শ্তটোর অবস্থ। দেখিয়া শুনিয়া বড়ই ছুর্ভবনায়
পড়িরাছেন, কিন্তু প্রতিবিধানের কোন উপায় নির্ধারণ করিয়া
উঠিতে পারেন নাই।
ক্রমে চৈত্র মাস আপিয়া পড়িল। সদর খাঁজানার কিস্তির
৪১৫
পল্লীশ্ত্ী
তারিখ ও ঘনাইয়া আসিয়াছে শ্তাটোর তহবিলে সামান্ত কয়টি
টাকাও আর অবশিষ্ট নাই। সেই দিনকার ঘটনার পর এই অবস্থায়
মাসীমার সাহাষ্য চাহিবার সাঁহসও ভেলানাথের নাই।
নবগোপাল ভগিনীর আশ্রয়ে তখনও ভোলানাথের গৃহেই, বাস
করিতেছিল। তাহাকে তাড়াইয়! দিয়! মাসীমার অমন্তষ্টি বিধানের
কল্পনাও তাই সফল হয় নাই।
ভাবনাকাতর ভোলানাথ অন্দরের বাগানে এক লতাকুগ্রকিছায়ে
বসিয়া মগ্পান করিতে করিতে ০০০ এ ডুবেছি-না
ডুবতে আছি!”
মামলা মোকদ্দমা আর বড়মান্যীর কুহুক নিগ্রীন
তিন চার লক্ষ টাকা কয়েক বৎসরের মধ্যে নিঃশেষে খরচু করিয়া,
আঙজি ভোলানাথ লক্ষাধিক টাকার দেনদার হইয়া পড়িয়াছে।
কয়েক বৎসরের জন্ত আরব্য উুঁপন্তাসিক গোছের একটা সংক্ষিপ্ত
নবাবী করিয়া, আজি ভোলানাথের জীবনমধ্যান্কেই সন্ধ্যার অন্ধকার
ঘনাইয়া আসিয়াছে; ভোলানাথ তাই ভাবিতেছে,_
“্বাস্ এক রাত্তিরের নবাবী-_ভোর না হ'তেই শেষ হ'য়ে গেল!
ভোরের বেলায় চক্ষু মেলে দেখছি, সেই ভবঘুরে কুলীনপুত্র
ভোলানাথ আমি। তাসের খেল! ঘর হীওয়ায় উড়ে গেল ।”
অনেকক্ষণ ভোলানাথ এই ভাবে ভাবনামগ্র ছিল, ইঠাৎ--
কে বলেরে গ্যাম! আমার-_
শিব দিছে চরণতলে |
অশিবনাপী, একা বামা_
প্রবল নাশে প্রলয় জলে !!
৯৬
গহনী-ী।
গাহিতে গাহিতে ভজহরি আসিয় তাহার চমক ভাঙ্গিয়া দিল।
.উদ্মাদনাময়. সঙ্গীতের নুধাতরঙ্গে শ্তাটোকে ডূবাইয়। রাখিল। সঙ্গীভ
শেষ হইল। কিন্তু সেই ন্ুরলহরী বাতাসের সঙ্গে মিশিয় উদ্ভানময়
একট! সুমধুর উন্মাদনা জাগাইয়৷ তুলিয়াছে। অনেকক্ষণ ধরিয়া!
'ভুইজনে সেই সুদুরবিস্তৃত ভাবলহরীতে নিমজ্জমান হইয়া রহিল।
অবশেষে দীর্ঘ নিশ্বাস সহকারে সন্গেহে ভজহরির হাত ছু'খানা
'নিজের হাতের মধ্যে তুলিয়া লইয়া শ্তাটে। বলিল,-_
.“ভজহরি সতাই কি তুমি পাগল ? 4
তাবহীন উদাসৃষ্টি__অদূরে দেবদার-তরু-শিখর-সমাসীন, চুন,
চুত্বক-সব্স্' যুগ্ম বিহঙ্গের দিকে নিবদ্ধ করিয়া ভজহরি বলিল--“পাগল
নয়.কে বাপু?
্তাটো বুঝিল না যে এই উক্তি সত্যই পাগলের, না সত্যানুসন্ধিৎস
দার্শনিকের। অন্ত মনফে সে আবার প্রশ্ন করিল/__
"সবাই যেমন পাগল-_তুমিও কি তেমনই পাগল ভঙ্গ?
“তা জানি না৷ বাবা!” বলিতে বলিতে ভজহরি সুদূর প্রান্তর-প্রান্তে
রক্কিম গগনের পটে বিশ্বশিল্পীর অপুর্ব শিল্পচাতুধ্য মনোযোগের
. সহিত অধ্যয়ন করিতে লাগিল।
শ্তাটো তখনও স্বীয় ভাবনায় বিভোর । দিদার
করিল-_“ন৷ ভঙ্জু তুমি পাগল নও”
.. স্বাগতম্বরে ভজহরি--“ইস্! বেটা যেন ডাক্তার .সিমসনের
ইষ্টিগুরু এসেছেন। সবাই বলে পাগল, তবু পাঁগল নই!” বলিতে
৯৭
' শানীপ্ী।
বলিতে এক অজানা সঙ্গীতের স্থর_গুন্ গুন্ ভানে, ক্জাইয
₹গাত্রোখান করিল।
শ্তাটো-বাগ্র, আনতবৃষ্টিতে ভজহরির পানে চাবি তাহার
হাতখানি ধরিয়া বলিল”_“ষেওন! ভঙ্ভু! দীড়াও। সত ভাই
সংসারে সবাই পাগল__-আমিও একটা মস্ত পাঁগল 1
“বেশ হাত ধরাঁধরি কোরে গারদে যাই চল।৮ বলিতে বলিতে
ভজহরি এক বিরাট হাসির তরঙ্গ আকাশে ঢালিয়৷ দিল।
স্টাটো উদ্দাস দৃষ্টিতে দূরে--কাঁল মেঘখণড সমগ্টির তলে অস্তাচল-
গাম়ী দিবাকর-বিকীর্ণ লোহিত আসন্তরণের শোভা দেখিতে দেখিতে
বলিল-_“্তা কি হবে ভঙ্ছু-_এই মহ! গারদ ছেড়ে, ভাবের গারদে
কি যেতে পারব ভু?”
“গ্যাথ, ভেবে গ্ভাখ--আমার অনেক কাঁজ। পাগলা ছেলের!
_ শী খানা ঝেড়ে ঝুড়ে তক তকে করে তুলেছে--দেখবো না? তাদের,
গান গেয়ে শোনাব না” ঝলিতে বলিতে ভজহরি দ্রুত প্রস্থান করিল ।
_.. মেঘমন্দ্রের গভীর নিধোষ-বঙ্কারে তজহরির ভক্তি উৎদ-_-
হদে আয় ম! সর্বনাশ
প্রলয়বিষাণ উঠল বেজে--
তড়িতের শিহরণ সহ শ্যাটোর হৃদয়তন্্ীতে প্রতিধ্বনিতি হইয়া দুরাকাঁশে
লীন হইল। . ৃ্
ঠ্টাটে। ভাবিল--“ভক্তা পাগল, আমি পাগল- জগদাও পাগল।
ভজা। পাগল ড়াবে-জগদা পাগল প্রাণের আকর্ষণে আমি পাগল
স্বার্থের নেশায়! সমুদ্রপ্রমান প্রভেদ |”
৪৮
পল্লীনভী।
শ্তাটো বিরাট ভাবনাবর্তে পড়িয়। গভীর মনোবেদনার দীর্ঘ-
নিশ্বাস ত্যাগ করিল। এমন সমর শাস্তিময়ী সেইখানে আসিয়া
ডাঁকিলেন্”-
ভুলো!
দম্াসীমা !” বলিয়া শ্তাটো ভক্তিপূর্ণ দৃিতে তাহার পানে চাহিল।
“সদরে কিস্তির টাক পাঠিয়েছিস ?” শ্েহার্ঘ কিন্ত দৃঢস্বরে প্রশ্ন
করিয়া, শাস্তিময়ী শ্তাটোর প্রত্যুন্তরের প্রতীক্ষায় ধাড়াইয়া রহিলেন।
একটু লজ্জিতভাঁবে ইতন্ততঃ করিয়া শ্তাটো, ভগ্ন বিচ্ছিত্র ভাবে
বলিল।-_
“কোথেকে পাঠাব মাঁসীম। ? প্রজার বিদ্রোহ সমাঁন ভাবে চলছ্ছে,
পাইক গোমস্তা অধিকাংশই চাকুরী ছেড়ে চলে গেছে। ক্যাশে বুঝি
আজ আর একশ”টি টাকাও অবশিষ্ট নাই! এত টাক। কোথায়
পাৰ মাসীমা ?
সুমধুর অভিমান-ব্যঞ্কক তিরক্কারের স্বরে শীস্তিময়ী বলিলেন”
“জ্মিদীরী লাঁটে উঠেছে, আর তুই বাগানে বসে এখনো. এঁ ছাইপিঙি
গিলছিদ? লজ্জা করে না ভুলো ?”
অতি সত্য কথাই শাস্তিমম়ীর কঠে বাঁজিয়৷ উঠিয়াছে। শ্তাটে!
আজি অনেকদিন পরে স্বীয় অবস্থাবিপর্যযয়ে লজ্জিত হইয়াই, সে লজ্জা
ঢাকিতে আক বিষ পাঁন করিতেছিল। |
মগ্ধপের প্রর্কৃতির বিশেষত্বই হচ্ছে এই যে, অচিরে মগ্তপানের
বিষময় ফল বুঝিতে পারিয়াও, অধিকাংশ মগ্তপ-স্বীয় জঘন্য লোক
লজ্জা ঢাঁকিয়। রাখিতে আবার সেই বিষ পান করিয়া অজ্ঞান হয়।
৯৯
শশর্ী-হা।
জীবনসংগ্রামনিম্পেষিত কন্মী যেমন--পীড়ন-পিই চিত্তের, রি
"বশে, অলস নিদ্রায় জড়তা আশ্রয় করে।
হাটোকে নীরব দেখিয়! শাস্তিময়ী আবার দেন.
আমি তোর কে?”
আবেগরদ্ধ কে এবার শ্তাটো বলিল, -“তৃমি ? তুমি আমার মা!
আমি অতিবড় পাষণ্ড? তবু আমারই জন্ত ষে কত বড় একটা স্নেহের
ভাগ্ডার নিঃশেষে অপব্যয় কচ্ছ_-তা আমি বুঝতে পারি মাসী মা ।”
“তাই যদি হয়, কেন আমার কাছে টাঁক! চাসনি ?” বলিতে
বলিতে অভিমানিনীর ছুটি চক্ষু বহিয়৷ দর দূর অ্ধারা ঝরিয়া পড়িল।
ধতদিন সেই সাহস ছিল, শ্তাটে। মাসীমাতার অনুগ্রহ ভিক্ষা
করিতে লজ্জান্ুতব করে নাই। কিন্তু কার্ধয-করণে-__ স্বেচ্ছায়, স্বকর্শ
বোধে এবং অনিচ্ছায় পরকর্ধফলে, শ্তাটো৷ সেই সাহস হারাইয়া
ব্সিয়াছে। তাই ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া সে অবনত মন্তকে
বলিল,__“সেই মুখ আর যে আমার নেই মাসীম! !”
বুদ্ধিমতী শাস্তিময়া বুঝিলেন বধূর ব্যবহারের জনা লজ্জায়
হাট! তাহারও কাছ হইতে দুরে সরিয়া বসিয়াছে। মাতৃত্বের
পুর্ণ গর্বভরে তাই তিনি- শ্যাটোর মন্তকে হাত বুলাইতে বুলাইতে
.বলিলেন-_
“বৌকে আমি মাপ করেছি ভুলো, তুইও তাঁকে মাঁপ কর।
বৌ ছেলে মানুষ ; বয়স হ'লে অমন থাকবে না।” প্রবল চেষ্টায়
“পআত্মসংতা হইয়। তিনি আবেগভরে আবার বলিতে লাগিলেন,
প্চল ভুলো! ক; 2 আাম।র বাপের জমিদারী লাটে বিকিয়ে
১৪৩
ল্গী-গ্রী
যাবে, আমি কি তা দাড়িয়ে দেখতে পারি? আমার কি একটা
ছেলে, একটা মেয়ে বা আর কেউ: আছে রে--যে তোদের উপর
রাগ করব আমি? চল সদরে লোক পাঠাবি চল 1”
ছুই বিন্দু অশ্রু মোচন করিয়। শ্নেহময়ী ধীরে অন্দর অভিমুখে
চলিয়া গেলেন। অন্ধ-ক্নেহ, পদপ্রতিষ্ঠার মাঁয়ামরীচিকা, পিতৃ-
কুলের গরীম। মণ্ডিত যশোলিগ্লায়-_সত্যই শীস্তিমন্্রী জীবনময় এই
্রাস্তির পথেই চালিত হইয়াছেন।
গ্রাটোও জানিত তাহার শ্নেহের উপরোধে শাস্তিময়ী নিজের
বিবেকের আদেশ পর্য্যন্ত অবহেল৷ করিয়াছেন।
মায়ের অধিক স্নেহ ভালবাসা দিয়া আজন্ম তিনি তাহাকে
প্রতিপালন করিয়াছেন। প্রতিদীনে শ্যাটো ক্বেচ্ছাচারিতা-বশে,
তাহাকে কত মনোছখে দিয়াছে গ্তাটোর প্রাণে অন্কুশোচনার ফিন্কি
জ্বলিয়৷ উঠিল! অমনি ভ্রান্ত যুবক সেই আগুন নির্ধানাশে তরল
মদিরাপ্রবাহ দগ্ধোদরে ঢালিতে লাগিল।
আস্তে নীরবে পিছন হইতে আসিয়া দয়িতা শ্ঠাটোর হাতখানা
আপন কুস্থম করপুটে চাপিয় ধরিয়! সুমধুর বাঁশৰীর সুরে বলিল,_
“ছি! জ্যাঠামশায়--আবার এগুলি খাচ্ছ? ঢেলে ফের--সেই
যে সেদিন বলেছিলে আর খাবে ন! ?”
াটোর দ্রবীভূঙড প্রাণে বালিকার তীক্ষ তিরস্কার-্পর প্রবেশ
করিল। অধর প্রান্ত হইতে স্থ্রাপাত্র নামাইয়! সে বলিল”৮_
“কুকুরে যে অভক্ষ্য খেতেই ভালবাসে মা! বারণ করলে
কি সে শোনে ? |
5
প্লীনী
বিন্ময়-বিহ্বল বালিকা স্থির গম্ভীর ভাবে বলিল, বেদ বললে!
কুকুরে যা খায়, তা? বুঝি মানুষে খাবে???
গভীর দীর্ঘ নিঙ্বাসে বুকের পাঁজর কাপাইয় দি ঠ্যাটো
বলিল, _
“যার! মানুষ, তার কি এ খায়? তবে হাত, পাঃ মুখ, চোখ
থাকলেই ত মানুষ হয় নামা!” বলিয়া শ্তাটো বিরাট দুঃখে
অধোবদন হইল। অন্তমনক্ষে বলিল “তোর বাবা কি এখায়?
খায়না-_-একটা সত্যিকারের মানুষ কি নাঁ_তাই খায় না ।”
এতক্ষণ শ্তামল ভয়ে ভয়ে দূরে দীড়াইয়াছিল। শ্ঠাটোর কথায়
সাহস পাইয়া কাছে আসিয়৷ সে বলিল,
পতুমিও কেন কাঁক। বাবুর মত মান্গুষ হওনা ? বরন
জান? রাজোর মানুষ নিয়ে কাস্তে, কোদালী নিয়ে লেগে গেছেন।
সকলে কত টাকা তার হাতে দিয়ে যাচ্ছে; কত ছুঃবীকাঙ্গীলী
পেটভরে খেয়ে কোমর বেঁধে ক্ষেত কুপিয়ে তুলোর গাছ বুনছে;
লেখাপড়া কচ্ছেন_-এর ওর তার ঝগড়া! মিটিয়ে দিচ্ছেন__ঠাকুর
বাড়ী নিত্য কত লোক আসে জান ?”
সকলই গ্ঠাটো শুনিয়াছিল। মনে মনে হ্টাটো জগদিশুর
উদ্দেশে মচজ্র প্রনিপাত করিয়াছে; কিন্তু সংস্কারবশে কার্যত; সে
দন্ত, অভিমান, কুটিলতার হাত এড়াইতে পারে নাই। তাই সে
ভাবিল__
“মানুষ হব? এবারে নয়--মার জন্মে এই পশ্তত্বের কাঠামখানা
পাণ্টে এলে যদি মানুষ হতে পারি ।”
১৪২
প্লী-ভী।
শ্তাটো অনেকক্ষণ ধরিয়! ভ্রিয়মানভাবে চিন্তা করিতে লাঁগিল।
মৌনাঁর বেদনা স্বতাই শিশুর প্রাণ গলাইয়া দেয়। তাই তাঁহাকে
একটু প্রফু্ন করিবার চেষ্টায় দয়িতা বলিল,
একাল বাব! একখানা গান বেঁধে দিয়েছেন-_ভজুদা”মশীয় কেমন
নেচে নেচে সেই গান গেয়ে হাঁজার লোককে মাতিয়ে তুল্ছিল।
শোনবে জ্যাঠামশায় ?”
ঠাটে৷ নীরব রহিল। সাহস পাইয়া! তাই শ্ঠামল ও দয়িতা
বসন্তকোকিল-দম্পতির সমস্ত মাধুরীম কণ্ঠে ঢালিয়া, নাচিতে নাচিতে
'গাহিতে লাগ্লি-_
আশিন মাসে দেশট। জুড়ে
বাল্পে কেন ঢাক?
সেফ(লী ক্যান্ গন্ধ ছড়ায়
পন্মে শিশির রাগ ?
. রাঙ্গা কাপড় পরে- পাড়। উপল করে
| বালির বৃকে, কিবা গুখে-_ফুটায় ফুলের ঝাক্ |
বেঙ্গল! মায়ের কেঙ্গল! ছেলে.
ভার কেন এই জাক।
ঝুট। গয়না রাঙ্গা দিয়ে মাটির পুতুল গড়ি
্ বলি দেয় ক্যান ছাগল, ভেড়া, মহিষ সারি সারি ।
বিরাট মাটির মা বয়েছে --শোনেন! ভার ডাক !
জাপন জীবন বলি দিয়ে বাজায়ন! ক্যান শাক--
বিশ্বের চোখে লাগিয়ে বিষম তাক!
বসন্ত সন্ধ্যায় আকাশের ঈশান কোণে তখন ঘোর কষ্ণমেধ
১৯৩
প্জীব।
স্তবকের অঙ্গ বিচি কালবৈশাখীর বিছবাচ্চকের সঙ্গে প্রলয়
ইভরব বজ্জপাতের বিপর্যয় বাগ বাঁভিয়! উঠিল। শিশু গ্রাহিতে .
গাহিতে অনৃশ্ত হইল, কিন্ত শাটোর অন্ধকার অন্তরে কালটোশাবীর
সই গর্জন পশিব কিনা বোঝা গেল না।
€ ১০ )
বৎসর ঘুরিয়া৷ আসিল। মিয়াদগঞ্জের ছত্রহীন ভূপতি জগজিন্দুর
অকরান্ত চেষ্টা এবং পরিশ্রমের ফলে আজি পল্লীলক্মী এক অপূর্ব
দিব্যরূপে গৃহস্থের কুটীর ছুয়ার উত্তাসিত করিয়া দীড়াইয়াছেন? ধানের
ক্ষেতে, বন-নিকুঞ্জে, জলে, ফুলে, পল্লীপথে, পুকুর ধারে, সর্বত্র এক
ভুবনজোড়া জ্যোতিঃ ফুটিয়। উঠিয়াছে।
সংক্ষেপ এক বৎসরের সাধনায় পল্লীনিবাসী প্রতি গৃহস্থের মুখে
আবার অতীতের হাঁসি ফুটিয়। উঠিয়াছে। ভ্রাতৃবিরোধ তিরোহিত-
প্রায় মহাজনের অত্যাচার নাই, জমিদারের শাসন্দও ভাঙ্গিয়া
গিয়াছে।
এই রূপে পল্পীলক্্ীর সুমহান যজ্ঞের সমস্ত উপচাঁর সংগ্রহ
করিয়৷ এক বিরাট আনন্দে জগদিন্দু তাহার কল্পিত পলীন্বরগ-স্ষ্টির
অদূর সাফল্যের প্রতীক্ষায়, দ্বিগুণ উৎসাহে কর্মআোতে গা ঢালিয়া
দিয়াছে।
পল্লী-ী
পল্লীভাগ্ডারে যথেষ্ট অর্থ সঞ্চিত আছে) বিভিন্ন তহবিলে বিভিন্ন
: হিসাবের এবং অনুষ্ঠানের ধনভাগার হধারীতি রক্ষিত হইতেছে।
. বার মাসের বিবিধ শম্তে পল্লীগোল! পূর্ণ রহিয়াছে---অসম্ভব *কল্পন।
আজি, জীবন্ত সত্যে পরিণত হইয়া বিস্তৃত পন্লীকেন্দ্র মহানন্দের পুত
কন্ত তথাপি অনুশীন্বার প্রাণে নিয়ত একটা অতি বড় হুঃখের
ধারা প্রবাহিত রহিয়াছে ।
সত্যভাম! দেবী গভীর মনোবেদনায় তাহার শৈশবন্বর্গ পল্লীনিবাস
ত্যাগ করিয়৷ গিয়াছেন। শত কাকুতি মিনতি, প্রার্থনাপূর্ণ পত্র
লিখিয়াও অনুশীল! তাঁহাকে দেশে ফিরাইয়৷ আনিতে পারে নাই।
সত্যভামা জানেন ন! যে, তাহার “অপদার্থ পুত্র আজি তাহার জন্ম-
ভূমিকে সত্যই স্বর্নরূপে গড়িয়া তুলিতেছে। ৃ
উকি মাঁরিতেছেন। দুরে ফুলবনের আর্্ পত্রপুষ্পস্মলিত ঝারণার
জলে ন্নান করিয়! জীবন্ত কুন্ুম শ্তামল ও দর্রিতা-_নুমধুর কলোচ্ছাসের
সহিত পুষ্পচয়ন করিতেছে ।
অন্দরের বারান্দায় বসিয়া জগদিন্দু ও অস্ুুশীলা, শিশুদয়ের
কৌতুক আনন্দ উপভোগ করিতে করিতে নানা! প্রসঙ্গের আলাপে
মগ্ন ছিলেন। কথাপ্রসঙ্গে অন্ুলীল৷ মাতার কথা উল্লেখ করি৷
লন “এত আনন্দেও বড় ছঃখ যে ম| এলেন না_তিনি এখনো!
এসে দেখলেন না, যে আমাদের উন্মত্ততাঁর ভিতরও কেমন একট!
সৌন্দর্য্য আজ মূষ্তি লয়ে ফুটে উঠেছে-_তীহারই পল্জীতীর্৫থঘে।”
১০৫
পন্লী-ী
সমান বেদন! সবলে গোঁপন করিয়! জগদিন্দু বলিলেন, “মা. নিত্যই
বলতেন “দেশে যার! উঠতে বদতে সেলাম কণরত, তাদের: চক্ষের
উপর হীন হয়ে থাকতে পাঁরি না মাকিন্ত জানতেন 'মা, যে
সেই সেলাম__ উৎগীড়িত, রুগ্ু, শীর্ণ, বৃভুক্ষু প্রজা পুঞ্জের বুকের গাজর
ভেঙ্গে বেরুত-_একটা প্রকাণ্ড আর্তনাদের মত, উপহাসের মত।
আর আজি কেহ আনাদের মিথ্যা কৃত্রিম সঙ্গানের সেলাম দেয় ন|
বটে, কিন্তু ঘা দেয়-_তা দি তাদের ৭ অন্তর থেকে । ভালবাসা
তার নাম--সরলতা ভার প্রন্কৃতি !” ৃ
-.: ক্উঠিতে বসিতে সর্বত্র সর্ধবিষয়ে পরের অধীন যাহারা, বিষয়
সত্যই সেই জাতির পক্ষে একটা প্রকাণ্ড উপহাস! প্রকৃতির দান
জলে বাতাসে যেই অভিসপ্ত উতপুজের অবাধ ভোগাধিকার
নাই) অসীম, অনন্ত, সদাঘুক্ত লবগ-বাঁরিধির লবগ আহরণেও যেই
'অসভায় জাতি প্রবলের আছেয়ান্ত্র মুখে-_পত্ড পঙ্গীর অধম হীন
অসহায়ভাবে প্রাণবিসঞ্জন করে -সুখ, সম্বদ্ধি, পদপ্রতিষ্ঠা'--সেই
জাতির পক্ষে যে একটা কত বড় প্রহসন, তাহ। বুঝিবার শক্তি
তাহাদের নাই। রোগী আপন রোগের নিদান নির্ণর করিতে
পারে না! |
গগৃহ্স্থের খেয়ালের উপর বার জীবন-মরণ নিতা নির্ভর করে, সেই
পারাবত, হংস, কুকুট ছাগাদিও আপাতমধুর আপ্যায়নে কল্পিত সুখে
হাসির তরঙ্গে ভাসিয়া --গৃহস্থের আশে পাশে লেজুড় নাড়ি! বিচরণ
করিয়া থাকে । চাকৃচিক্যময় স্বর্ণথচিত মখমলের উদ্দি-পরিহিত
গোলামের জাতির মুখে তাই বুঝি হাঁসির তরঙ্গ বহিয়। যায়!
১০৬
পঙ্ী-ভী।
“এ দেশের চিন্তাধারা, শিক্ষাপ্রণালী-_সকলই জীবনপাঁত করিয়!
সুধু পরের মুখে অমৃতগ্রাস তুলিয়া দিবার পথ স্থগম করিয়া লইবার
জন্য পরিচালিত। নৈলে, প্রতি বদর অনাহারে যেই দেশের লক্ষ
দরিদ্র ক্বক অকালে মহাঁকাঁলকে বরণ করিয়। লয়--সেই দরধিচীর
ংশধররাই আবার নিজের হাতে নিত্য শতগোল। ধান জীহাজ
ভরিয়। বিদেশে পাঠাইতে পাঁরিত কি?
'অপরের ধন, মান, প্রাণরক্ষার্থে সাত সাগর-পারে মরিতে যায়
যাহারা, তাহাদের বুকের উপর উগ্ভত সঙ্গীন, বিস্ফোরকের প্রেতকীস্তি
অভিনয় করিতে কিন্ত, সেই উপকৃত মহাজাতির কঠোর বিবেকে
একটু আঁচরও লাগে না । তবু তারাই আবার আব্দেন নিবেদনের
অগ্রলি লয়ে সেই জাতির পায়ে লুটারে পড়ে!
“জরে, বিুচিকায় যে দেশের লক্ষ অধিবাসী নিত্য পরপারে চলিয়া
যায়-একটি ফোট| ওঁষধ কেউ মুখে তুলিয়! দেয় না )*ময়ুর-পুচ্ছধারী
বাসের মত সেই দেশের রাজা, মহারাজা, ধনী, চাঁকুরের মিথ্যাপদ-
গোৌরব-_কৃত্রিম হাসিআোত, কেবল তাদের টদন্তই ফুটাইয় তোলে
নগ্ন, বীভৎস জঘন্যতাই জাগাইয়া দেয় !
“যেই দেশের অন্রপূর্ণা ভূমি কোটি কাল সন্তানের অঢেল আহীর্ষ্য
জোগাইয়াও দেশদেশাস্তরের শত কোটি ক্ষুধিত জীবের অন্ন সংস্থান
করিযা দিত,* যেই দেশের মৃত্যুজরা-বিজয়ী বাঙ্গালী শতেকে নব,ই
জন শতবর্ষ পরমায়ু উপতো'গ করিত--সেই বাঙ্গালা আজি বর্ষায়
এক ফট! জলের জন্ত ভূষিত দৃষ্টিতে আকাশের পানে চাহিয়া
'থাকে--জল পায় না) আর, শরতের হ্গিগ্চ রবিকরোজ্্বল আকাশ
১০৭
প্লী-জী।
ভাঙ্গিয়া__সৃযল ধারে জল নামিয়, তার মুখের অন ধুইয়! ুছিয়া দিয়
যায়! প্লাবনের তোঁড়ে তার লক্ষ পণ কুটার তাসাইয়৷ নিয়া--গাছের'
ডালে, পথের ধারে সারি সারি দীনভার কঙ্কাল সাজাইয়! রীখিয়া
যাঁয় ! ঃ
কেন? বিধাতার অভিসাপে । সহ নিরম্ন জীবের মুখের
গ্রাস কাঁড়িয়। নিয় যেই দেশের ধনী জমীদার অবাধে সেই অন্ন
আপন মুখে তুলিয়া লয়-_সেই দেশ বিধাতার অভিসপ্ত !,
ভাবিতে ভাবিতে একটা দীর্বনিশ্বাস ত্যাগকরিয়া৷ আবার
জগদিন্দু বলিলেন,-_-“তবে মা আসবেন-যেই দিন এই পল্লীর
মাটিতেই আরার তীর্থের জ্যোতিঃ ফুটে উঠবে- যেইদিন লক্ষ দিব্য
সুস্থ সবল পল্লীবালক পেট ভরে খেয়ে-_উচ্ছ্ট অন্মুষ্টি আবার শত
ক্ষুধিত কুকুরের মুখে তুলে দিবে-_সেইদিন মা আবার আস্বেন।”
এত বড় মহান্ ভাবের কথাটা অনুশীলা বুঝিল না। পল্লীবধুর.
সমস্ত সলঙ্জ কাতরত! একত্র করিয়া! সে বলিল,_-“মাকে ফিরিয়ে
আন, তার পায়ে ধরে ক্ষমী চেয়ে ফিরিয়ে আনি চল»
জগদিন্দু তখন ভাবস্বর্গের দীপ্ত স্বপ্পে বিভোর। আবেশভরে
সে বলিল, “ক্ষমা ত মার স্বভাবসিদ্ধ প্রকৃতি-_মাঁয়ের কাছে কি
আবার ক্ষম। চাইতে হয়! এই পল্লীমন্দিরে যখন মাতৃপুজার বিজ্য়-
শঙ্খ বেজে উঠবে ধন, বস্ত্র, রব শস্তা্দি যোড়যোপচার সাজিয়ে যখন.
মায়ের সম্তানগণ মতিপুজার শঙ্খধ্বনী করবে__ম! আম্বেন তখন ।”
এমন সময় দয়িতা ছুটিয়া আসিয়! মাতার হাত ধরিয়া! বলিল,
“মা, ঘরে ধাও-_-গুর! আসছেন ।৮
১০৮
সঙ্গনী-ওী
জগদিন্দু বলিলেন, “ওরা, কারারে দয়ি?”
“সমসের দাদা, রহিম কাকা! আরও অনেকে কত কি সব মাথায়
ক'রে নিয়ে আসছেন। বারবাড়ীতে বসতে ব্ললেম, তারা শুনলে
'না- একদম বাড়ীর ভিতর চলে আসছে ।”
দয়িতার কথা শেষ না হইতেই শতাধিক গ্রাম্য কলুষকে উঠান
ভরিয়৷ গেল। প্রত্যেকের মাথায় এক একটি ঝাঁকাপূর্ণ নান!
খবাস্ঠ দ্রব্য ও বন্ত্র সম্ভার । |
প্রাঙ্গণে দীড়াইয়৷ সমসের বলিল, “নাও মা, আমর! সকলেই ত
তোমার ছেলে__আঁমাদের লজ্জা কেন মা? এই নাও, ঘরে তুলে
রাখ, তোমার পূজোর জন্ত এনেছি। আজ আমাদের পুনর্জন্মের
সোশ্চ্ছরের দিন--মনে নেই মা?”
জগদিন্দু এবং অনুশীল। অনেকক্ষণ অবাক হইয়া দীড়াইয়।
রহিলেন। এত দ্রব্যস্তার গ্রহণে অত্যন্ত কুষ্ঠিত হইয়। জগদিন্দু
কহিলেন, «এতটা! কিন্ত তোমাদের বড়ই অন্ঠায়। ঠারের যা আছে,
তাতেই ত আমদের চলে যায়»৮---তবু তোঙ্র। আবার
জগদিন্দুর কথায় বাধা দির্ধী সমসের বলিল, “ছি ছোট বাবু__
ছেলের মন বোঝ না? তোমাদের ঠাকুরপুজৌয় যে ভারে ভারে
মিঠাই মণ্ড সাজিয়ে দাও--সেকি তোমার ঠাকুর কাঙ্গাল বলে
দাও? ছি--ছোট বাবু, গরীবের প্রাণে ব্থ! দিওন৷ !
“কে বলে তুমি কাঙ্গাল ঝলে দিচ্ছি? না, না ছোটবাবু_তুমি
ত” কাঙ্গাল নও । দেশের লক্ষ গরীবের শরীর, প্রাণ, মনের উপর
তোমার জমিদারী--এই এশ্ব্য্য কট! রাজার আছে ব্লতে পার ?
১৩৪
পন্ী-ভী।
বলিতে বলিতে শ্রন্ধাভক্তির আবেগে সত্যই বৃদ্ধের কগ্ঠরোধ:
হইল। ক্ষণকাল একট! বিরাট স্তব্ধতায় সেই জনাকী্ণ প্রা্গণ আচ্ছন্ন
হইয়৷ রহিল। সমসৈর প্ররৃতিস্থ হইয়া চক্ষু রগড়াইতে রগড়া ইতে
আবার বলিল,_-
“নাও মা নাও, আমর! সবাই কিন্তু বিকালে আসব, প্রসাদ পেয়ে
যাব_আজ উচ্ছোব কর্তে হয়-_জান না মা?” মহানন্দে বিহ্বল
সমসের, উত্তরের প্রতীক্ষা না করিরা, লোৌকজনসহ বাহির হইয়া গেল।
একট! অব্যক্ত আনন্দে জগদিন্দু ও অন্ুশীলার প্রাণ ভরিয়৷
উঠিল। ছুই জনের গণ্ড বহিয়! যুগপৎ আনন্দাশ্রু বহিল। 'অনুগীল৷
আর্্র অবরুদ্ধক্ঠে বলিলেন, _ |
“আজি যদি মা কাছে থাকতেন, তা হ'লে বুঝতেন যে--তুচ্ছ
জমিদারীর নিনিময়ে কি বিশাল রাজত্ব ক্রয় করেছি আমর! । এত-
গুলি সরল প্রাণের উপর বাঁর সাম্রাজ্য প্রতিষ্টিত, কে বলে সে
কাঙ্গাল! এমন সম্মান কোন্ রাজরাণীর অদৃষ্টে ঘটেছে?”
দেখিতে দেখিতে সকল পম বিরাট জনসজ্বে ঠাকুরবাড়ী
ভরিয়া উঠিল। উৎসব-কলরবে চাঁরিদিক মুখরিত হইল। জাতীয়,
পতাকাঁধারী একদল যুবকের অগ্রে তজহরি নাচিতে নাচিতে গাহিতে
লাগিল”
জামর! মানুষ হাতে চাই;
বেদ-বেদান্তের বুলি গেয়ে, অলস বিলাস-কোলে শুয়ে
কাজ কি বেঁচে ভাই?
আমর! মানুষ হ'তে চাই ॥
১১৬
লীন
মোদের ছিল অনেক বটে-*এখন নাইক' কিছুই মোটে-_
তবুআজাক ক'রে সেই পুক্লাতত্ব কোন্ মুখে বা গাই?
নাইক লঙ্জা--মানুষ বারা-_ মুখে দেয় যে ছাই |
আমর! মানুষ হ'তে চাই !!
(১১ )
কোনও একটা বৌক মাথায় চাপিয়া বসিলে তাহা সম্বরণ
করিবার মত মানসিক বল শ্রাটোর ছিলনা । নিতান্ত খাঁমখেয়ালি .
প্রকৃতি তাহার; ঘটনাবর্তে সময় সময় কৃতকর্শোর দরুণ তাহার
আত্মগ্ানি হইত বটে, কিন্তু তাহার স্থিতিকাল বড়ই অল্প।
ভাল কাজ করিবার ইচ্ছাও অনেক সময় খেয়ালের ঝেঁকে তাহার
মনে উদয় হইত, কিন্ত পলকে আবার সেই শুভেচ্ছা কোথায়
মিলাইয় যাইত"
জগদিন্দুর দেশীত্ববোধ-জনিত ত্যাগের মহস্ শ্ত/টো বুঝিতে পারিত,
মনে মনে সেই মহত্বের সন্মানও সে ন| করিত এমন নহে। তথাপি
কাঁধ্যতঃ জগুদিন্দুর কাছে মাথা নিচু করিবার ইচ্ছা, শক্তি কি সাহস
তাহার ছিল না। মহত্বের সম্মান পলকে তীহার বিষয়বিভ্রান্তিময়
কল্পনার আবর্তে কোথায় তলাইয়! যাইত। অনেক সময় এক একটা
পবিত্রতার মুহূর্তে তাহার প্রাণে উচ্চ সংকল্পের উদয় হইয়াই আবার
বিশ্বৃতির গর্ভে লীন হইয়া যাইত।
১১৯
প্জী্ী
শ্তাটো স্থির করিয়াছে যে, পারুলের জন্যই তাহাকে তাহার
স্নেহময়ী মাসীমাতার কাছ হইতেও ক্রমশঃ দুরে সরিয়া পড়িতে
হইতেছে। কাজেই পারুলের সঙ্গে তাহার সকল সম্বন্ধ ত্যাগ
করিতে হইবে। ক্ষুদ্র বৃহৎ সকল ক্রটিরই সংশোধনের চেষ্টা কর!
সমীচীন, শ্তাটো সেই কথ! বোঝে না। অসম্ভব হইলেও সেই সকল
ক্রটির মূলেৎপাটন করাটাই শ্তাটো পৌরুষের পরিচায়ক বলিয়া মনে
করে।
যথোপযুক্ত ধৈর্ধ্,, সহিষ্ুতা! এবং কৌশলের সাহায্যে সে ইচ্ছা
করিলে ধীরে ধীরে গৃহিণীকে উদ্দীম স্কেচ্ছাচরিতার পথ হইতে, পৃত
গারস্থয-সুখের পথে ফিরাইয়। আনিতে পারিত, কিন্তু সেই পথের সহিত
শ্তাটে! পরিচিত নহে। স্ত্রীর স্বেচ্ছাচরিতায় ষখন তাহার পাঁরিবারিক
নখের পথে বিদ্ধ জন্মিয়াছে- স্ত্রীর সহিত সম্পূর্ণ বিচ্ছেদই তাহার
একমাত্র গ্রতীকার-পস্থা' বলিয়৷ শ্টাটো নিঃসংশয় ধরিয়া! লইয়াছে।
হিন্দু কুলবধূর সহিত সব্বন্কবিচ্ছেদ জীবনের এইপারে কোনও
হিন্দুরই ঘটিয়া উঠে না, একথ বিধন্মীর ছুর্দীতি-অনুকরণশীল যুবক
বিশ্বাস করিবে না। কাজেই দীর্ঘ দিনের বিচ্ছেদে ও কোন পক্ষের
কোনও পরিবর্তন হয় নাই ।
' ছুশ্চিন্তার পীড়নে কুটচক্রী শ্তাটোর মেজাজ অত্যন্ত রক্ষ হইয়া
পড়িয়াছে। বিশ্বাতির উপায় আবিষ্কার করিতে গিয়া শ্তাটো, তাহার
হীন চরিত্র আরও মসিময় করিয়! তুলিয়াছে। |
পক্ষান্তরে উপেক্ষিতা, স্বাধীন রমণীর উদ্দাম চিত্তবৃত্তিও অযথা
উচ্ছত্খলতার চরমে আরোহণ করিয়াছে ।
১০৭
গ্পললী-ভী।
বধূর প্রতি অতিশয় অন্যায় ব্যবহারে ভোলানাখের সংসারোগ্ভানে
যে এক ভীষণ বিষবৃক্ষের স্থষ্টি হইতেছে, তাহা ভাবিয়া শাস্তিময়ী বিরাট
আশঙ্কায় দিনপাঁত করিতেছেন। কিন্তুকি করিলে যে এই ব্যাধির
উপসম হইবে, তাহা! তীক্ষবুদ্ধি শান্তিময়ীও ভ।বিয়া পায়েন নাই।
আপন কক্ষে বসিয়া বেলা, দিপ্রহরাতীতে পারুল আজি একটি
অতীব ছুঃখের গান গুন গুন করিয়৷ গাহিতেছিল; ক্ষণে ক্ষণে গভীর
ছুরাবনাজনিত দীর্ঘ নিশ্বাসে তাহার বক্স্থল কীপিয়া উঠিতেছিল।
এমন সময় কি ভাবিয়া গ্ঠাটো সেইখানে আসিল। তীব্র অবজ্ঞার
সহিত কর্কশস্বরে সে পারুলকে জিজ্ঞাসা করিল,
“তোমার লহোদর এখনো এই বাড়ীর সংশ্রব পরিত্যাগ করতে
'পারেন নি কেম ?”
ঠাটোর অলঙ্কারহীন নির্জলা উপেক্ষার ভাষায় অভিমানিনীর
মন্তি্ক উদ হইয়া উঠ্টিল। সেও রুক্ষস্বরে প্রত্যুত্তর করিল,__
“আমার ইচ্ছায় এবং উপরোধে 1”
সেই গৃহের একচ্ছত্র অধিপতি হ্ঠাটোরর মুখের উপর এমন
করিয়া স্তৃতীরর সত্য কথা মাথ| উচু করি কেহ বলিতে পারে, এমন
বিশ্বাস শ্ঠাটোর ছিল না। তাই নিজ কর্তৃত্ব অক্ষুণ্ন রাখিবার জন্যই
বুঝি নে আবার বলিল,_-“এই গৃহে তোমার ইচ্ছা বা উপরোধের আর
কোনও মুল্য নাই--তা৷ জান ?”
“জানিনা, এবং তা যে সত্য নয় সেই কথাই প্রমাণ কর্তে
চাই আমি 1৮ বলিতে বলিতে পারুল সগর্কে পার্্স্থিত চেয়ারে বসিয়া
পড়িল।
১৯৩
পল্লী-ী।
স্থির গম্ভীরতর স্বরে শ্াটে৷ প্রচার করিল,_-«কিন্ত তাঁকে যেতে
হবে।”
অচল অটল ভাবে পারুল বলিল,”--“সে যাবে না ।”
এত বড় অপমান নীরবে সহা করিবার লোঁক শ্ঠাটো নহেন।
বিশেষতঃ জীব বিশেষের মত পত্বীর কাছেই তাহার বীরত্ব সমধিক।
ক্ষ মর্যাদা তৎক্ষণাৎ পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করিবার দুটসংকল্পে সে
ভূত্যের দ্বার৷ নবগোপালকে সেই গৃহে ডাকিয়৷ পাঠাইল।
“আমি এই দণ্ডে তোমীকে বুঝিয়ে দিচ্ছি যে, এই বাড়ীতে
তোমার হুকুম আঁর চলবে না।” বলিতে বলিতে শ্ঠাটো দূরস্থিত
চেয়ারে বসির! পায়ের উপর পা! রাখিয়া---গ্রীপদঘয় প্রবল আন্দোলন
করিতে লাগিলেন ।
আহিত-অতিমানের বেদনায় পারুলের মুখ চোখ আরক্তিম
হইয়া উঠিল। একদিন যাহাঁকে সে কলের পুতুলের মত নাচাইয়াছে,
সেই হ্টাটো আজি বহির্জগতে সমস্ত প্রভৃত্ব হারাইয়, জর সামান্ত
স্বাধীনতায় ভ্ন্তক্ষেপ করিতে উদ্ধত হইয়াছে--এবং তাহাতেই, সে
এতট! আত্মগ্রসাদ উপভোগ করিতেছে, এই হ্ঃখ চিরম্বাধীন।
পারুলের অন্তরে তীব্র শেলাঘাত করিল। দলিতপুচ্ছ, উর্ধফণা,
ফণিনীর তেজে সে বলিল,
«এরই নাম পাসবুক্তি ১18৮ 17)61)621115 1" যদি অভিধানে
খুঁজে না পাও, জেনে রাখ-_এরই নাম গোলাম চরিত্র !
“প্রজারা বিদ্রোহ করেছে, আড়ষ্ট হ'য়ে নিজ্জীব পুতুলের মত
খবরে বসে আছ! হাঁতে একটি কপর্দক অবশিষ্ট নাই__নীরবে হাই:
১১৪
পরুনী-ী
তুল! জমিদ|রী নিলামে চড়েছে, বিধবার সঞ্চিত অর্থের উপর
লোলুপ দৃষ্টিনিক্ষেপ কচ্ছ! 'অন্দর-পিঞ্জরাবন্ধ 'অসহয়া শ্ত্রী--তার
সমস্ত স্বাধীন চিন্তাটুকু তোমার পায়ে বিসর্জন কর্তে পাচ্ছেনা
__বীরপণা দেখিয়ে তাকে শাসাতে এসেছ, তাতে এতটুকু লজ্জা
বোধ কচ্ছ ন।80)০0 318,/017761)0211 17
“বহির্বাটাস্থ স্বীয় নির্জন অন্ধকার কক্ষে নবগোপাল সেইদিন
অবধি, ভীত চিন্তান্বিতভাঁবে কালকর্তন করিতেছিল। শ্তাটোর
আহ্বানে সে প্রথমতঃ চমকিত হইয়া গেল। ত্রাসে, শঙ্কায় দে
কাপিতে লাগিল ।
তাহার পর যখন সে শুনিল যে পারুলের,গৃহে শ্রাটো এবং
পারুলের সমঙ্গে তখনি তাহার হাজির হইতে হইবে, তখন সে
কথঞ্চিত আশ্বস্ত হইয়। ভাবিল,_দিদির সঙ্গে বুঝি দাদাবাবুর
ভাব হয়ে গেছে--ত। হলে আর ভয়ের কারণ নাই । *
অর্থহীন সরল হাঁসি ব্দনে মাঁখিয়া নবগোপাল পারুলের কক্ষে
প্রবেশ করিতেই শ্ঠাটো বল্লি,_-“তোমাক্ষে এখান থেকে যেতে
বল! হয়েছিল না ?
আশু মার্জনাপ্রাপ্তির উৎফুল্ল আশায় নবগোপাঁল হাসিতে
হাসিতে বলিল, “তা-বোঁনাই সাহেবনা জেনে, না বুঝে, মা
চিনে_-কি জানেন হে_হে হে» নিশ্রভ শু্ষ হাঁসির ছায়ার
তাহীর স্রন বদনমণ্ডল অন্ধকারাচ্ছন্ন হইয়! গেল ।
“আমার আদেশ ছেলেখেলা নয়, তা মনে রেখ!” বলিয়া
শ্াটো একটি চুরুটের মুখাগি করতঃ প্রবল টানে ধুশ্রাশি উদ্ধে
* ৯৫
পলী-ভ্রী।
উড়াইয়! দিয়া, সমস্তে নবগোঁপালের পাঁনে চাহিল। সেই চাহনীর
বিপরীত অর্থ বুঝিয়৷ নবগোপাল অভিষ্টসিদ্ধির স্থিরীকৃত আশায়
আবার একগাল ম্লান হাসির সঙ্গে বলিল৮_
“তাঁ, অর্থাৎ কিনা এবারটি।”
“কখনো! না| এই দণ্ডে এই বাড়ী থেকে বেরিয়ে যাও তুমি ।”
বলিয়া গ্তাটো আবার একগাল ধুয়া বাতাসের অঙ্গে নিক্ষেপ
করিল।
নবপ্পোপাল হুঃখে, বিস্ময়ে নীরবে কাদিয়া ফেলিল। . “সে গরীৰ
মানুব, দিদির দৌলতে বোনাই সাহেবের আশ্রয় পাইয়াছে, নচেৎ
“মা বাপ” বলিতে *এই বিশাল ছুনিয়ায় আর তাহার কেহই নাই--
এইবারের জন্থ, নয় তাহার নাক কাণ মলিয়া ছাড়িয়া দেওয়া হউক 1”
ইত্যাকার অনেকানেক খোসামোদ করিয়াও দোদগুপ্রতাপ
হ্যাট! সাহেবের মার্জনা ন! পাইয়। অগত্যা বেচারী “ভেউ ভেউ”
সমুচ্চ ক্রন্দননাদে বাটীময় তাহার নৃতনতর বিপদবার্তা জানাইয়৷ দিল।
সহস! পারুল প্রর্দীপ্ত তেজে স্বামী ও ভ্রাতার মধ্যবর্ডিনী হইয়া
তারম্বরে শ্কাটোকে বলিল,__“যদি সত্যি একে এই অসহায় অবস্থায়
তাড়িয়ে দেওয়া হয়, তা হ'লে আমিও আর এক মুহুর্ত এই পরিবারে
থাকব না জেন ।”
ক্রোধে তখন ্ঠাটোর কাণুজ্ঞান লুপ্ত হইয়াছে। হিতাহিত চিন্ত।
না করিয়া সে বলিল,_“আচ্ছা! তাই হউক- হুষ্ট বলদের চেয়ে শূন্ত
গোঁয়ালই ভাল 1” |
পারুলের সমজাতীর। বঙ্গকুলন।খ্বর্মের ছএহীনভাবে
১১৬
পলীবী
অত্যাচার সহা করিয়া যাওয়াই স্বাভাবিক । কিন্তু অতি মুখর!
পারুল, বিদেশী বিৎন্মীর সমাজে প্রতিপালিতা হইয়া -বঙ্গকুললক্্মী-
গণের সেই সর্বংসহা শাস্তিগ্রবিনী শক্তি অর্জন করিতে পারে
নাই। নিজের স্বাধীন ইচ্ছায় বাঁধা জন্স।ইবার ক্ষমতা তাহার
নাই। বিশ্ববিধ্বংসী অভিমানের আগুনে জলিয়৷ উঠিয়৷ পারুল
তখনই নব গোপালের হাত ধরিয়৷ সেই গৃহত্যাগ করিবার উগ্মোগ
করিল।
এমন সমর শীস্তিময়ী সেইখানে উপস্থিত হইয়া, বধূর গমনে
বাঁধা দিয়া, বিষম বিরক্তির স্বরে বলিলেন”_-“এই সব কি ভুলো?
“তোমার বৌমা এখানে থাকতে চাঁন না।” বলিয়া শ্যাটো
বক্র কটাক্ষ-পাতে পারুলের দিকে ভ্রভঙ্গী করিল।
শীস্তিময়ী সকলই জানিতেন। অধিকন্তু তিনি আস্তে আসিতে
ভোঁলানাথ এবং বধূর তর্কবিতর্কের কিয়দংশ শুনিয়া ছিলেন, তাই
তিনি বলিলেন,_
“মিথ্যা কথা বলিসনি ভূলো ৷ হতভাগা, এ বাঁধন কি এমন
ক'রে ছি'ড়ে ফেলা যায়? পরের মেদ্ধেকে ঘরে এনে হতাদর করতে
নেই ভুলো, তাতে মালক্ী বিরূপ হন। তোম|কেও বলছি বৌমা,
স্বামীর সেবা, তাঁর মনোরগ্রন করাই নারীর ধর্ম। মিথ্যা বিবাদ
ক'রে নিজেদের শাস্তি নষ্ট করোনা । আর নবগোপাল, তুমি
আমাদের কুটুত্ব-_-সমাঁদরের পাত্র। বাজে কথায় থাকতে নেই
তোমার; যাও, কিছু মনে ক'র নাঁ_-মার কখনও কাঁরুকে কোন
কথা বলে না যেন।”
১১৭
পরী
সহান্তে নবগোপাল অন্তর্ধান হইলেন। জানিনা শান্তিমীর
ধর্মোপদেশগুলি তাহার মর্খে প্রবেশ করিল কিনা।
জীবনের প্রথম আজি পারুল মাসীমার উদ্দেশে মনে মনে শত
প্রণিপাত করি সেই স্থান ত্যাগ করিল। বাঙ্গালার সুগৃহিনীগণের
সমুচ্চ দয়ার দৃষ্টান্ত-_-শিক্ষাভিমানিনী, স্বাধীন! রমণী আর কখনও দেখে
নাই-_দেখিবার স্ুবোগ পায় নাই। ত্যাগের মহিমা সে এমন করিয়া
উপলব্ধি করিবার সুখোগ আর পায় নাই। তাই প্রদীপ্ত ক্রোধের
মুহূর্তে মী বিপদকে বরণ করিয়! লইবার মুখে, শাস্তিমযীর আশ্রর
ইলা তাহার হৃদয় কৃতজ্ঞতায় ভরিয়! গেল।
সহসা ঠামন ছুটিরা আসিরা এক লক্ষে ঠাকুরমার ক্রোড়ে
আরোহণ করিয়। বলিল, “ঠাকুরবাড়ী যাবে না ঠাকুমা এতক্ষণ
তারা ভোমার জন্য বসে আছে বুঝি ?
ঠাকুর বাড়ীতে কথকত। হইতেছিল_ শান্তিময়ী তাহার প্রধান
স্ভোস্ু ৪ শ্রোত্রী! ,মনি অপর কল কথা ভুলিয়া তিনি
(মলের সঙ্গে ঠ/কুনবাড়া চলিয়া গেলেন ।
আজিকার এই সামান্ত ঘটনায় গ্রাটোর জীবনপ্রবাহ ঘোদশুর
বিপদের পথে চালিত করিল। পারুলের সহিত সম্পূর্ণ বিচ্ছেদনাধনই
টোর স্থিরীকৃত সংক। সেই সুযোগ মাসীমার অযাচিত
করুণার প্রহারে নষ্টগ্রাপ্ত হইয়া গেল। শাস্তিময়ীর 'কার্ষ্যের মধ্যে
মাতৃত্বের গরিম। উপলব্ধি করিবার উদ্ারতা-__-কুটিল শ্ত/টোর নাই।
অবত্ঠস্তাধী পারিবারিক অশান্তির সুচনাকেই ভ্রান্ত শ্তাটে। মহা
সুথের অগ্রদূত বলির ধরিয়া লইর়াছিল। নেই ক্ষেত্রে শান্তিনয়ার
রি
হা
১১৮
পরনী-ভ্ী।
অনধিকারচ্চা সে পরমুখাপেক্ষীতার অতি তিক্ত ফল বলিম্নাই
ধরিয়া লইল। তাই সে শান্তিময়ীর উপর অত্যন্ত বিদ্বেষবান হইয়া
উঠ্ভিল। সে মনে করিল, 'মামীমার অনুগ্রহপ্র্থী হইয়াছি বলিয়াই
তিনি আজ আমাদের স্বামী-স্ত্রীর কথায় মাথা গু'জবার সাহস
কৰিয়াছেন। হায়, হেয় অধীনতার এই ত ফল!
ফলে, উপধুপরি অবাধ্যতা! এবং কর্কণ ব্যবহারের দ্বারা ক্রমশঃ
স্আাটে শান্তিময়ীর বিপুল দেহ-বারিধিমাঝে প্রবল দিধা, ছন্দ, সন্দেহ,
বিরাগের তরঙ্গ তুফান তুলিয়া দিল।
জা ০৯৩ সপ সি
স্বামী-সঙ্গ-নুখ-বঞ্চিতা উপেক্ষিত পারুল অতি বড় ছুঃখের মধ্যে
শাস্তিময়ীর আশ্রয় পাইয়া, সহসা তাহার উদ্দাম জীবনের গতি প্রশমিত
করিবার সুযোগ পাইল। |
গ্লাটোর তথাকথিত তালবাদার উচ্ছল অভিনয়কালে, উদ্দাম
অবসাদের ঘোরে পারুল একপ্রকার উষ্ণ উত্তেজনায় দিন কাঁটাইত।
কিন্ত রমণীর সর্বোচ্চ গৌরব--স্বামীসোহাগে বঞ্চিতা হ্ইয়৷ দারুণ
উপেক্গার বেদনায় যখন পারুল অধঃপতনের নিয়তম শ্তরে নামিয়।
যাইতেছিল, সেই স্বর্নরকের সংযোগ স্থলে মাতৃত্বের অমৃত-আস্বাদ
পাইয়া পারুল বিরাট মঙ্গলের পথে ফিরিয়া দীড়াইল।
১১৯
পরলী-ী
যেই শাস্তিময়ীকে পারুল এক দিনের জন্তও তীহাঁর স্তাঁ্
মাতৃত্বের আসন প্রদান করে নাই-_বরং নিয়ত নানাবিধ ছুর্ব্যবহারে,
ধাহার হৃদয়ে সে নিয়ত প্রবল আঘাত করিয়৷ আসিয়াছে_ সেই
শীস্তিময়ী যখন চরম হতাশার মুহূর্তে তাহাকে পূর্ণ মাতৃত্বের স্নেহ"
ক্রোড়ে তুলিয়া! লইলেন-_সেই দণ্ডে পারুলের অন্তর মধ্যে একটা
বিপর্ষ্যয় ঘটিয়। গেল ।
ক্রমে শাস্তিময়ী নানাপ্রকার সাস্বনাবাঁকো প্রবোধ দিয়া পারুলকে
সত্য গৃহলক্্ীর আসনে প্রতিষ্ঠিত করিলেন । পারুলও জীবনের প্রথম.
মাতৃন্গেহের পবিত্র স্পর্শ পাইয়৷ কিছু দিনের মধ্যেই শাস্তিময়ীর একান্ত
বশীভূত হইয়া পড়িল।
সেবা, পরিষর্য্যা এবং সুমধুর আপ্যায়নে সে অল্পদিনের মধ্যেই
শীস্তিময়ীর সমস্ত ন্নেহরাশি আয়ত্ব করিয়া বসিল।
বধূভিন্ন শাস্তিময়ীর এখন আর এক মুহূর্তও চলে না-_পাঁুল
একাধারে শাস্তিময়ীর কন্তা ও শিষ্যারুপে মুখোপাধ্যায়পরিবারে
অধিষ্ঠান করিতে লাগির্ল।
আর পারুলের সেই অহঙ্কার, স্বাধীন উদ্দাম ব্যবহার, রুক্ষ ভাষা,,
কিছুই নাই। শান্তিময়ীর উদারতার সংস্পর্শে পারুলের রমণী-মুলভ
সুমধুর মঙ্গলবৃত্বিগুলি একসঙ্গে সাড়া দিয়া উঠিল। অচিরে আদর্শ
বঙ্গকুললঙ্্ী-রূপে সে সেই গৃহে প্রতিষ্ঠিত হইল:
পক্ষান্তরে গ্ঠাটো--শাস্তিময়ীর মাতৃত্বের এরভাব এবং পারুলের
সহিত দাম্পত্য সন্বন্ধের অন্ধ মাদকতা__উভয় আকর্ষণ হইতে ক্রমে,
দুরে সরিয়া গিয়া, অধুনা সম্পূর্ণ উচ্ছঙ্খলতা আশ্রয় করিয়া! বসিয়াছে।
১২৪
আবার শ্ঠাটো এত মাত্রায় মগ্তপাঁন আরম্ত করিয়াছে যে, অষ্টগ্রহরের
মধ্যে এক দণ্ড তাহাকে স্বাভাবিক অবস্থায় পাঁওয়! যাঁয় না । মগ্প-
স্থলত অন্তান্ত সকল পাঁপগুলিই আবার তাঁহাকে আশ্রয় করিয়!
বসিয়াছে।
শান্তিময়ী নাঁন।প্রকার চেষ্টা করিয়াও শ্ভাটো ও পারুলের মধ্যে
পুনরায় সর্ভাব স্থাপন করিতে পারেন নাই।
স্বতাবতঃ উদর শ্নেহময়ী তিনি । স্বরণ! সকল কার্ধযই তিনি
অতিশয় সরলতার সঙ্গে করিয়া থাঁকেন। তাই সুকৌশলে যেই
কাধ্য সহজনাধা হইত শান্তিময়ীর চতুরতা-বিহীন সরল চেষ্টায় সেই
কার্য পণ্ড হইতে বসিয়াছে।
নারী, নারীর ছুঃখ ঘেমন করিয়া! বোঝে অপরের পঙ্গে তাহা
সম্ভব নম়। বধূর প্রতি শ্তাটোর তাচ্ছীল্যের ব্যবহারে তই শান্তিমরীরগ
ধৈর্ধ্চ্যুতি ঘটাইয়। দিয়াছে। বার বার বিফলমনোরথ হইয়া
শাস্তিমরী পুভ্রাধিক ন্লেহ্রেপাত্র গ্ঠাটোর প্রতিও অহানুভূতিশৃন্ত
হইয়া পডিতেছেন।
ঞ্ ৯ রস
জগদিন্দুর সংসর্গে আমিয়া উচ্চহদয়। শাস্তিময়ী তাহার উচ্চ:
আদর্শের পন্গপাতিনী হইয়া পড়িয়াছেন। জগদিন্দুর একান্তিক
চেষ্টা এবং স্বার্থগ্তাগের ফলে এক বৎসরের মধ্যেই পারিপার্থিক
পল্লী ও পল্লীবাসীর অপ্রত্যাশিত শ্রীবৃদ্ধি সন্দর্শনে, তিনি ঠ্ঠাটো
অপেক্ষা জগদিন্দুকেই অধিকতর শ্লেহেরপাত্র বলিয়! মনে মনে স্থির,
করিয়াছেন ।
১২১
গলিত তুষাররাঁশি ঘখন নিক পথে সাগর উদ্দেশে ধাবিত হয়__-
তখন তাহার পথের বিচার থাকে না! । অনন্ত, মুক্ত সাগরের সহিত
মিলিত হইতেই সে চাহে-_তাহাতেই তাহার চরম আনন্দ । এখানে
বাধিয়া দেও, অন্ত সুগম পথে দে গা ঢালিয়৷ দিবে।
নেই প্রকার, স্বভাবতঃ উদার ধাহারা, তাহাদের পুত শ্নেহধার।ও
এক অনন্তের পথে বহিরা য় । একস্বানে বাধা পাইলে সুগম পথান্তর
বাছিয়া লইতে 'ভাঁহাদের বিলম্ব হয় না। শান্তিমদীর উথলিত
শ্নেহধারাও যখন শ্তাটে!র মধ্যে ব্যর্থতার বাধাপ্রাপ্ত হইল, তখনই তাহা
পারুল এবং জগদিন্দুর ভিতর দিয়া ছিধা বিভক্ত হইয়। অনন্ত লক্ষোর
পথে ছুটিয়া চলিল।
পক্ষান্তরে শ্াটো, জগদিন্দু এবং পারুল উভয়ের প্রতি--বিভিন্ন
কারণে হইলে সম।নভাবেই বিদ্বেপপরারণ। জগদিন্দু তাহার প্রবণ
প্রতিদন্বী-_জতএব শক্রপদবাঁঢা। পাকুল তাহার ভবিষ্যৎ সুথের
অন্তরায়। রঃ
[টো খন দেখিল থে, মাসান। ধারে ধারে ইভাদেরই পক্গাশ্রয়
করিতেছেন, তখন নিজের হিতাহিত ভুলিরা সে মাসীঘ।তার
উপৃবই গ্রবল বিদ্বেষের ভাব দেখাইতে লাগিল । |
গুহবিবাদে জমিদারার শ|ননদমন্। ক্রমে জটিল হুরা পড়িতেছে,
গ্রাটো ভ্রুদ্দেপ করিলনা ।॥ সেইদিন জমিদারীসংক্রান্ত হিসাবপত্র
দেখিতে দেখিতে সে দেখিল অনন্তদ্দেব এবং নবগোপাল দুইজনে
মিলিরা কিছু টাক! আগ্মনাৎ করিয়াছে ।
অমনি সর্বজন-সাঙক্গাতে দে ছুইজনকেই ছ।রবানের ছ্বারায়
১২
পল্লী-ভ্রী
সবিশেষ অপমানিত করিতে কুঠাবোধ করিল না। ফলে, অনন্তদেব
কন্মে ইন্তাক] দিয়া গিরাছে। ছুরাশার বশবর্তী হইয়া নবগোপালও
তাহারই বাটীতে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছে।
গ্রাটো নান! গ্রক|রে অনন্তদেবের হাতে জড়িত। অনেক বিপদ-
জনক কাগজপত্র তাঁহাঁরই হাতে রহিয়াছে। তথাপি, পক্ষো্মীলিত
পতঙ্গঈবিশেষের মত, হিতাঠিত জ্ঞানহীন মগ্তপ, সেই অনন্তদেবকেই
অপমানিত করিয়া কর্মচাত করিতে দ্বিধা বোধ করিল না।
সনস্ত বাপার দেখিরা শুনিরা শান্তিময়ী ঝটিতি তাহার কর্তবা
নিদ্ধারণ করিয়। লইলেন |
দেণস্রবোধ একবার ধাহার প্রাণে জাগরিত হয়, সকল বিশ্বই
তাহার আপন হইয়। যায়। হীন স্বাচিন্তা, দৈহিক আরাম, আকাঁজা,
পর-প্রতিষ্ঠ, গৌরব, সকলই বাষ্টি ছাড়ির! সমষ্টিতে পর্যবসিত হয়।
মহান ভাঁবতরঙঈ্ঈ সমান ভাবে শাস্তিময়ী এবং পারুলের দয়
উলিয। উঠিয়াছে-_কাজেই পারুল শান্তিমদীর ইচ্ছার পুর্ণ সমর্থন
করিল।
আজি শান্তিময় একট। শেষ চেষ্টার জন্য বদ্ধপরিকর হইয়া বধুকে
পার্থ ডাঁকিঝা বদাইলেন। অবিলন্ষে গ্তাটোকে তাহার সঞ্িত
সাক্ষাৎ করিঝার জন্য সংবাদ দিয়া তিনি বধুকে বলিলেন”_
“ভগবানে বিশ্বা হারিওন! মা। পুণ্যের সংসারে পাপের
স্র্শ লেগেছে--তবু স্থির জেন আবার এই সংসারে পূর্বের শাস্তি
ফিরে আসবে । ঝড় বাদলার পর আবার পৃথিবী রৌদ্র আলোকে
ভরে যায়__এর বাতিক্রম হয়না মা ।”
পলী-ভী।
ভক্তি-বিনমরন্বরে পারুল বলিল, __“একটা উদ্দাম চপলতার আবল্যে
জীবনের সার ভাগটা অযথ| কাটিয়ে দিয়েছি--সংসারের কোনও
দাবীই কাঁণে তুলি নাই। কিন্তু সেই ভুলের ঘুম ত ভেঙ্গে গেছে মা।
তোমার শ্নেহস্পর্শে জেগে উঠেছি যখন-_-ম! বলে তোমায় একবার
চিনেছি যখন__-আর আমায় অবিশ্বাস করো না”
শাস্তিময়ী জানিতেন পারুলের জীবনপথের সতাই একটা বৃহৎ,
পরিবর্তন হইয়! গিয়াছে। যেই পারুল একদিন শিক্ষা এবং এশ্বর্য্ের
মোহে সম্পূর্ণ বিদেশী- বিধন্মর ধঠচে ঠ্রাটোর 'বাঙ্গীলায় বিহার
করিত, সেই পারুল আজি শাখা, শাড়ী আর সীমস্তের সিন্দুর ঘাত্র
সার করিয়া পবিত্র হিন্দু সমাজের আদর্শকুলবধুর জীবন যাঁপন
করিতেছে । ইহাই যথেষ্ট প্রমাণ যে, তাহার প্রাণের সমস্ত মলিনতা,
বিদুরিত হইয়াছে।
যাহা হউক, শান্তিমরী বলিলেন__“ভুলোকে ডেকে পাঠিয়েছি
মা। যেমন প্রবল ব্যাধি, বোধ হয় তেয়নই উগ্র ওষুধ প্রয়োগ
কর্তে হবে। তাতে ক্ষ হ৪ না। সত্যই য্থন দেশটা এবার
সমস্ত অবদাঁদ ঝেড়ে মুছে ফেলে__-আবার পূর্বব্রী, পুর্বগরীমা, :
ফিরিয়ে পাঁবার পথে এসেছে--সেই অবস্থায় ওর কদাচারের প্রশ্রয়
দেওয়! মহাপাপ ।
“আমার পিতা, পিতামহের জন্মমাটি যদি আজি সমস্ত বাঙ্গালার
সম্মুখে এমন একটা উচ্চ আদর্শ খাঁড়। করে দিতে পারে--তার চেয়ে
গর্বের বিষম আর আমাদের কি হ'তে পারে ম1 ?”
এনিঃসক্কোচে তোমার ক'জ তুমি করে যাঁও মা। আমায় সুধু,
১২৩
পল্লী-জ্ী।
'পথ দেখিয়ে নিয়ে চলে_-যেন আমি তোমার ছায়ার সঙ্গে মিশে
চলতে পারি |” বলিতে বলিতে পারল জলভর! চক্ষু ছুইটি মাটিতে
নিবদ্ধ করিয়া, নিজের পুর্বকৃত অপরাধের কথ! ভাবিয়া কাতর হইয়!
পড়িল। র
ক্ষণপরে সুরাবিহ্বল কম্পিতচরণে, দীনতার কস্কাল শ্তাটো! সেইখানে
উপস্থিত হই বলিল-__“আ মাকে কেন তলপ করেছ তোমর! ৮”
হাটোর কথ|র ভঙ্গী এবং শারীরিক অবস্থা দেখিয়া! - শুনিয়া
'শাস্তিময়ী বিবম খ্বায় মনে মনে জ্বলিয়া উঠিলেন। কোনমতে
আখ্মসংযত| হই তিনি বলিলেন,
“ভুলে! যা করেছিস না করেছিস সব ভুলে যা । যদি নিজের ভাল
চাস_ এখন৪ আমার কথা শুনে ফিরে দীড়া। একেবারে চরমে
এসে দাড়িয়েছিস,। আর এগুতে গেলে কোথায় পড়ে যাঁৰি তা
ভেবে দেখ ।” |
“তোমার কথা ছাড়াও এতদিন স্বাধীনভাবেই বিষয়রক্ষ
করে আসছিলেম-_একথা স্বীকার কর বোঁধ হয়?” বলিয়া গ্তাটে!
শাস্তিময়ীর প্রতি দারুণ উপেক্ষার দৃষ্টি নিক্ষেপ করিল ।
হাটোর নিকট এমন ব্যবহার শাস্তিময়ীর পক্ষে নূতন নহে।
কিন্তু আজি শাস্তিময়ীর প্রবল ন্নেহধারা অনন্ত ভাবসমুদ্রের পথ
চিনিয়া লইয়াছে। শ্ঠ।টোর অবজ্ঞার সুরটা তাই তাহার প্রাণের
তন্ত্রী ছিড়িয় দিবার উপক্রম করিল। উত্তেজিত কণ্ঠে তিনি
'বলিলেন৮_“তাই যদি হয় তবে কেন আমার পিতৃপুরুষের সাজান
'নৌকা বিন।মেবে বানচাল হতে বসেছে তুলো ?”
পভ"
“তোমারই নিন্চেষ্ট বাবহারে 1” বলিয়া শ্যাটে। আবার শান্তি
ময়ীর ক্রোধাগ্রিতে ইন্ধন নিক্ষেপ করিল।
স্থিরকণ্ে, দৃঢ়ভাবে শান্তিম্রী বলিলেন,__“তা নয় ভূলো।
এতদিন গ্রহ ছিল তোর সহার-তাই তোর পাপের কার্ধাও সফল
হয়েছে । আর আজ বিষম কুগ্রহ তোকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে
অন্ধের মত সেই অধঃপতনের পথেই চলেছিন তুই। এতদিন
তোর সুদিন ছিল, তাই কোন কথা কইনি__ ক্রমে এমন অবস্থায়
এসে দীড়িয়েছিস-যাতেক'রে আর কথা না কয়ে থাকতে
পরি না।”
শ্গণকাঁলের জন্য নীরব থাকিয়া শ্াটো শাস্তিমপ্রীর নিরভীজ সত্য
কথাটার মর্ম উপলব্ধি করিবার চেষ্ট/ করিল। কিন্তু তখন তাহার
ফাঁকা মন্তিফ্ষে ধারণাঁশক্তি ছিল না। তাই অর্থহীন আঁত্মণীবঞ্চনাবহে
গে বলিল |
“আরও কিছুদিন যদি নীরবে থাকতে পার-- দেখবে ধীরে স্ুস্তে,
র'দে বসে সবই হৰে 1৮ , |
মূর্খ আম্মপ্রবঞ্চিতের মামুলি গ্রবোধবাক্য শাস্তিম়ী অনেক
শুনিরাছেন, তাই তিনি বলিলেন,
- “বড় বড় বাঁধাবুলি আড়ালেই কাজ হয় না ভুলো । ঘরের
চালায় যখন আগুগ জলে ওঠে___বুঝে সুজে তার প্রতীকার করা চলে
না। ছেলে যদি পাতিকুয়োয় পড়ে যাঁয়_তখন ভাবনাচিস্তার অবসর
থাকেনা ভুলো !”
শ্তাটোর মন্তিক্কে কথাগুলি প্রবেশ করিল কি নাজানি না।
১২৬
পল্লী-ভী
অসংবন্ধ অর্থহীন পরিকল্পনার প্রবাহে ডুবিদা দে নীরব রহিল।
ক্ষণপরে শান্তিমরী আবার বলিলেন»
“বত্সরাধিক প্রজার বিদ্বোহ করেছে । গুরু, পুরোহিত, স্বজন,
জ্ঞতিবর্গ সকলে এই বাঁড়ীর সংশ্রব ত্যাগ করেছে। গ্রামের
সর্বশ্রেষ্ঠ পুরুষ হরে, আজি তুই সর্বনিয়ে সকল রকম পাপের আবর্তে
হাবুডুবু খাচ্ছি? অথচ জগত, পর্ধস্ব হারিয়েও আজ গোটা
দেশটার একচ্ছত্র রাজচক্রবন্ত-_সর্ধত্যাগী হলেও লক্ষ উম্বুক্ত
হৃদয়ের উপর এ্রতিষ্ঠিত তার বিরাট মাসাজ 1”
জগদিন্দুর কথ। শুনিয়া শ্তাটে। “তেলে বেগুনে” জলিয়া উঠিল।
“এত বড় মহীত্যাগী, ঘুক্ত পুরু ঘদি তিনি_-তা হ'লে জোট্ট!
বীধানেন কেন? কাড়ে পড়ে কৌপীন সার করে অনেকে-_তা ঝলে
মহাপুরুষ বনে যায় না”
এতক্ষণ পারুল নীরব ছিল। জগদিন্দুর প্রতি অগ্তায় কটাক্ষ
সে বিরক্তির স্বরে বলিল”
“জেট তিনি বীধান নাই । প্রজাদেব্ খাজান! দিতেও তিনি
বলেছিলেন । কিন্তু তার অন্ত সকল কথাই তারা শোনে-_শুধু একথ।
তারা শোনেন! । বলে-_-“ছোটবাবুর বিষয় ফিরিরে দেবে, তবে
থাজানা দেবা”
গ্র/টো জাঁনতনা যে, ইহাঁরহই মধ্যে পারুলের কত বড়
একটা পরিবর্তন হুইয়। গিরাছে। পারুল জনমতের পক্ষাবলম্বন
করিয়াছে, এ কথাও সে জানিত না। ক্রমে কথাবার্তার সে বুঝি
যে শান্তিময়ী এবং পাঁঞুল উভয়েই জগদিম্তুর বিরাট পল্লীসংস্কাঁর-
১২৭
পল্লী-ভী।
ব্রতে সহায়ত করিতেছে, এবং তাহাদের ইচ্ছা শ্তাটোও জগদিন্দুর
বগুতা স্বীকার করে। ঈর্ষা, অভিমান এবং অনুয়াপর্বশ শ্তাটো
'অমনি বলিয়া উঠিল,
“বেশ তা হলে আমি একলাই শেষ অবধি দেখব, তবু শক্রুর
পায়ে মাথা নোয়াতে পারব না জেন ।”
অসীম ধৈর্যযশালিনী শান্তিময়ী তথাপি স্থিরক্ঠেই বলিলেন,
“োকন্দায় কোন ফল হবে না ভুলো । দশ টাকার খাজনার
জন্ত, দশ টাকার বেশী খরচ ক"রে- ডিক্রী পেয়েছিস। “কলকাকাটা,
'সহিমোহরের ছাপমারা ফাস্ কাগজ আলমারীতে পোকায় কাটছে,
টাকা উতুল হর নাই তাঁতে। মামল! লড়ে জয়ী হয়েছিম বটে,
কিন্ত দেশের কাছে, দশের কাছে যেই হীন পরাজয়ের কালি মুখে
'মেখেছিস__-তাঁতে সেই কালি আর ঘুচবে না জানিস্।”
মিথ্যা গর্ধে বক্ষ স্ফীত করিয়া শ্যাটো সদস্তে উত্তর করিল, _
“এই মুর্খ দেশের জনমতের কোন মুল্য নাই। আমি একা এই
'পদদলিত দেশের মথিত কগ্কালের উপর মাথা উচু কোরে দীড়িয়ে
আছি-_দেখে গ্রাম্য চৌকীদার থেকে কোম্পানী বাহাছুরের সর্বোচ্চ
প্রতিনিধি পর্য্স্ত আমাকে ধন্ত ধন্য কচ্ছেন। বচনসর্ধস্ব জাতির ব্যর্থ
বাগলতার চেয়ে, রাজার জাতির আশীর্বাদই আমার পক্ষে শ্রেরঃ |”
অতি ছুঃথেও শাস্তিময়ীর মুখে হাসি ফুটিয়া উঠিল। এতদিন
তিনি এই আত্মমধ্য।দা-জ্ঞ/নহীন শূর্খের জন্য তাহার অফুরন্ত শেহ-
ভাণ্ডার, অন্ধের যুক্তি তকের অ৩৩ |ধঙ্খ।সের সঙ্গে, উন্ধুক্ত রাখিয়া-
ছিলেন _-ভাবিয়৷ তীর অনুশোচপ।স ত।ৎ।5 এ।৭ ভারয়, গেল।
৯২৮
পলী-ভী
“কোম্পানী বাহাছুর মূর্খ নয় ভুলো__ত৷ হ'লে সাত সাগরপার
হ'তে দৌকান কর্তে এসে বিশাল সাম্রাজ্য জয় কর্তে পার্তেন ন৷
তার! । লক্ষ ব্যথিত নরনারায়ণের মিলিত কণ্ঠের আবেদন উপেক্ষ।
ক'রে যেই পাষণ্ড, পিঠচাপড়ানিকেই সংসারের সার সুখ কলে জান
করে, একটা প্রবল বীরের জাতি তাদের মূল্য জানেনা-_একথ| মনে
করিস না ।
স্বদেশবখসল তারা জনমত তাঁদের কাছে অলঙ্ঘনীয় দেবা-
'দেশের মত গ্রাহু-__তার! তোদের মত হীন, ৮৪ মুর ভাল
'কোরেই জানেন !
“কুকুর-বৃত্তিই যেই মানুষের শ্রেষ্ঠ অহঙ্কার, সেই মান্ুষকে__
মানুষ যারা, তার৷ কুকুরের চেয়েও হেয় জ্ঞান করে জানিস।
কার্যোদ্ধারের জন্ত মিষ্ট কথায় ভুলিয়ে কাঞ হাঁসিল করে,*তারপর
জুতোর ঘায়ে বুঝিয়ে দেয়__যে তার! বীরের জাতি !”
মুহূর্তের জন্য একটা পৰিস্ব নিস্তূতায় সমস্ত কম আলু হইয়া
রহিল। ্ঠাটো আর সেই গরীয়নী রমণীর মুখের উপর কোনও কথ!
কহিতে পারিল না। নীরবে দে সেই কক্ষ ত্যাগ কারবার প্ররাস
করিলে, শাস্তিময়ী সদৃঢন্বরে বলিলেন__
“আমার কথার উত্তর চাই ভুলো ।”
হাটোর মাথায় তখন 'ুণ ঢড়িয়াছে' সহস| সে উত্তর করিল,
“শত্রুর পক্ষাশ্রয় করেছ তোমক।-তোমাদের সঙ্গে আর আমার
কোনও সম্পর্ক নাই। আমার বিষয় শীঘ্রই বকৃরা কোরে নোৰ
আমি।* |
১২৯
পল্লী-ী
আবার একটা প্রবল চেষ্টায় নিজের উত্তেজিত চিত্ত সংযত্ত করিয়া
শাস্তিময়ী বলিলেন,__
“বড় যত্বে বার বছর ধরে তোকে পুভ্রের আসনে রী নিজে
তোর অধীন হয়ে চলেছি ভুলো-_ল্লেহের চেয়ে স্বার্থ বড় নয়-_তাঁই।
আমি জানি, আমার কথা তোকে শুনতে হবে কিন্তু সেই
আঘাভটা আর করতে চাইন1 1৮
“অনেকবার এমন কোরে অযথা ভয় দেখিয়েছে আমায়। এটা
ঠিক মাতা-পুক্র-স্ঘন্ধের উপযুক্ত কাজ নয়।” বলিয্বা জবন্ত হাসিতে
নিজের মুখপটে একটা পণ্ুত্বের ছবি ফুটাইয়া তুলির! গ্ঠাটো, আবার
€ ইঘর ত্য।গ করিতে উদ্যত হইল।
সকল ধের্য্যের বাঁধা অতিক্রম করিয়া অমনি শান্তিময়ী বলিলেন»--
“শোন ভুলো-_বাবার বিষঘ্নে তোর কোঁনও অধিকার নাই, সমস্ত
বিষয়ই আমার 1”
কথাগুলি শ্ত/টোর কাছে একট! গ্রকাণ্ড রা মত্ধ মত মনে
হইল। কুটিলভাপুর্ণ বঙ্গ হান্তের নি ত নে বলিল”_-“নিশ্চর, তুমি
আমার মাতৃতুল্-_মা বেঁচে থাকতে আইন পুত্রকে টি অধিকার,
দেয় বট-_কিন্তু ত নীভিনঙ্গত নর_-তা আমি মানি |”
[ক টার শিগুঢ় মন্দ বুঝিতে শাক্তিমদীর বিলম্ব হইল না।
সমান দৃঢ়তার সহিত তিনি আবার বাঁদিলে, ,-শীতিশায়্ের অনুজ্ঞ।
নয় ভুলো এই নে, পড়ে গাখ 1” |
বলিয়! শাস্তিমরী প্রবেটগহ তাহার পিতার উইলবানা একটি
দেরাজের ভিতর হইতে বাহির করিয়া শ্তাটোর হস্তে দিলেন |
১৩০
পলী-ভী।
উইলের কিয়দংশ পড়িয়াই শ্তাটোর চমক ভা্গিয়া! গেল। একটা
দারুণ ব্যথায় তাহার মস্তিষ্ক বেকল করিয়! দিল। অভিমানে দলিলগুলি
কক্ষতলে ছু'ড়িয়। ফেলিয়া শ্তাটো, বেগে সেই গৃহ ত্যাগ করিয়া! গেল।
তাহার মুখের ভাব ভাল রূপে পর্য্যবেক্ষণ করিয়া পারুলের
হৃদয় সহস! দ্রুত স্পন্দন করিয়া উঠিল। তাহার মনে হইল, যেন
তাহার ইহকাল পরকাল সমস্ত একত্রে সেই মুহূর্তে একটা গভীর
অন্ধকারে ঢাকিয়। গেল।
শান্তিময়ী দেখিলেন, যেই উদ্দেশ্ত লইয়া তিনি শ্তাটোর কাছে এই
তিক্ত সত্য কথাটা প্রকাশ করিতে প্রস্তুত হইয়াছিলেন_ তাহার
কার্যফলে-_তাহ! সম্পূর্ণ বিপরীত হইয়া দীড়াইল।
তিনি ভাবিয়াছিলেন, “হীন স্বার্থপর যুবক এই নির্ঘাৎ কথাট।
শুনিলেই অচিরে তাহার বশ্ততা শ্বীকার করিবে! কিন্তু শ্তাটোর
মুখভাঁব দেখিয়া তিনি বুঝিলেন, একট! দারুণ আঘাতে তাহীর হৃদয়
চূর্ণ হইয়! গিয়াছে।
সন্গেহ প্রবোধবাক্যে সাস্বনা দিয় প্রিয়তমা 'বধুকে বুকের কাছে
টানিয়৷ আনিয় ন্নেহময়ী, বিগলিত অশ্রধারে পারুলের মস্তক সিক্ত
করিলেন রুদ্ধ আবেগে পারুল ক(দিয়! কীদিয়া দ্বিগুণ বেদনায়
অধীর হইয়! পড়িল।
১৩৯
৫0১৩)
স। পল্ীর পথ ঘাট ছাড়িয়। বর্ধার জল আবার
ল, ঝিলের__তীরের তলায়ঙ্নামিয়। গিয়াছে। দিনকর
নীল আকাশের কোলে আরোহণ করিতেছেন।
[ ধরণীর কুমকুম-রাঙ্গ৷ অঙ্গরাগ--শ্তামল ক্ষ তড়াগের
ত হুইয়৷ তক্ তক্ ঝক্ ঝক্ করিতেছে । যেন__
1ঞ্চল্য পরিহার করিয়া, পৃথিবী সুন্দরী আবার তরুণীর
দ হাসিয়া! উঠিয়াছে।
1 পদ্ম, সেফালীগন্ধ আজি শরতের পরিপূর্ণ গর্কে
দর্তা জাগাইয়! তুলিয়াছে।
বরহ-বিধুর৷ পললীবধু, কলস কাকে ঘাটে যাইবার পথে
[লে, আড়নয়নে চা মধ্যে একবার
নান করিয়া লইতেছে। প্রাতসন্ধ্যা, নিশীথ-প্রভাতে
ই নৌ হইতে পরীমাতার রাগে গুজের গৃহাগমন
চরিতেছে)। .
টন্মাদনাম্ব আশ্িনের, এক হুন্দর প্রভাতে ক্ষুদ্র
সোণামুখীর শিশিরধৌত ঘাটের. কোণে বসিয়া:
মী সহত্র নৌকাধাত্রীর প্রাণ মাতাইয়! সপ্তম সুরে
১৩২
পরীং্ত্রী
আঙ্ি কি মোহন সান্জে-_
সোগার বরণী, জননী ধরণী,_-
দাড়ালে হাদয় মাঝে ॥
সেই মুহূর্তে ঘাটের অন্ত প্রান্তে নিঝিষ্টচিত্তে নবগোপাল ও
'অনস্তদেব শ্ঠাটো৷ সাহেবের সপিগুকরণের নির্ধ্টপত্র প্রণয়ন
করিতেছিল,_
“বলে যাঁর জন্য সি'দ কাঁটা, সে-ই বলে চোর! বেটা! বেইমানের
মাথায় পয়জার ঝাড়ি কুড়ি গুণে!” বলিতে বলিতে বৃদ্ধ অনন্তদেব
কুঞ্চিত ললাট-প্রান্তে অশখি-পদ্ম উত্তোলন করিয়া! বিকশিত দস্তপাঁটি
অধর অভ্যন্তরে লুকাইলেন।
নবগোপাল হিংঅ জন্তু বিশেষের মত ব্যর্থ জিঘাংসার শুন্য দীর্ঘ
' নিশ্বাস সহকারে বলিলেন, __“বল কেন দাদা! নৈলে আমি হলেম
সন্বন্ধী অর্থাৎ কি না-_,
বলিয়৷ নবগোপালবাবু ইচ্ছান্থুরূপ বাক্যুচয়নে অপারগ হইয়। মাথ৷
চুলকাইতে লাগিলেন ।
অমনি অনস্তদেব- -শ্বশুরের পিগাঁধিকারী” কথা কয়টি যথোচিত
উপস্থিত বুদ্ধির সহায়তায় জুড়িয়া দিলেন।
নবগোপাল, “সেই আমাকেও কিন! গল! ধা?” বলিষ্ কর্থাটা
শেষ করিয়া, অতি ছুঃখে নীরব হইলেন।
এবশ্রাকাঁর ভূমিকা করিয়! তীহাঁরা গভীর বেদনাভার পরম্পরের
কাছে বিবৃত করিতে লাগিলেন। | |
অনন্তদেব, যিনি আভূ'ড়ি দেহখাঁন৷ পাত করিয়া, পরকাল
১৩৩
গল্লী-্রী।
পর্ধ্যস্ত নরকের অন্ধকারে আচ্ছন্ন করিয়া, ভোলানাথের জমিদারী
রক্গণাবেক্ষণ এবং বর্ধিতায়তন করিয়া দিয়াছেন__অবশেষে সামান্য
কয়টা টাকা, যাহা তাহাকে হাতে ধরিয়াই ভোলানাথের দেওয়া
উচিত ছিল-_তাহার অন্ত দরোয়ান সাহায্যে গলাধাক! প্রদানে
তাহাকে কর্চ্যুত করিয়াই ভোলানাথ ক্ষান্ত হয় নাই) উপরন্ত
অপমান করিবার ভয়ও দেখা ইয়াছেন !”
এই আপশোয রাখিবাঁর স্থান অনন্তদেব খু'জিয়! পাইলেন ন|।
নবগোপালও বলিলেন,_পতিনি হলেন একটা মান্ঠিমান কুটুন্ব
লোক, তথাপি তিনি ভোলানাঁথের পাছুকানিয়ে ইছুরটির মত খাটিয়া
দেহপাঁত করিয়ছেন, তাহার৪ কিনা অবশেষে এই হ'ল! দানাপাণীর
বরাদ্দ পর্যান্ত বাজেরাপ্ত 1”
অতিশয় অভিমানে নববাবু--“এমন বোনাইয়ের গুষ্ির মুখে” এক
প্রকার অঙঙ্গয বস্ত তুলির দিবার কথা বলিতেছিলেন, অমনি
অনন্তদেব বাঁধা দি়। বলিলেন, এ
প্রাধে কৃষ্ণ! বর্ড ত একটা মানুষ, তার জন্তি আবার কটু
দিব্যি”
কিই বা এমন ছুলাখ দশলাখ টাকার ব্যাপার! তবে হ্যা,
'লীঠালারী ঠেঙ্গাঠেঙ্গী” করিয়৷ ছুইদশ হাজার টাকা যাহা তাহাদের
হাঁতস্থ হইয়াছে, তাহা জেবন্থ করিতে তাহার! কুষ্ঠিত হয়েন নাই।
কেনই বা হবেন? শাস্ত্রে ত আছে সর্বতে|ভাবে নিজেকে রক্ষা
করিবে। তাতে বাপু তোমার নজর দেওয়। কেন? মাসীমার
পুত্র তুমি, এমন ক্ষুদ্রনজর কি তোমার শোভা পায় ?”
১৩৭
পলী-তী।
এবপ্রকার বহু গবেষনান্তে নবগোপাল জিজ্ঞাসা করিলেন,_-
“এখন কি কর! যায় বল দেখি দাদা, তুমি হচ্ছ একটা বুদ্ধিবাজ
মুনিষি!”
স্থির গম্ভীরভাবে অনস্তদেব বলিলেন,__“আর করাকরি নেই
বাবা! এই চল্লেম ঠাকুরবাড়ী__রাত দিন হত্যে দিয়ে পড়ে থাঁকতে
হয় তাও থাকবো । তবু ছোটবাবুকে আবার গদিতে বসাব, তবেই
আমার নাম অনন্ত শর্মা] 1৮
কর্মকুশল বৃদ্ধের কণ্ঠে এমন একটা একাগ্র দৃঢ়তার স্থুর বাজি
উঠিল-_যাহাঁতে নবগোপাল সবিশেষ আনন্দে উৎফুল্ল হইলেন ।
অতিশয় আনন্দে নবগোপাল বলিল,_-“তা হ'লে আর দেরী কর!
নয়। যদিন্ত/ৎ ব্টোচ্ছেলে আগে ভাগে গিয়ে একটা রফা সফা
করে ফেলে, তা হলেই কিন্ত-_”
মন্তক কণগয়ন করতঃ নবগোঁপাল একটা উপমা খু'জিবার ব্যর্থ
প্রয়াস করিতে লাগিল। অমনি
কবরী বীধিতে, পয়োধর তেয়ীগি-_
আঁচল লুটাওল ভুমে।
গাহিয়া, সুমধুর সথরসংযোগে ভজহরি, নবগোপালের সঙ্গন্তার
পাদপুরণ করিয়া দিয়া__হো৷ হো শবে হাসিয়া উঠিল।
“ঠিক বলেছ শ্ঠাঁলা বাবু” বলিয়া! গল! শানাইয়৷ তজহরি আবার
গাঁহিল।_ ও
নিরজনে আনমনে গীথিছিন্ হার
শিথিম কবরী- বাস খসল হামার ;
১৩৫
পপঙ্ী-ী
_ তৈখনে গোপনে আঁখি চাপি কান্ত-_
লিরে শত হুযধূর চুমে ১
কত্বরী বীধিতে, পয়োধর তেয়াগি'-_
আঁচল লুটাওল তূমে ॥
ঠিক বলেছিস দাদা । ভজহরি তখনি আবার গান ধরিল,__
কুল ছাড়ি সই শ্তাম সায়রে-_
দিচ্গ যবে বাপ;
কাল! কোথা গেল, বুকে হলাহল-_
ঢালিল কলঙ্ক সাপ।
ভজহরির এবশ্রকার অযাচিত বাছুল্যচ্চায় বিরক্ত হইয়া! নব-
গোপাঁল বলিল,__
“যা বেটা পাগলের ডিম । হুর্গী বলে যাচ্ছি একট! শুভকাজে
কোঁথেকে হ্যাঙ্গাম জুড়ে বসল গ্যাথ 1৮
ভুজহরি অগ্রতিভ হইবার পাত্র নহে । “তাই ত' সবীত্বস্বাদটা
গুনিয়ে দিলেম দাদা_এই পিরীতের, নাটকে ত শেষ নাকের জলে.
চ”খের জলে এক ন| হয়ে যায় না”
« বলিতে বলিতে সে আবার একট! গো বিহারের দোহা আবৃত্তি
করিবার উপক্রম করিল। অগত্যা অনন্তদেব--বুকভরা অন্ুরাগ-
তরে সুমধুর স্বরে বলিল”
্্যা বাব! ভজহরি! তোঁমার মাসীমার কাছে একবারটি ঘুরে
এসে! ত বাবা । সে কিন! খাবার নিয়ে কত ডাকছে তোমায় 1»
১৯৩৬
লললী-ভী
“আহা, বেচারী! ঘরের পাগল বাঁধতে পারে না__পরের
পাঁগলের তরে টান কত!” বলিতে বলিতে ভজহরি আবাঁর গান
ধরিল। ূ
ঘ্বিরুক্কি না করিয়া-_বাঁকি কথ! গুলি যাইতে যাইতে রাস্তায় বলা
কওয়! করিয়া লইবার ভরসায়, যুগন মুর্তি অন্তর্ধান হইলেন আপন
মনে গাঁন সমান্ত করিয়া ভজহরি অর্ধপরিষ্ফুট স্বরে বলিল, _
“বাৰে না? পরেশ পাথর না ছলে সোণ! বন্বে কি করে?”
এমন সময় শ্রামল ও দয়িতা দিব্য ফুলের মাল! পরিয়া৷ কদন্ব
কুহ্ুম আহরণার্থ সেখানে উপস্থিত হইল ।
“ওরে ছোঁড়া ছু'ড়ী ছুটে চল-_ছুটে চল, পূজো দেখতে যাঁৰি
না?” বলিয়া ভহরি গ্তামলের সমিপবর্তী হইল।
“পালিয়ে চ-_পাঁলিয়ে ৮ নইলে পাগলা দাঁদামশায় আবার
বিয়ে কোরে ফেলবে কিন্তু।” লাঁজ-চকিতভাবে দয়িত! দূরে সরিয়
দাড়াইল।
পনারে পাগলী, আর বিয়ে কর্ব ন| তোকে । রাঙ্গ! বরটি ত,
তোর- সেজে গুজে, তোর আঁচল ধারেই বেড়িয়ে বেড়াচ্ছে রে।
তার সাধের গোয়াল শৃন্তি ক'রে পাগলার খেয়াল যোগাতে পারবি
কেন তুই ?” বলিয়৷ ভজহরি অপার্থিব আনন্দে বিহ্বল হইয়া উত্তয়ের
1সক সন্েহ দৃষ্টি নিক্ষেপ করিল।
দূয়িত। আবদারের স্বরে বলিল, ছুষঈমির কথা কইবে ত+
তোমার গাঁজার কলকে ভেঙ্গে দেব কিন্তু” কথা কয়টার 'মধ্যে
সগ্তস্কুরণশীল কৈশোর লজ্জার প্রথম ললিত-বঙ্ধার স্পষ্ট বাঁজিয়৷ উঠিল।
১৩৭
স্পহলী- গ্্ী
“তা দেছুড়ীদে। আর কি গাজা খাবরে ছু'ড়ী? দেশ জুড়ে
কেমন জমাট নেশার কীশর শঙ্খ বেজে উঠেছে-_গাঁজা থেলে সেই
আমেজট। ভেঙ্গে যাবে বে!” বলিতে বলিতে ভজহরি এক লক্ষে
কদন্ববৃক্ষে আরোহণ করতঃ রাশিকৃত ফুল কুন্ুম পাঁড়িয়া৷ অচল পুর্ণ
করিল। |
“হ্যা দাদাবাবু, কোথায় পুজে! হবে বল্লে না?” বলিয়৷ প্যামল
ভজহরির হাঁতে হাত মিলাইল”_
“গ্রহ! ভুলে গিছন্ু! পুজে৷ হবে মিলন ঘরে, মায়ের পুজে।
হবে-_মহাঁবলির বাগ্ধ বেজে উঠেছে গুনছিস না? চল নেচে
নেচে__ গেয়ে গেয়ে পুজো দেখবি চল ।” বলিয়াই ভ্হরি সোল্লাসে
গাল
আজি মিলন-মন্দির ঘারে -
চল ছুটে চল পলী নিবাসী, লয়ে ফুল ভারে 'ডারে॥
গু ৬
ক
চু
( ১০)
পল্লী জুড়িয়া মাতৃ-পুজার বৌধন-বাগ্য বাজিয়া উঠিয়াছে। প্রতি
'পল্লীগৃহে আনন্দের উত্ন বহিয়। যাইতেছে,।
এমন আনন্দের দিনেও অনুশীলার প্রাণে শাস্তি নাই। আজি
সাতদিন ধরিয়া সে মাতা সত্যভামার আগমন প্রতীক্ষায় পথ চাহিয়া
রহিয়াছে, কিন্তু মা আসিলেন না। ব্যর্থ আশার ব্যথায় তাই পতি-
পরায়ণা সাঁধবী, কাশীযাত্রার জন্য জগদিন্দকে শতবার অনুরোধ
করিয়াছেন ।
জগদিন্দুর এক কথা! “অকালি বৌধনের ফল ভাল হয় না।
পুজার সময় হলেই ম! আঁসবেন-_-আমার কথা মিথ্যা হবে না ।”
পুনঃ পুনঃ একই উত্তর শুনিয়। অন্ুশীলার সকল ধৈর্য শেষ হইয়া
গিয়াছে । “আজি দেড়, বৎসর সে শ্বশ্রুর সেবা করিতে পায় নাই।
দারুণ অভিমানে চলিয়া 'গিল্মাছেন তিনি-তথাঁপি তাহারা গিয়!
তাহার পায়ে লুটাইয়া পড়িয়া-ক্ষমা চাহিলে কি তিনি ফিরে না এসে
পারতেন !”
শত অনুরোধেও অনুমীল! স্বামীকে প্রবুদ্ধ করিতে পারে নাই।
গভীর অন্ুুশোটিনায়, দারুণ মনোবেদনায় তাই পল্লীবধূর নয়নপল্প
অশ্রুত্োতে ভরিয়া ওঠে বুকতাঙ্গা দীর্ঘস্বাসে পল্লীলক্ষীর দি
পাঁজর ভাঙ্গিয়! যায়!
ঠাকুরবাটার ফুল বাগানের নিরালায় বসিয়৷ ্বাীলোহাগিনী
১৩৯
পল্লী-ী।
আজি আবার নৃতন করিয়৷ তাহার পুরাতন অনুরোধ পতিপদে-
নিবেন করিবার উদ্ভোগ করিল। এমন সময় অনস্তদেবের সঙ্গে
নবগোপাল সেইখানে উপস্থিত হইলেন। অনুশীল! ঘোষটা টানিয়া'
অমনি অন্দর-অভিমুখে চলিয়া যাঁইতেছিলেন ? কিন্তু বাধা দিয়া
অনস্তদেব জৌড়করে নিবেদন করিলেন, _.
প্লজ্জা কিম? অধম ত তোমাদেরই সাত পুক্ুষের নফর!
সন্তানের কাছে সঙ্কোচ করো নামা। আমরা যা বলতে এসেছি,'
শুনে- একটা সংযুক্তি ঠিক করে দাও মা ।”
সেই প্রদেশের সকলেরই বিশ্বাস ছিল যে, জগদিন্দু নিতান্ত স্ত্ণ ।
স্ত্রীর পরামর্শেই তিনি স্বেচ্ছায় জমিদারীর ঝঞ্চাট ত্যাগ করিয়া, স্থুখের:
সন্ধানে ঠাকুরবাড়ীতে আশ্রয় লইয়াছেন।
অধুনা তাহার সাঁধনা-বৈরাজ্ঞের বিপুল সাফল্য দেখিয়া অপর.
সকলেরই সেই ভুল ধারণ! ভাঙ্গিয়৷ গিয়াছে। কিন্তু অনস্তশর্মা
পৃথিবীর বহিভূ্তি জীব, তিনি এখনও সেই ধারণ! লইয়াই বসিয়া
আছেন-_তাই বুঝি তিনি অন্ুশীলার সহায়ত! ভিক্ষা করিলেন।
গভীর বিষয়বুদ্ধির পরিচায়ক ভ্রুডঙ্গীসহ অনস্তদেব- নিচ, আর.
সবুজ দুর্ববাদলোপরে বসিয়! পড়লেন; নবগোপালও তাহার প্রদর্শিত
পশ্থা অনুসরণ করিল। অতঃপর উভয়েই একটা জমকাল গোছের;
নটিকীয় ঘটনা সংঘটনের অপেক্ষায় উদ্গ্রীব হইয়া রহিল।
ধূরন্ধর যুগলের আকন্মিক আগমন এবং অনন্ত শর্মার আড়রপূর্ণ
ভণিতাবাক্যে বিস্মিত হইয়া সরলভাবেই জগদিন্দু বলিলেন,__
“আজ হঠাৎ কুটুষ্বের সঙ্গে আপনাকে দেখে আমার প্রাণ কেঁপে
১৪০
পঙ্লী-
'উঠেছে। আবার কোন চক্রাস্ত ক'রে ঠাকুরবাঁড়ীটি পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত
করবার অভিরূচি করেছেন কি?”
“মহাভারত ।৮ বলিয়া অনস্তদ্েব জিত কাটিলেন। তথাপি
জগদিন্দু বলিয়। গেলেন,__
“মন্দ কি? সংসারের শেষ বীধনটাও কেটে যাঁয়! যাক্,
যা! বলতে এসেছেন অল্প কথায় একটু তাড়াতাড়ি বল্ে বড়ই নুখী
হব ।”
যুগল নর-শৃগালের সংসর্গ জগদিন্দুরও অসহ্ জ্ঞান হইতেছিল।
তাহার মুখাবয়বে দারুণ ঘ্বণার ভাব ফুটিয়া উঠিল। বুঝিতে পারিয়াই
নিজের উপর তাহার ধিক্কারের ভাব জন্মিল।
বিকশশিত দস্তপাটি হান্তের লান্তে উদ্ভাসিত করিয়! নববাবু গদ
'গদ্দ কণ্ঠে বলিলেন,_
“সে কি বেয়াই! অন্যায় অশ্নুমতি করে! না। আজ আম্রা
সত্যই তোমার উপকার কর্তে এসেছি 1”
এবার জগণিন্দু সত্যই ভীত হইলেন। জীব বিশেষের উপকার
“ষেকাঁধ্যতঃ সকল ক্ষেত্রেই মহ! অপকারে পধ্যবসিত হয়, তাহ। তিনি
জানিতেন। তাই ভয়ে ভয়ে তিনি বলিলেন, __
.. প্ুৰ বাধিত হলেম। কিন্তু সত্যই নববাবু, সম্্রতি আমাদের
কাহারও কোন উপকারের প্রয়োজন নাই। বৈরাগী 'আমরা-_
একৌপ্ীীনমাত্র অরুলম্বন করেই দিব্যি স্থথে আছি।”
ন্ুযৌগ পাইয়। জ্বনস্তদেব বজিলেন,_
«এ কথা বলে আর কেন লজ্জা দেন ছোটবাবু? না বুঝে
১৪১
ল্লী-ী
ুষ্টের কথায় কত বড় একট! মহাঁপাঁপ করেছি, তাই বুঝতে গেরে
আজ প্রায়শ্চিত্ত করতে এসেছি আমর! |
জগদিন্দুর প্রশান্ত মুখে হাঁসি ফুটিয়া উঠিল। অতি সরলভাঁবে
তিনি বলিলেন,-_ |
“আপনার! যা করেছেন, দেখতে সেই কাজটা! খুব নোংরা! হলেও),
আপনি জানেন না! যে, তার ফলে কি একট! বিরাট উপকার হয়েছে
আমার 1”
বিপরীত অর্থ বুঝিয়। আবার শুফ হাঁসির সঙ্গে অনন্ত বলিল,_
“যাই বলেন, আমরা এবার সবই বুঝেছি। তাই আমরা ছুটে এসেছি
আজ--আবার আপনার জমিদারী আপনার হাতেই ফিরিয়ে
দিতে”
নবগোপাল এবং অনন্ত উভয়েরই ধারণ! ছিল যে এমন একট
কথা গুনিয়াই জগদিন্দু আনন্দে অষ্টধা বিভক্ত হইয়া যাইবেন। কিছু
তেমন কিছুই হইল ন1। পক্ষান্তরে কথ্থাটায় জগঘিন্দুর প্রীণে যুগপৎ
তয় ও দ্বণা জাগাইয়া তুলিল। তিনি ধীরে স্থিরকষ্ঠে বলিলেন৮_
“আমি ত তা চাইনি? অযাচিতে এতটা অনুগ্রহ পরিপাক
করাও আমার পক্ষে শক্ত হ»য়ে পড়বে । আর, আঁপনাদের নিগ্রহে
ভর “করিন! বটে, কিন্তু আপনাদের অযাচিত অনুগ্রহে সত্যই আমার
ৰড় ভয় হয” জগদিন্দুর অন্ুকম্পামিশ্রিত কটাক্ষে নবগোপাল
ও অনন্তের অখিপদ্ম মাটির সঙ্গে মিলাইয়৷ |াইতে চাহিল। |
অনন্ত মনে করিল যে, তাহারা যেআঁজ কত বড় একট
পাশুপত অস্ত্র জগদিন্দুর হাতে তুলিয়! দিতে আসিয়াছেন, তাহ!
১৪২
শল্ল্লী রী
তিনি হৃদয়ঙঈ্গম করিতে পারেন নাই।: দুর্বল মনকে ইবপে প্রবুদ্ধ
করিয়া তিনি আবার কহিলেন,
“অন্যায় অন্ুমৃতি করবেন না ছোটবাঁবু। দৌষ স্বীকার কোরে
মার্জনা চাইতেই ত” আমরা এসেছি ।”
“তা হ'লে আর কষ্ট ক'রে আসবার কোন প্রয়োজন ছিল না।
কেন না__আমি বন্ুপুর্কেই সকলকে মাপ কোরেছি।” উদার
হৃদয়ের সমস্ত পবিত্রতার সঙ্গে জগদিন্দু তাহাদের চক্ষের উপর
চাঁহিলেন।
আনন্দে আটখাঁনা হইয়। অনস্তদেব কহিলেন,_-“এমন ন| হ'লে
দেশটা! শুদ্ধ মাতিয়ে-_অর্থাৎ কিনা ছাই__»
প্রাণের মলিনতা চাপিয়। রাখিবার ব্যর্থ চেষ্টায়, আজি ব্যর্থ
মনোরথ কুটচক্রীর মুখে তার স্বভাবসিদ্ধ সহজ, সরল খোঁশামোদের
ভাষাও ভিন্নরপে বাহির হইয়া পড়িল।
হাসিতে হাসিতে জগদিন্দু বলিলেন,_-“বুঝেছি দাওয়ানজী !
মনের ভাব__ভাষার চেয়ে খুখের ভঙ্গীতেই বেশী বুঝা যায়”
সুমধুর আপ্যায়নবাক্যে পুরুষরক্র-ঘ্বয়কে বহির্বাটীতে অপেক্ষা
করিতে বলিয়া, জগদিন্দু অনুশীলার সঙ্গে অন্দরে গ্রবেশ করিবার
উদ্ভেগ করিলেন।
অনন্ত ছ্োটবাবুর ছঃখে গলিয়! গেলেন।' হায়, হাঁয়, এমন
বোঁকা না হলে কি রাজত্বি খুইয়ে-চাষ! ভূষার সঙ্গে গাটছড়া
ব/ধতে যায়! |
যাহা হউক, অনন্ত আজি প্রতিহিংসার প্রবল অনলে জলিয়া-_
১৪৩
"পিন্ী-্ী
'জগদিন্দুর হাতে সত্যই শ্তাটোর “জীবন মরণের কাটি” তুলিয়। দিতে
'আসিয়াছেন। তিনি নিশ্চয় জানেন, জগদিন্দু যত বড় মূর্খই হউক
'না কেন যখন সেকথা সে বুঝিতে পারিবে, তখন তাহাদেরে
“কোলে” তুলিয়৷ নিতে পথ পাইবে না।
তাই, কষ্টে সকল সৎসাহস একত্রিত করিয়। লইয়া, লালি কাঁপড়-
'মৌড়া এক তাড়া সৃল্যবান দূলিলপত্র সে জগদিন্দুর পায়ের তলায়
“ধরিয়া দিয়! বলিল,_
“এই নিন্ ছোটবাবু! লাখ টাকায় || কেউ কিনে দিতে পাঁরত
না, তাই আজ আপনাকে দিয়ে গেলেম।” একগাল হাসির প্রদীপ্ত
আলোকে অনন্তের আকর্ণবিশ্রান্ত অধরগহ্বর উদ্ভতান্িত হইয়। উঠিল ।
জগদিন্দু কিন্তু এই মহামূল্য উপটৌকনের প্ররুত মূল্য নির্ধারণ
করিতে পারিলেন না। তাই তিনি সেই কথ জিজ্ঞাস করিলেন ।
অতিশয় হর্যভরে আবার একগাল হাঁসির সঙ্গে অনস্তদেব বলিলেন,
“থুলে দেখুন ছোটবাঁবু! সত্য দ্লিলগুলি সব এতেই বীধা
রয়েছে; এগুলি পাঁলটে জাল দলিল দাঁখিল কোরেই ত'-
আর বলিবার আবশ্তক হুইল না। এবার জগদিন্দুর কাছে
সকল কথাই পরিচ্ফুট হইয়া! গেল। ক্ষোভে, লজ্জায়, বিন্ময়ে তিনি
'অধীর-হুইয় ্ষণকাল নীরব রহিলেন। পরে ্বভাবসিদ্ধ মধরতার |
সঙ্গে ধীরে ধীরে বলিলেন,_
“ভুল বরেছ অনন্ত! স্বর্গের সুথে ঠাকুরবাড়ীতে রয়েছি9
'আর কি আমর! জমিদারীর নরকে নেমে যেতে পারি ?”
অনস্ত বুঝিলন1! যে কতবড় আত্মত্যাগী মহা পুরুষের সুখে সে.
১৪$ |
শ্লী-
অমৃত বলিয়া বিষ ধরিয়া দিতে আসিয়াছে। তাই সে ভাবি, বুঝি
মূর্ঘটা এখনও বুঝতে পারে মাই ধে কি সকল মহান্ত্র তাঁর হাতে তুলে
দিয়েছি ।
মনের ভাব গোপন রাখিয়! কঠোর স্বরেই সে বলিয়৷ ফেলিল,__
“সেকি ছোটবাবু! এত ছেলে মান্ধুধ ত নন্ আপনি যে, এই
কাগজগুলির মুল্য জানেন না। রসিক উকিলের হাতে নিয়ে এই
কাগজগুলি দিলে, আপনার বিষয় ত আপনার হাতে আসবেই_ স্থধু
একটা দরখান্তের ওয়াস্ত।! তারপর শ্রীযুতের নানপক্ষে চৌদ্দটি বছর
শ্রীবরবাস রোখে কেঁ ?
দারুণ উতৎকণ্ঠায় অনন্ত, জগদিন্দুর পানে চাহিয়।৷ রহিলেন।
আবার হাসিতে হাসিতে জগদিন্দু বলিলেন,_-“আমি বিষয়
চাইনা, অনন্ত । জানি, তুমি আজ কি মহা অস্ত্র, ভোলাধা'র,আততাম়ী
ভেবে আমার হাতে তুলে দিচ্ছ_-তার সর্বস্ব কেড়ে নিতে পারি
তা দিয়ে। কিন্তু তুমি জান না, তিনি আমার ভাই-_ভাই কি
কখনো শক্র হ'তে পারে? তিনি যে আমার ভাই, আমার মান
অপমান, শুভাশ্তভের দৌসর !
“বেইমাঁন তোমরা, তাই, ভাইয়ের হাতে ভাইকে হত্যা করবার
বিষ-মাখান ছুরি ধুরে দিচ্ছ। ছি, ছি! অনন্ত, নববাবু, তোমর!
কাশী যাও- গঙ্গার জলে প্রাণের মরলা ধুয়ে এসে। গে!
«মিথ্যা মামলার লৌভ দেখাতে এসেছ আমায়? ছি, ছি! অনন্ত
তোমরা কি? :
“অধম প্রাণহীন জড় পদার্থের চেয়েও নির্জাব আমরা ! পিঞজর-বন্ধ
১৪৫
১৪
পল্লী-ী৷
পাখীর চেয়েও অসহায় আমরা! মনে করোনা! অনন্ত, খাচা' সোণা
দিয়ে তৈরী হ”লে__বা চাল জলের বদলে ছোলা আর গোলাপ জলের,
ব্যবস্থা করলেই__পিগ্রবন্দী পাখীর বন্ধনজাল! ঘুচে যাঁয়। নাঁ_
অনন্ত! এক মহা বিশাল কারাগারে সবাই বন্দী আমরা । কারু
ভাগ্যে খেতাব সার্টিফিকেটরূপ মখমলের আবরণ, কারে! জমিদারীরূপ
ছোঁল! দানার বরাদ্দ__কারু চাকুরীরপ স্বণপিঞ্জর !
“কিন্ত সবাই সমান ভাবে এক কারাগাঁরে বন্দী আমর! ! যাঁর
বন্দী, তিনি যেই মন্ত্র পড়াবেন-_তাই পড়তে হবে! নৈলে পক্ষীর জীবন,
চাঁকর বাকরের সঙ্গীনের খোচায় এক মুহূর্তে অনন্তের সঙ্গে মিশে যায়!
দএই বন্দীর জীবনে কি প্রলোভন আমার হাতে ধরে দিতে চাও
অনন্ত? প্রলোভনের সামগ্রী কি আছে আমাদের ?”
বলিতে বলিতে দূর দর করিয়া অশ্রমালা ০০০ গণ্ড বহিয়!
বুক ভিজাইয়া দিল।
এরই সুদীর্ঘ ভাবময় বন্তৃততার বাণ অনন্তের প্রাণের একটি নিভৃত
7 কোণেও আঁচর কাটিতেপারিল না । তাহার ধারণায় আসিল না যে,
“এমন ব্রঙ্ধান্ত্রগুলি হাতে পাইয়াও কেমন করিয়া জগদিন্দু হেলায়
উপেক্ষা করিতে পারে ।” অত্যন্ত অনুকম্পার স্বরে সে বলিল,
_ শসে কি ছোট বাবু! দেখুন একবার, কতগুলি মার বাণ'
আপনার জন্য সংগ্রহ করে এনেছি ।”
বলিতে বলিতে অনস্তদেব সপ্ত-বস্ত্রখগু-মণ্ডিত মহামূল্য রত্বরাজি
উন্মত্ত করিয়া! জগদিন্দুর অন্ধ নয়নের কাছে ধরিয়া দিল। কিন্ত
সুমধুর হান্তে স্বর্গীয় পবিত্রতা স্থষ্টি করিয়৷ জগণদিন্দু তাহাকে বলিল,__
১৪৬
পল্লী-গী।
“আমি দেখতে চাই না! । বলেছিত আমার মোহ কেটে গেছে ।”
“মাজ্ঞে মামলা মোকদামা কিছুই কর্তে হবে না। এই কাগজ-
গুলি আপনার হাতে পড়েছে জান্তে পারলেই আপনার বিষয়
ফিরিয়ে দিয়ে-_পাঁয়ে পড়ে প্রাণ বাচাতে পথ পাবে না।৮ বলিয়া
অনস্তদেব জগদিন্দুকে দৃষ্টিশক্তি প্রদানের শেষ চেষ্ট|! করিল।
“বলেছিত, আমি বিষয় চাই না! কি করবে! দেওয়ানজী, বিষয়-
মদে নেশা হয় না বলে-_বড় নেশার চুর হয়ে আহি আমি!” বলিয়
'আবার জগদিন্দু সমুচ্চ হাসির সঙ্গীতে আকাশ বাতাঁস ভরিয়া দিল।
এতক্ষণে নবগোপাঁল এবং অনস্তূদ্বব উভয়েরই নিজ নিজ আগু
বিপদের কথ! মনে পড়িল।
“তা হ'লে আমাদের কি হবে?” বলিয়া উভয়ে ছোট বাবুর
করুণাভিক্ষা করিল।
«কিছুই হবে না। ছোট হিন্তায় বা পুলিশে কোঁথাঁও ধারয়ে
দেব না তোমাদের। এ অবস্থায় ওখানেই কাগজগুলি রেখে যাও,
বড়বাবুকে ফিরিয়ে দেবখন ।”
বলিয়া জগদিন্দু আবার সুমধুর হাঁসির বৃষ্টিতে বাগান পাবিত
করিয়া দিলেন ।
'তন্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ" এই মহান বাক্যের অনুসরণ করিয়৷
নবগোপাল এবার নিজের হাতে হাল গ্রহণ করিয়! বলিল, _“নুস্থ হয়ে
ভেবেচিন্তে কি জানেন ছোট বাবু”
তাহার কথায় বাঁধ দিয়া জগদিন্ু বলিলেন “শোন মূর্খ তুমিও
শোন বুদ্ধ! ব্যাঁভিচারে সমস্ত জীবনটা কাটিয়েছ__ভাবনার অবদর
১৪৭
প্জনান্ী . | |
পানি তোমরা, তাই অমৃত বলে আমার মুখে বিষ তুলে দিতে চাও।
সংক্ষেপ দেড় বংসরের অবসরফলে আজি এই গ্রদেশের শুল্ক মাটিতে
মোঁপা ফলেছে ভাঁখ। প্লাবন-মারী-মধিত কন্কালের মুখে অমৃত ঢেলে,
তাঁকে আবার জীব ক'রে তুলেছি ভ্ভাখ । অতুল এশ্বয্ের বিনিময়ে
যা কেনা যায় না ত্যাগের মূল্যে বড় স্থূল ত। 1” |
এইরূপে ব্যর্থ মনোরথ হইয়! প্রস্থানকাঁলে অদস্তদেব তাঁবিল,_
“চিরকেলে আহাঙ্গক তাই জগদিন্দুর ভাল মঙ্গ জ্ঞান নাই।” আর
নবগোপাল? দারুণ হতাশার ব্যথায় মুখ কুটি সে বলিয়া
গেল যে-_ :
“হাতে পাইয়াও যখন জগদিন্দু মহারত্বের আদর করিল না.
কৃতজ্ঞতাপূর্ণ ধন্যৰাদের পরিবর্তে যখন সে তাহাদের তিরক্কার করিয়!
বিদীয় করিল__-তখন তাহায় কিছুতেই ভাল হুইবে না ।৮
যুগণসু্তি বিদায় হুইয়৷ গেলে আরামের দীর্ঘ-নিশ্বাস ছাড়িয়!
অনু্গীল| বলিল-_“লোক ছুণ্টা ভাৰলে, আমরা বড় বোকা ।”
তাহ।র কথায় লায় দিয়া জগদিশ্দু বলিলেন, “ভাববে না? এরই
হচ্ছে ছুনিয়া ! চোর জুচ্চোর যাঁরা, তার! ভাৰে গৃহস্থের৷ বড় বোকা !
মাতাল যারা, তার! ভাবে মানুযগ্ডলি বড় বোঁকাঁ_তাই এমন সুধা
* খেয়ে দেখলে না। ভোগী ভাবে, যোগীগুলি অতিশন্ধ বোকা '
ছুনিয়াটা তাই তোগ করলে না ।”
এমন সমর ধীরে ধীরে শীস্তিময়ী পারুলের সহিত পুজার ডালি
লহ্য়া ঠাকুর বাড়ী যাইবার পথে, জগদিন্দু এবং অনুশীলাঁর সাক্গাত
পাহয়! ধাড়াইলেন।
১৪৮
পঙী-ত্রী
উভয্নের হন তখন বিষ ভারাক্রান্ত । সেই দিন অবধি অনেক
চেষ্টা ররিয়াও আর তাহারা স্টাটোকে তাহাদের মনের কথ বুঝাই
বলিবার অবকাশ পায় নাই। শ্ঠাটোর কল্যাণার্থ তাই তীহাঁরা
ঠাকুবাড়ী পৃজ। দিতে আসিয়াচ্ছেন।
কথাপ্রসঙ্গে শাস্তিময়ী জগদিন্দুকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “ওদের
ছুলনকে এদিক দিয়ে যেতে দেখলেম ন৷ ?”
অন্নুশীলা আনুপুর্বিক সমস্ত কথা তাহাদিগকে বুঝইয়া বলিল ।
সকল কথ! শুনিয়৷ শাস্তিময়ী এবং পারুলের প্রাণ অব্যক্ত কৃতজ্ঞতার
বন্যায় ভরিয়া গেল।
“এত উদার, এত মহৎ তুমি ঠাকুরপো--” বলিতে বলিতে
জগদিন্দুর হাত ছুখানি পারুল চ'খে জলে ভিজাইয়া দিল।
সকল দ্বিধা, সকল বিভ্রান্তির শেষ মোহ তাহাদের প্রাণ, হইতে
সেই মুহূর্তে তিরোহিত হইয়! গিয়া, মনে মনে উভরকে দেশাত্মবোধের
মহামন্তরে দীক্ষিত করিয়! ফেলিল ॥ পু
জগদিন্ুর অন্গুরোধে শ্তাটোর “মারণ অন্ত্রগুলি” গ্রহণ করিয়া,
ভক্তিভরে বিগ্রহপুজা শেষ করিয়া, বধূসহ শীস্তিময়ী শ্যটোর উদ্দেশে
ছুটিল। তাহাদের স্থির বিশ্বাস ছিল যে, কথাটা যখন শ্তাটোর
কর্ণগচর হইবে_য্ত বড় পাষণ্ড হউক না কেন সে, এই অপূর্ব
ত্যাগ তিতিক্ষার তেজে গলিয়া নিশ্চয় সে ছুটিয়া আসিবে-_-ভাইয়ের
সহিত ভ্রাতৃত্বের আলিঙ্গনপাশে বন্ধ হইবে। এত বড় একটা
্বার্থত্যাগের আকর্ষণ ব্যর্থ হইতেই পারে না !
এতদিন হাঁটো বন্ধ ছুয়ার কক্ষে আবদ্ধ ছিল। কিন্তু সেই দিন
১৪৭
প্দী-ভী।
প্রত্যুষেই সে কোথায় চলিয়া গিয়াছে। তই শুন্ত কঙ্ের মুক্ত দুয়ারে
দাড়াইয়া শাস্তিময়ী ব্যর্থতার ব্যথায় কাতর হইয়া পড়িলেন।
নিদারুণ অনুশোচনা এবং অজ্ঞাত অমঙ্গল আশঙ্কায় ব্যাকুল
হইয়া পতিসোহাগ-সর্কাস্বা সাঁধবী, চেতন! হারাইয়৷ ভূমিতে গড়াইয়া
পড়িল।
পেস পড়ে
(১৫)
শান্তিময়ী দীর্ঘকাল কর্তার উইলের কথ! গোপন রাখিয়া শ্তাটোকে
জমিদারীর সর্বময় কর্তৃত্ব প্রদান করিয়াছিলেন-_-উচ্চতম এক মহাঁন
উদ্দেস্তের প্রেরণায় ।
তিনি অপুভ্রক। দত্তক গ্রহণের অধিকার উইল অনুসারে
তাহার ছিল; কিন্তু পরের পুভ্রের মাতৃত্ব অপেক্ষ। ভগিনীপুত্রের :
মাতৃত্বই তিনি স্কাঘনীয় জ্ঞান করিলেন। বিশেষতঃ শ্তাটোকে তিনি
শৈশবাবধি পুত্রন্নেহে লালনপাঁলন করিয়া, তাহার উপর সত্যই পবিত্র
মাতৃত্বের উচ্চতম দাবী সংস্থাপন করিয়াছিলেন ।
তাহার দান অপেক্ষা কর্তার উত্তরাধিকার-স্ত্রে বিষয়প্রাপ্তি
শ্যাটোর অধিকতর গর্ধের বিষয় হইবে, ইহাই শাস্তিময়ীর বদ্ধমূল
ধারণা ছিল। নির্ভীজ পরার্থপরতার প্রেরণাঁয় তাই শাস্তিময়ী এত-
দিন শ্যাটোকে উইলঘটত কোনও কথ! জানিতে দেন নাই।
কিন্ত শ্যাটের স্বেচ্ছাচাঁরিতা যখন শাস্তিময়ীর ধৈর্যের সীমা
অতিক্রম করিয়া! চলিল, তখন পিতার বিষয়, সম্মান, প্রতিষ্ঠা বজায়
১৫৩
রাখিবার জন্য তাহাকে বাধা প্রদান করিতে হইল। শাস্তিময়ীর
ধারণ! ছিল সহজেই তিনি হীন স্থার্থান্ধ যুবককে আয়ত্বাধীন করিয়া
আবার সংসারে পূর্বের শাস্তি ফিরাইয়৷ আনিতে পারিবেন।
কিন্তু ভাগ্যদোষে ফল বিপরীত হইয়া দীড়াইল। শ্যাটে। মনে
করিল, শাস্তিময়ী কর্তার উইল গোপন রাখিয়৷ তাহাকে প্রতারিত
করিয়াছেন। কেন না-_বিষয়ের কপর্দকমাত্রের স্যাষ্যাধিকারী
ন| হইয়াও-_-শাস্তিময়ীর ছলনায়, নিঃসঙ্কোচে সে এতদিন মিথ্যা
জমিদারীর মোহে নিমঞ্জিত ছিল। |
শীস্তিময়ীর সমুচ্চ হৃদয়ের উচ্চতর ত্যাগের মহান পবিত্রতা
উপলব্ধি করিবার শক্তি শ্যাটোর ছিল না-_অত কথা সে ভাবিতেও
পারিল না। সোজ। কথায় সে বুঝিল, নিজ আয়ত্বে রাখিয়৷ যথেচ্ছ
কর্তৃত্ব করিবার জন্তই তিনি কর্তার দ্বারা উইল করাইয়া, সেই উইল
এতদিন গোঁপন রাখিয়াছিলেন।
কাজেই শ্তাটো যখনু বুঝিতে পারিল যে, এতদিন সে মিথ্য।
জমিদার সাজিয়৷ একট! অভিনয়মাত্র করিয়া আসিয়াছে, বিষয়ে
সত্যই তাহার কোনও অধিকার নাই--তখন তাহার. হৃদয়ে এমন
একটা প্রবল আঘাত লাগিল যে, সেই আঘাতে তাহার ভবিষ্যতের
সকল কল্পনাচিত্র ভাঙ্গিয়৷ গেল।
শ্তাটো জান্তি যে, মাতামহ বর্তমানে মাধিরোগ ঘটিলে দায়ভাগ
অনুসারে দৌহিত্রের সেই বিষয়ে অধিকার নাই। তথাপি যখন
শাস্তিময়ী স্বেচ্ছায় তাহাকে বিষয়াংশ ছাড়িয়া দিলেন--তখন তাহ
অপর সকলের 'অজ্ঞত। এবং নিজের সৌভাগ্য ব্লিয়াই সে মনে করিল।
১৫১
গজী-ী।
এতটুকু আজ্প্রবঞ্চনা হ্তাটোর চরিত্রে সম্ভব এরং স্বাভারিক ।'
কিন্ত যখন সে জানি যে, উইল সত্বেও জানিয়। গুনিয়৷ কেবল
অনুগ্রহ করিয়। মাসীম! তাহাকে কৃত্রিম জমিদার সাজাইয়। রাখিয়া-
ছেন, এবং নিজের . অভিষ্টপপে বাঁধ! পাইয়াই তিনি উইলের বলে
তাহার অনুগ্রহের দাঁন ফিরাইয়৷ লইতে প্রস্তুত হইয়াছেন_তখনই
হাটোর হুম্ম, নিদ্রিত অভিমান জাগিয়! উঠিল!
ষ্টাটোর হাতে যথেষ্ট অর্থ থাকিলে সে মাঁসীমার সহিতও আবার
মামল! মকদ্দাম! লড়িয়া দেখিত। কিন্তু শাটোর এক কপর্দাকও
সম্বল তখন অবশিষ্ট ছিল না। উপরন্ত সে করিত জমিদার
সাজিয়৷ অপরের বিষয়ের অর্ধাংশ নিজের বলিয়া! হুইবার বন্ধকও দিয়
বসিয়াছে। অর্থ এবং বিষয়ের জন্য প্রতারণায়য়ী মাসীমাতার
পায়ে লুটাইয়! পড়া ছাড়। তাঁহার গত্যন্তর নাই__কিন্তু শ্যাটোর সেই
প্রবৃত্তি হইল না।
তাহার মনে পড়িল, কেমন করিয়! সে এতদিন মাসীমার সহিত
সমান অংশীদাররূপে মাঁথা চু করিয়া ছিল। আজি সেই উচ্চ শির
নত করিবার মত মানসিক বল তাহার জুটিল না । প্রবল পরাক্রমে
যেখানে জমিদাররূপে প্রজা শাসন করিয়াছে, সেই খানেই আবার
মাসীয়ার “পোষ্য-পুত্র”-রূপে মুখ দেখাইতে হ্ঠাটোর মত জীবেরও
লজ্জাবোধ হইল। বিশেয়তঃ, গ্রামের বর্তমান অবস্থার কথা মনে
পড়িয়া, সেই লজ্জা শ্যাটোর প্রাণে দ্বিগুণতর দেন্ত জাগাইয়া
তুলিল ৰ ৪ এ
শান্তিময়ী শত চেষ্টা করিয়াও আর শ্তাটোকে তাঁহার মনের কথ!
১৫২,
বুঝাইতে পারিলেন না । উত্তেজিত শ্ঠাটো হীন তিরস্কারবাক্যে
শাস্তিময়ীর প্রাণে ব্যথা দিয়! বারবার তাহারে ফিরাইয়! দিয়াছে । .
এইভাবে সপ্তাহকাল বন্ধগৃহে গভীর চিন্তায় মগ্ন থাকিয়া, সেইদিন
প্রত্ুষে গ্তাটো কোথায় চলিয়৷ গেল।
শাঁত্তিময়ী এবং পারুল এই আকস্মিক ব্যাপারে প্রথমতঃ অত্যন্ত
কাতর হইয়া পড়িলেন। ক্রমে অসাধারণ মানসির সংযম-অভ্যাসের
ফলে, উভয়ে প্রকৃতিস্থ হইয়া ইতিকর্তব্য নিদ্ধারণ করিয়া
লইলেন।
শাস্তিময়ী এবং পারুল ছুই জনের প্রাণেই দেশাত্মবোধের বান,
ডাকিয়াছে। সেই পবিত্র ভাব একবার প্রাণে জাগিয়৷ উঠিলে
বার্থচিন্তার সকল মোহ দুরে সরিয় ষায়।
তাই শান্তিমম্ী কতিপয় হৃদয়বান বিশেবজ্ঞ লোকের সহায়তায়,
মনোমত দলিলাদির খসর! প্রস্তুত করাইয়া লইলেন, এবং যথা-
সময়ে সেই দলিল আইনানুসারে লিখিয়া সহি করিয়া রেজেন্রী করিয়া
রাখিলেন। |
সেই দিন শাস্তিময়ী জগদিন্দুর যেই সুমহান ত্যাগশীলতা প্রত্যক্ষ
. করিয়াছিলেন-_তাহাতে তাহার প্রতি সেই মহীয়পী রমণীর আন্তরিক
শ্রদ্ধা শতগুণে বদ্ধিত হইয়া, উভয় পরিবারের মধ্যে আবার সম্প্রীতির
_ সম্বন্ধ স্থাপিত হইাছে। |
নিরুদ্দিষ্ট ভোলানাথের খেঁজ করিবার জন্য জগদিন্দু স্বতঃ প্রবৃত্ত
হইয়া, চারিদিকে লোকজন পাঠাইয়াও বিফলমনোরথ হইয়াছেন । .
শুদ্ধ ব্রতধারিণী পারুল, সমস্ত ছুঃখ দৈন্ত শ্রীভগবানের পদে সমর্পণ
১৫৩
শশী
করিয়া অন্ুশীলার সহিত পল্লীলঙ্ীগণের হিতকর নানাবিধ অনুষ্ঠান
প্রতিষ্ঠানের কার্যে আত্মনিয়োগ করিয়াছে।
শীস্তিময়ী অপর সকল কথা৷ ভুলিয়া জগদিন্দুর মাতার আসনে
বসিয়া-_তাহার পল্লীসঙ্ৰের যাবতীয় কার্যের সাহায্যে সমস্ত শক্তি
নিয়োগ করিলেন ।
দেখিতে দেখিতে আরও কয় মাঁস কাটিয়া গেল-_শ্রাটোর
কোনও খাঁজই পাওয়া গেল না।
এই বৎসর জগদিম্ুর আশানুরূপ মিয়াদগঞ্জে একটি বাঙ্ক,
একটি পাটকল এবং একটি কাপড়ের কল স্থাপিত হইয়াছে ।
প্রতোক গৃহস্ক-গৃহের আশে পাশে-- প্রত্যেক পল্লীতে যেই সমস্ত
উচ্চভূমি নিরর্থক পতিত পড়িয়াছিল, সঙ্ের নিয়মানুযায়ী তাহাতে
সঙ্ঘের খরচে ফুটি ভূলার গাছ রোপণ করা হইয়াছে।
এই তাবে__মিয়াদগঞ্জ পরগণার একোবিংশতিসংখ্যক পল্লী
হইতে শতাধিক মণ তুলা উৎপন্ন হইয়া, ভদ্বারাই ছোট রকমের একটি
কাপড়ের কলের কার্য্য আর্ত হইয়! গিয়াছে।
পল্লীসজ্ঘের চেষ্টায় এইরূপে এই আদর্শ পলীসংহতি আজি
এক অপূর্বব শাস্তি, শৃঙ্খলা এবং সমৃদ্ধির দিব্যরূপে উষ্তীসিত হইয়া,
পল্লীবাসী আবালবুদ্ধ সকলের প্রাণে এক পবিত্র ভবিষ্যত-আলেখ্যের
_ছায়াপাত করিয়াছে।
১৫৪
পপলী-উী
(১৬)
আষাঢ় মাঁসের প্রারস্তে মিয়াদগঞ্জের নদী নাল! পুকুর বিল নৃতন
জল প্লাবনে ভরিয়া গিয়াছে । গ্ঠামল তৃণ্দল ছাপাইয়! ঝিকিমিকি
বর্ষার জলে পল্লীলঙ্ষ্মী, এক দিব্যরূপে পন্নীবাসীর প্রাণ উৎফুন্ন করিয়া
তুলিল ]
গোধুলীর রক্তাস্বর সম্মুথে__ন্তন্সাতা, গৃহমুখী পল্লীবধূর নবনীত
অঙ্গের কাচ হলুদ মাখান উচ্ছ্বসিত রূপতরঙ্গ, দেহবিজড়িত আর্জ বসন
ভেদ করিয়া---ধরাগাত্রে দিব্য সুষম! বিকীর্ণ করিতেছে ।
মাঠে মাঠে পাটের ক্ষেতে বাঙ্গালার এশ্র্্যভাগ্ডার প্রতিদিন
সগর্ধে মাথা উচু করিয়। বিদেশীয়ের লোলুপ দৃষ্টি আকর্ষণ
করিতেছে ।
হ্মন্তিক ধান্তের তরুণ, গ্তামল তরঙ্গ, বাতাসের সঙ্গে হেলিয়া
ছুলিয়া বিশ্বের শম্ততা-।র-_বাঙ্গলার গৃহস্প্রণে নব পুলক জাগা ইয়া
তুলিয়াছে। |
আবার, আশু ধান্তের সন্ভসঞ্জাত মুকুলিত ফলগুচ্ছের তলে বায়ু
'হিললোলিত-_গলিত ক্ষটিক তরঙ্গের সঙ্গে, হর মুখে সাফল্যের হাসি
ফুটিয়া উঠরিতেছে। |
কল-কল-মধুর জলভ্রোত-প্রতিকূলে দলে দলে কতবিধ কই
মাগুর পুঁটি পাছের পাল উল্লাসে উজাইয়৷ আসিয়া প্ীবালকের
বনত্বুহমধ্যে গ্রবেশ করিতেছে ।
আহা! সোণার বাঙ্গালার মাঠে মাঠে ধান-গোঠে গোঠে
১৫৫
মা কপিলার অফুরন্ত ছুগ্চভাগার-_পুকুরতর! মাছ-_সেই বাঙ্গলাঃ
গৃহস্থ আজি পরমুখাপেক্ষী! কোন্ বিধাতার এই তীব্র
অভিসম্পাত!
রবিশস্ত গোলাজাত করিয়া, দারুণ গ্রীষ্মের তপ্ত রবিকর মাথায়
করিয়৷ বাঙ্গালার কুষক, মাঠে মাঠে সোণার তরঙ্গ ঢালিয়। দিয়া
আজি সঙ্ঞেপ বিশ্রামানন্দে মগ্ন হইয়াছে ।
এই মাহেন্দ্র সংযোগে শাস্তিময়ী, গ্রামা প্রধানগণের সহিত একমত
হইয়। মিয়াদগঞ্জের আদর্শ পল্পীসজ্ঘের দ্বিবাধিক মহোঁৎসবের আয়োজনে
' অক্লান্ত পরিশ্রম করিতেছেন ।
এই ব্তমরের মহোৎসবের একটা! বিশেষত্ব এই যে, জগদিন্দুর
মহান অনুষ্ঠানের প্রতিপক্ষ আজ আর কেহই নাই।
ঠাকুরবাড়ীর, বৃহৎ নাটমন্দির পত্র পুষ্পে ভূষিত হইয়াছে।
অহনিশি সেখানে মাতৃকীর্ভন চলিয়াছে। তিন দিন ইতর-ভদ্র, ব্রাহ্মণ-
শূদ্র, হিন্দুমুদলমান__অসংখ্য জনসজ্ঘ জাঁতিডেেদ, ধর্ম্বৈষম্য ভুলিয়া,
মহোৎসবের আনন্দে মগ্ন হইয়! রহিয়াছে ।
দেশ দেশীস্তর হইতে দরিদ্র নারায়ণগণ মিয়াদগঞ্জের আপামব
সাধারণ-দহ একত্রে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে বসিয়া, পেট ভরিয়৷ খাইয়া
পল্লীবার্সীকে আনীর্বাদ করিয়৷ যাইতেছে ।
আজি রথদ্বিতীয়ার দিনে পল্লীমজ্ঘবের সমস্ত সভ্যের এক মহতী
সভার অধিবেশন বসিয়াছে। সভানেত স্বয়ং শাস্তিময়ী দেবী ।
মিলিত পন্লীবাসীর সঘন উল্লাসধ্বনিতে আকাশ বাত্:স ভরিয়া
উঠিয়াছে। |
১৫৬
পগপঞ্লীপ্ঞী
: যথারীতি গত বৎসরের কাধ্যবিষরনী পাঠ ও গ্রহণাত্তর় অন্তান্ত
আবন্তকীয় সমস্ত গ্রসঙ্গের মীমাংস। হইয়! গিয়াছে। দিব্য পুষ্পমাল্য
বিতৃষিত হইয়া হরি তখন বামে দক্ষিণে শ্যামল ও দয়িতাঁকে লইয়া
নাট-মন্দিরের কেন্তরস্থলে বিরাট আনন্দে গাহিয়া উঠিল।__
আর্মার মাকে কাঙ্গাল বলে কে?
গোটা! বিশ্বের জঠরজালা-_একজ জুড়ায় সে!
সভার নিয়মিত £কার্যা শেষ করিয়া শাস্তিময়ীদেবী সমবেত জন-
সমুদ্রের মধ্যে দীড়াইলেন। অল্প কথায় নিজের বক্তব্য সকলকে
'বুঝাইয়া দিয়া তিনি স্তত্তিত, বিশ্ময়-পুলকিত সভ্যমণ্ডলীর নিকট প্রচার
করিলেন যে, পিতার উইল অনুসারে তিনি ছোটি তরপের সমস্ত
জমিদারীর একমাত্র স্বত্বাধিকারিণী।
সেই উইল এবং প্রবেটের সহিত তিনি ন্জিক্কৃত দলিল ছুহখান।
সভার সমক্ষে স্থাপন করিলেন।
নকলে দেখিল, একখান! দলিলে তিনি বড় তরপের সমস্ত বিষয়ের
ত্যাগপত্র লিখিয়া জগঘিন্দুকে ছাড়্য়ি* দিয়াছেন। অপর দলিলে
তাহার পিতার পরিত্যক্ত সমস্ত জমিদারী শাস্তিমযী, পল্লীসজ্বের
নামে লিখিয়া দিয়াছেন । তাহা হইতে কেবল ষৎসামান্ মাসোহার!
তাহার দৌহিত্রোপম শ্তামল এবং তাহার ভাবী গৃহলল্পী* দয়িতা
পাইবে। *
উপরন্ত পঞ্চলক্ষ পরিমিত সঞ্চিত অর্থ শাস্তিময়ী শ্রীমান
জগঘিন্দু মুখোপাধ্যায়ের হস্তে সমর্পণ করিয়াছেন; তদ্বারা তাহার
ইচ্ছামুযাঁয়ী এক ব৷ ততোঁধিক পল্জীহিতকর অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হইবে।
১৫৭
সপল্লীবী
নিজের এবং বধু পারুলের ভরণপোষণের জন্য তিনি আবষ্তাক মত-:
অর্থ পল্মী-সঙ্বের ব্যান্কে জম! রাখিয়াছেন। | |
বলিতে বলিতে বিগলিত-অশ্রনয়ন! মহীয়সী ভাঁবরুদ্ধ কে শ্যামল
এবং দয়িতাকে কাছে ডাকিয়৷ সেই পুগাদিনে তাহাদের কচি হাতি
ছুই জোড়া এক করিয়া দিলেন। সমবেত জনতরঙ্গ মথিত করিয়া
ঘন ঘন জয়োধ্বনীতে সমস্ত পল্লী মুখরিত হইল।
এমন সময় শাস্ত্রী মহাশয়, সত্যভাম! দেবী এবং এক তরুণ সন্নাসী-
শি্যসহ সেখানে উপস্থিত হইয়া শিশুদম্পতিকে আশীর্বাদ
করিলেন। |
আবেগরুদ্ধ ক্ঠে জননী ঈত্যতাম! পুত্র ও পুত্র বধূকে বুকের
ভিতর জড়াইয়! ধরিয়! তাহাদের শিরে সহস্র চুন করিতে লাগিলেন।
অপুর্বব মাতৃত্বের গর্বে তাহার প্রাণ ভরিয়া! গিয়াছে-_-কঠের ভাষা
গলিয়! গিয়া নয়ন'পথে আনন্দের ধার! প্রবাহিত করিয়। দিয়াছে ।
অনুশীল| দেখিল সত্যই তাহার সত্যসন্ধ পতিবাক্য বর্ণে বর্ণে
মিলিয়া৷ গেল। মাতৃপূজার দ্বিব্য আরতি-ুহূর্তে* মাত! সত্যই আসিয়া
মাতৃগীঠ উজ্্বল করিয়! দাড়াইয়াছেন।
তরুণ সন্ন্যাসীর প্রতি কাহারও দৃষ্টি পড়ে নাই। হঠাৎ নারী-
সভ্যগণেন মধ্য হইতে ছুটিয়া আসিয়। পারুল পাঁগলের 'মত সেই
ন্্যাসীর পদযুগল বক্ষে জড়াইয়! ধরিয়া মৃচ্ছিত হইয়৷ পড়িন।
সকলে দেখিল তরুণ সন্্যাসী আর কেহ নয়-_স্লেচ্ছাচার-নিমজ্জিত
ভোলানাথই 'আজ পবিত্র সন্াসগ্রহণে সৌম্য মৃষ্ঠি লইয়৷ মিয়াদগঞ্জের
পরী'সঙ্ঘের নিকট সর্বাস্তঃকরণে ক্ষম| পার্থন৷ করিতেছে ।
১৫৮,
গপরল-ভী।
পদধূলী মাথায় তুলিয়া লইয়া জগদিন্দু ভোলাদা”র আলিঙ্গন বন্ধ
হইল-_দিব্য আনন্দে উন্মত্তবৎ শাস্ত্রী মহাশয় উচ্ছ্বসিত আবেগে, সমুচ্চ
সুরে অনর্থল বেদগীতি আবৃত্তি করিয়! যুগলশিষ্য-_সর্কত্যাগী সন্নযাসী-
দ্বয়কে আশীর্বাদ করিলেন।
একা ভজহরি সহ কিন্ত্র কণ্ঠ লইয়া গাঁহিল--
«বন্দে মাতরম্-_
হুজলাং হুফলাং মলয়জ-শীতলাঁং --
শত্ত-গ্ঠামগ্লাং মাতরম্--
১৫৯
যুক্ত যতীন্দ্রমোহন চট্টোপাধ্যায় প্রণীত
মনোরম উপন্যাস--
সত্দিল্স তে 0
ভাবে, ভাষায়, আখ্যান কল্পনায়, চরিত্র অঙ্কণে সর্বপ্রকারে
ঠিক যেমনটি চাছেন তাহাই। :
প্রিয়জনের হাতে স্ুরতি- নিগ্ধ ফুলের সাঁজি! পরিণয়-বাঁসরে
+... গ্রীতিরডালা।
| শল্য ৯০ তান্না আত্র।.
্ ূ ্
| এ ৫০৮ এত
পচ রি তে রে
চি রীনি িিডিা নীট দানি
স্ব মুনীন্দ্রনাথ ঘোষ, বি, এস, সি-প্রণীত .
শ্্ীধতীন্্রমোহন চট্টোপাধ্যায় প্রকাশিত
_ সর্বা্গ জন্দর পা
্ গাহ্স্ছ শপন্যাঙ্দ
ন্বিন্সেন্স ীঞ্মনন 8.
উপগ্তাস জগতে নবঘুখের প্রভাতী কুজন।
নকাম্পজির ঈগিজিনী শহ্যষের মঙ্গল শব্খ'।
টি
১ প্রা
জ্রীযতীন্্রমোহন চট্টোপাধ্যায় প্রণীত।
সর্বজন প্রশংসিত ।
পারিবারিক ডপন্যাস।
"লেখক মনন্তত্ব বিশ্লেষণের ক্ষমতার বেশ পগ্জিচয় দিয়াছেন |
* * * লেখকের বর্ণনার ভাষ| ভাল, বীধাই নুন্দর ) হুতরাঁং সে
হিসাবে দাম অল্প। পুজার 'বকাশে বইখানি, “গড়ে পাঠকেরা
নিশ্চয়ই তৃপ্তি পাবেন” -_নালান্ঞ্-_.
প্উপন্তাস খানিতে এমন একটা তীব্র উন্মাদনা, রোমান্স আছে,
যা আমাদেক্স মত ক্ষ্যাপার দলকে হ্বতঃই ,ক্ষপিয়ে ভোলে ।”
শঞুআন্েত--
ক চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের ঘটন! বর্ণনা শক্তি বেশ আছে |”?
| _বহজম্পাভ্ী--
“এ কথা জোর করে বরা যায় যে গ্রন্থকারকে উৎসাহ দিতে
আমরা বাধ্য -. -আব্লীজ-_
"বইখানা মোটের উপর আমাদের তৃপ্তি দিয়াছে”
... » ফামাতিব্স-_
“লেখকের চরিত আনে বণ দক্ষতা আছে, 1 কপুস্তকথানি হ্খ
এ তে
পাঠ ও ক্নীতির পরিচায়ক 1.
| ৩ ]
*ভেখকের লিখিবার্ ক্ষমত! আছে এবং তিনি বলিবার একটি,
ভঙ্গীও 1নজদ্ব করিয়াছেন» _ অন্সেতী_
. “উপস্তার-অখ্যানটি কবির একটি নৃতন কল্পনা । * ঞ্চ *বেশ
জমকালো! রকমের. একটি রোমান্স স্থষ্টি করিয়াছেন ।”
এন হসঙ্ব-_
গ্রন্থকার সমস্তাটির যে স্বাভাবিক উপসংহার করিয়াছেন,
তাহাতে তাহার প্রশংস। ন! করিয়। পার! যায়.না। কোথাও
এতটুকু আড় ভাব নাই, বেশ স্বচ্ছন্দ গতিতে ভীব. নির্ঝরিনীটি
কুলকুল করিয়া! বহিয়! গিয়াছে।: আগাগোড়া কৌতুহল উদীপ্ত
থাকে 1”, ৃ -বাসন্ভী-
“পাঠকগণ ফে এই পুস্তকপাঠে আনদা লাভ করবেন একথা
নিঃসঙ্কোচে বল! যাইতে পারে।” _প্রন্ভাঁতী--
আতল্য ৯৮০ আনা সমভ্র।
স্্রীযুক্ত যতীন্্রমোহন চট্টোপাধ্যায় প্রণীত।
সুমধুর ভক্তি উৎন--
বিদ্যাপতি।
|. একাঙ্ক গীতি নাটিক]।. যছাকৰি বিস্তাপতির. জীবনী].
| অবসষনে লিখিত। সৃল বিদ্াপতি-রচিত সগরপূর্ণ।. (
ৃ মিনার্ডা থিয়েটারে অভিনীত ॥.
০ পুলা আমা আত্র।, রর
[ ৪ ]
শ্রীধতীক্রমোহন চট্টোপাধ্যায় প্রণীত
সম্পূর্ণ জাতীয় ধরণের
শল্সাদনামর উপম্যাঙ্প
পল্লীপ্রী
: মনোরম কাব্য কল্পনার মধ্য দিয়া পরীদংহতি সুজনের
প্রকষ্ট পথ ইহাতে কাধ্যতঃ দেখান হইয়াছে। অথচ,
উপন্তাসের সমস্ত দুন্দর উপাদান ও ইহাতে বর্তমান আছে।
ভাষা, ভাব, চরিত্র-পরিকল্পনা, ঘটন! বৈচিত্র্য--সকলের' মধ্য
দিয়। একটি আদর্শ পল্ীচি্র ইহাতে সন্গিবেশিত হুইয়াছে.।
_উপন্যাল জগতে নৃতনব্যাপার।
ভাবিবার বিষয়--বুকিবার বিষয়
পড়িবার বিষয় ! |
_নববঙ্গে নবযুগের নবীন উদ্দিপনা |... ..
ম্মজ্য- ডি লিক ত্র
ী
_নাটকাকারে_গান সমেত.
(হাতে লেখা) ০
সু, এমা.
023.
শ্রীযুত যতীন্রমোহন চট্টোপাধ্যায় প্রমীত।
.. জাতীন্ম আদর্শে লিখিত .
ছেলেমেয়েদের ক খর বই!
আনন্দবাজার ।
এখানি একখান ছেলেদের বর্ণপরিচয় পুস্তক। ইহার বিশেষ
এই যে ইহাতে ইংরাজ শাসনের সুফল এবং ইংলণ্ডে থাঁকিয়াও রাজা
আমাদের অন্ত কত চিন্তা ভাবনা করেন এই সমস্ভের পরিবর্তে
“স্বরাজ নয়কো গাছের ফলটা পেড়ে দিব হাতে” এবং “ভবের
মাঝে আমর! কেবল অপরের অধীন, তাই জগতের কাছে মোবা
এত হেয় দীন” ইত্যাদি ছড়া! আছে। এই'বইখানির আগাগোড়া
ছবি ও ছড়ার সাহায্যে ছেলেদের প্রাণে ত্বদেশপ্রেম জাগাইবার
চেষ্ট। বর্থমান। আমাদের অধীনতাপাশের মূল কারণের প্রতি
যতীববাবুর ছুটি পড়িয়ায়াছে, এজন তাহাকে ধন্তবাদ। বইথানির
ছাপা কাগজও সুনার। |
_াঙ্গলার কথা ।
একখানি নূতন ধরণের বর্ণপরিচয় দেখা দিয়াছে। যু
বতীন্্েমোহন চট্রোপাধ্যায্বের “হাতে খড়ি” গোড়া থেকে শেফ পর্ব
ছেলেদের দেশের কথা মুন করাইবার জন্ত লিখিত। ভারতের
গৃগমতি কোথায়, গে কেনমব ছাঁডিযা এখন. :খনটুরু. গোলাম
৬]
পাইলেই ভারতবাঁসী সম্থ্ট--এসব কথা ছড়া ও কবিতার মধ্য দিয়!
সহজ কথায় লেখক মহাশয় প্রকাশিত করিয়াছেন। বাঙ্গলার
শিশুর! যে সব বর্ণপরিচয়ের মরফতে হাঁতেখড়ি শিক্ষ। করে, তাহাতে
আমাদের স্ুবেধ বালক করিয়া রাঁজপুরুষদের সেলাম ঠুকিতেই
শিক্ষা দেয়। এখন ধদি “হাতে খড়ির” মত পুস্তকের সাহায্যে
শিশুর! হাতেখড়ি হইতে দেশের সম্বন্ধে পাঠ মুখস্থ করিতে আস্ত
করে, তাহা হইলে আর কিছু না হউক রাজভক্তির পরিচ'য়ক
কতকগুলি মামুলি ঝুলি শিক্ষার হস্ত হইতে তাহার! রক্ষা পায়!
স্বরাজ ।
শুন্দর সুন্দর চিত্রে ইহা! ম্ুশৌোভিত। বাঁলকবালিকার চিত
আকৃষ্ট করিতে লেখক যথেষ্ট প্রয়াস পাইয়াছেন ও হথেষ্ট অর্থব্যয়
করিয়াছেন | |
বন্ধমতী। .
আমর! ভ্রীবতীন্্রমোঁহন চট্টোপাধ্যায় প্রণীত “হাতেখড়ি” পাইয়!
প্রীত হইয়াছি। ছেলেদের এই বর্ণপরিচয় পুস্তকখানিতে ছেলেদের
মনে স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধার উদ্রেক করিয়। দিবার চে আছে।
ছড়াগুলি হুমধুর--ছবি ভাল! |
পুরা 21101758258 7815.
11) 006 701056 ০061297)61088 10101167471910076 0891108-
09755 01 6) 5০91, 10 05 5400০9990 ০০)০০৮ ০৫
103:6717 ৪০-০৪1190 19791) ৮৪৫ 17508 11700110005
017 006 70016071800. 0০6:০০৮৪এ 1000100 ০ 21099106
1২51115380595 8110 76009189] 85:600779 090) 39055
18808015 96000 0০ 626০৫ ৪ 81910 16068 0: 05৩
5০878৩7 &575185000 3000 65. 96505 0৪৮8. ০91
_ ৮৮ এপন পতিত টিপি শশা
[| ৭
00%/01100 06550279607) 15 091201/ & 0101006
81066101139, [17 00106 06 69 900১ 11117980561059,
018051021, [00181 200 10001120009] 1935019% [796/1721
13 6%20015 ৮121 16 91)0010 1১5--076 206 01 ৮1110 ত৩
[820 09:500811 1516 00৫ 2, 1019 0106, ভাত ০27 36151
38 0026 6০:97 73210691170 9110010 79035053
[31906101811 00 1100810153901095 00 19 66067 00065
(0806 7010955 01 01108105 002. 26097180101) ঠ756
15 0950060--800010176 60 5 22011861700 ম52াা 10
(০০ ১878].
বাসন্তী ।
এঁই অভাঁগ। দেশের অধীন জাতের শিশুগুলির বর্ণপরিচধের
সঙ্গে সঙ্গেই গ্রন্থকার দেশ ভক্তি বীজ অস্কুরিত করিতে চাহিয়াছেন।
তখন হইতেই যাহাতে তাহারা আঁপনার অবস্থা ও দ্েশের অবস্থ!
জানিতে পায়-্রন্থকার সেই চেষ্টাই করিয়াছেন। অন্ত দিক
দিয়া দেখিতে গেলেও সাধারণ বর্ণপরিচয্ পুস্তকগুলির অপেঙ্গণ
এখানি কোন অংশেই হাঁ নহে। ছাঁপা* ছবি বেশ, প্ভ আছে,
গগ্ভ আছে। পাঠাল, £সন্দেহ !
সনাতন |
এই "বইখনি ছেলেদের বর্ণপরিচয়ের বই। এতে শিশুর!
শ্বোড়। থেকেই নিজেদের দেশের ও. জাতির অবনতির বিষয়ে
ভাবতে পারবে । এর সঙ্গে যদি শিক্ষাদাতার!৷ দেশের ও জাতির
বিষয়ে একটু ভাল ক'রে ছেলেদের বৃঝিছে: দেন, তাহ। টা ৃ
মোণায় সোহাগা। ,
আত্মশক্তি |
আজ যদি এই গোটা দেশটার মন তৈরী করতে হয়, তাহ'লে
“ছাঁতে খড়ি” থেকে তার গোড়াপত্তন করতে হবে। যতীনবাধু
[৮ 1
[৮]. «ই এ&্থম গ্থ দেখিয়েছেন, সে জন্য আমরা বাস্তবিক
আনন্দিত। তীর প্রতি ছত্রে দেশের জন্য টা মমত্ববোধের
ধারা ফুটে বেরিয়েছে । -
সু চি রঃ রা
তারপর গ্রন্থকার প্রত্যেক পাঠের ' ভিতর দিয়ে কচি মনে
দেশের অন্ত যে মমত্ববোধের ছাপ! অস্কিক করিতে চেষ্ট। করেছেন
বাস্তবিক তা৷ অতুলনীয় । ছু এক জায়গ! উদ্ধৃত করবার লোভ সং বরণ
করতে পারচি না, কিন্তু পুথি বেড়ে যায়--
রঃ চে এ .
তারপর নী জাতির চিত্রটী বড়ই ম্্পদী ও চিত্তাকর্ষক ।
আমরা এই বইখানি বাংল! ভাষা-ভাষী গ্রতি ঘরে দেখিতে চাই |
শু ।
হাতেথড়ি--ছেলেদের বর্ণপরিচয়ের বই। সুন্দর. ুন্দর রচিত
স্থশোভিত । মায়েরা সন্ত হুপ্ধ পান করাইবার সঙ্গে সঙ্গে ছেলেদের
ছেশীক্ষবোধকে জাগ্রত করিতে থাকিলে যেমন ভবিষ্যৎ বংশে
দেশাখবোধ সহজ ও স্বাভাবিক হয়, ছেলেদের বর্ণপরিচয়ের সঙ্গে
সঙ্গে তেমনি দেশাআ্মবোধের শিক্ষা দিতে পাঁরিলে জাতির চিত্ত
দেশের হুঃখে স্বভাবতঃ কীদিয়।, উঠে। শ্রীযুক্ত যতীন্ত্রমোহন
_ চট্টোপাধ্যায় হাতেখড়ির সঙ্গে সঙ্গে দেশের কথ টানিয়া আনিবার
চেষ্টা করিয়া ভাল করিয়াছেন। আমাদের ধন্তবাদের. পাত্র
হইমাছেন। স্বরাজ্ের কথা, মনুষ্যত্বের কথা--জাতির. কাছে
_ হাতেখরির মারফতে দিতে পারিলে তাহা স্থায়ী হইবে।
স্ুল্য- পচ আনন আত্র। |
স্হঙলভ স্পংক্ষল্পপ-দেড় কান্না মাভ্র।